আন্দোলনের সঙ্গে ছড়াচ্ছে গুজবও।

নিরাপদ সড়কের দাবিতে সড়কে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন চলছে গত রোববার থেকে। দুই শিক্ষার্থীর মর্মান্তিক মৃত্যুর পর রাস্তায় নেমে আসে প্রথমে তাদের সহপাঠী এবং সে স্কুলের শিক্ষার্থীরা, এরপর ক্রমেই যোগ দেয় দেশের বিভিন্ন স্থানের বিভিন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা।

তবে এই আন্দোলন ঘিরে এরই মধ্যে ফেইসবুকসহ ইন্টারনেটে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নানা ধরনের গুজবও ছড়াচ্ছে। শিক্ষার্থীদের উপর পুলিশের হামলার পুরনো কিছু ছবি ঘুরছে ইন্টারনেটে; আবার পুলিশ ধরে নিয়ে গেছে, এমন শিক্ষার্থীর নাম আসার পর ওই শিক্ষার্থীরাই আবার তা গুজব বলে উড়িয়ে দিচ্ছেন।

এক ছাত্রের কলার ধরে আছেন এক পুলিশ সদস্য- এরকম একটি ছবি গত কয়েকদিন ধরে ঘুরছে ফেইসবুকে, যা দেখে সরকারবিরোধী রাজনৈতিক নেতাদের মধ্য থেকেও প্রতিবাদ এসেছে, অথচ ওই ছবিটি ২০১৫ সালের আরেক ঘটনার। গত ২৯ জুলাই ঢাকার শহীদ রমিজউদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট স্কুল ও কলেজের দুই শিক্ষার্থী বাসচাপায় নিহত হলে তাদের বিক্ষুব্ধ সহপাঠিরা সড়কে নেমে আসে।

পরদিন সারা ঢাকায় শিক্ষার্থীরা সড়কে অবস্থান নিলে পরিবহন ব্যবস্থা প্রায় অচল হয়ে পড়ে। এই বিক্ষোভের মধ্যে কয়েকটি স্থানে শিক্ষার্থীদের উপর পুলিশও চড়াও হয়। তবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল দাবি করেছেন, পুলিশ চূড়ান্ত ধৈর্য ধরে পরিস্থিতি মোকাবেলা করছে।

এর মধ্যে আফজাল হোসেন রহিম নামে একটি ফেইসবুক পাতা থেকে বলা হয়, খিলগাঁওয়ের এক কলেজছাত্রকে পুলিশ বাসা থেকে ধরে নিয়ে গেছে। এই খবরটি ফেইসবুকে ছড়িয়ে পড়লে ওই কলেজছাত্র তার ফেইসবুকে পাতায় এই ঘটনাটি মিথ্যা বলে জানান।

ওই ছাত্র লিখেছেন, “আপনারা উল্টাপাল্টা নিউজ কই থেকে পান আর এইসব আপলোড দিয়ে আমাকে আর আর ফ্যামিলিকে বিরক্ত করছেন কেন? এটা পুরো ফেইক ঘটনা; পুলিশ আমাকে ধরেনি।”

ঢাকা রেসিডেন্সিয়াল মডেল কলেজের ৪৭ শিক্ষার্থীকে কলেজ থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে বলেও ফেইসবুকে অনেকের স্ট্যাটাসে এসেছে। এ ধরনের খবরকে ‘ভিত্তিহীন ও বিভ্রান্তিকর’ দাবি করে তার নিন্দা জানিয়েছে কলেজ কর্তৃপক্ষ।

তারা বলেছে, গত ১ অগাস্ট কিছু সংখ্যক আবাসিক ছাত্র অনুমতি ছাড়া কলেজের বাইরে যাওয়ায় কর্তৃপক্ষ তাদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছিল। ওই ছাত্রদের অভিভাবকদের ডেকে আনা হয় এবং ‘শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তার ব্যাপারে মোটিভেশনের’ উদ্দেশ্যে অভিভাবকরা তাদের সন্তানদেরকে সাময়িকভাবে বাসায় নিয়ে যান।

“কলেজ কর্তৃপক্ষ কলেজ কাউকে টিসি প্রদান করেনি, মোটিভেশন শেষে সংশ্লিষ্ট ছাত্ররা ইতোমধ্যে বাসা থেকে হাউসে প্রত্যাবর্তন শুরু করেছে “ বলা হয় বিবৃতিতে।

বিভিন্ন রাজনৈতিক মহল এবং সুবিধাবাদী দল চাইবে এই আন্দোলনকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করে নিজেদের স্বার্থ আদায় করে নিতে। সেই উদ্দেশ্যেই এরা বিভিন্ন রকম অপপ্রচার চালাচ্ছে।  আমাদের ছাত্রসমাজকে এদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়ে প্রতিহত করা উচিৎ। নাহলে এই আন্দোলন বিতর্কের মুখে পড়তে পারে।

অনলাইন বাংলা নিউজ বিডি :/ ও এস