
মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন। কমিশনের চেয়ারম্যান মনোয়ার ইসলাম বলেছেন, তারা এখন গ্যাসের দাম বাড়াবেন না।
এলএনজি আমদানির প্রেক্ষাপটে আবাসিক ও বাণিজ্যিক সংযোগ বাদে অন্য ক্ষেত্রে গ্যাসের দাম বাড়ানোর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ১১ থেকে ২৫ জুন শুনানি করে বিইআরসি। শুনানির প্রায় চার মাস পর দাম না বাড়ানোর সিদ্ধান্ত এল।
তবে উচ্চমূল্যে এলএনজি আমদানি করায় গ্যাসের দাম সমন্বয় না করার কারণে সরকারের চলতি অর্থবছরে প্রায় তিন হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি গুনতে হবে বলে কমিশন হিসাব দেখিয়েছে।
গ্যাসের দাম না বাড়ানোর কারণ দেখিয়ে মনোয়ার ইসলাম বলেন, “গ্যাসের উৎপাদন, এলএনজি আমদানি, সঞ্চালন ও বিতরণ ব্যয় বৃদ্ধি পাওয়া সত্ত্বেও সার্বিক বিষয় বিবেচনা করে ভোক্তা পর্যায়ে বিদ্যমান মূল্যহার পরিবর্তন না করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।”
এছাড়া বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিতরণ কোম্পানিগুলোর জামানত কমিয়ে কোম্পানিগুলোর উপাদন খরচ কমিয়ে দেওয়ার কারণে এখনই গ্যাসের দাম বাড়ানোর প্রয়োজন মনে করছেন না বিইআরসি চেয়ারম্যান।
বিইআরসির সদস্য আবদুল আজিজ খান সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “চলতি অর্থবছরের শেষের দিকে ১০০০ মিলিয়ন ঘনফুট এলএনজি আমদানি হতে পারে। তখন বিতরণ কোম্পানিগুলো প্রয়োজন মনে করলে গ্যাসের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব দিলে আমরা বিবেচনা করব।”
বর্তমানে প্রতি ঘনমিটার গ্যাসের গড় ভারিত মূল্য সাত টাকা ৩৯ পয়সা। এটা ১ টাকা ৪৬ পয়সা বাড়ানোর প্রয়োজন রয়েছে মনে করেন কমিশন চেয়ারম্যান।
তা না বাড়ানোয় চলতি অর্থবছরে তিন হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি লাগবে বলে জানান আজিজ খান।
গত জুনে এলএনজি আমদানি চূড়ান্ত হওয়ার পরই গ্যাসের দাম বাড়ানোর তোড়জোড় শুরু হয়। উত্তোলন ও বিতরণ কোম্পানিগুলোর পক্ষ থেকে আবাসিক ও বাণিজ্যিক ছাড়া সব ক্ষেত্রে গ্যাসের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব দেওয়া হয়।
জুনের ১১ তারিখ থেকে দাম বাড়ানোর উপর শুনানি শুরু করে বিইআরসি।
প্রতি ঘনমিটার গ্যাসের গড় দাম ৭ টাকা ৩৯ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ১২ টাকা ৯৫ পয়সা করার প্রস্তাব করে কোম্পানিগুলো। অর্থাৎ বর্তমানের তুলনায় ৭৩ শতাংশ বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়।
এর যুক্তি হিসেবে পেট্রোবাংলার পক্ষ থেকে বিইআরসিতে দেওয়া এক উপস্থাপনায় দেখানো হয়েছে, ২৫ টাকা ১৭ পয়সা দরে কিনে এর সঙ্গে ভ্যাট, ব্যাংক চার্জ, রিগ্যাসিফিকেশন চার্জসহ নানা ধরনের চার্জ যোগ করে আমদানি করা এলএনজির বিক্রয়মূল্য মূল্য দাঁড়াবে ৩৩ টাকা ৪৪ পয়সা। এই অঙ্ক দেশে বর্তমানে বিক্রিত গ্যাসের চার গুণ বেশি।
অন্যদিকে জ্বালানি খাতে দুর্নীতি ও অপচয় রোধ করা গেলে প্রচলিত দাম বহাল রেখেই আমদানি করা এলএনজির দাম সমন্বয় সম্ভব বলে মত দেন ভোক্তা অধিকার সংগঠন ক্যাবের জ্বালানি উপদেষ্টা অধ্যাপক এম শামসুল আলম।
অনলাইন বাংলা নিউজ বিডি :/ মোঃ মোস্তফা কামাল
Leave a Reply