
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, জরিপের ওপর ভিত্তি করে দল ও জোটের মনোনয়ন দেওয়া হবে।
রবিবার দুপুরে রাজধানীতে দলীয় কার্যালয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এ কথা বলেন।
একই অনুষ্ঠানে তিনি দণ্ডিত ও পলাতক কেউ নির্বাচনী সাক্ষাৎকার নিতে পারেন কি না, সে ব্যাপারে দৃষ্টি দিতে ইসির প্রতি আহ্বান।
ওবায়দুল কাদের সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি জাতির কাছে বলতে এখন পারি, একজন দণ্ডিত পলাতক আসামি এ ধরনের বক্তব্য দিতে পারে কিনা? জাতির কাছে আমি এর বিচার চাইছি। নির্বাচন কমিশনের কাছেও দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। দুটি মামলায় দণ্ডিত পলাতক এরকম কেউ এভাবে ভিডিও কনফারেন্স করে নির্বাচন প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে পারে কিনা- আমি সেটি নির্বাচন কমিশনের কাছে জানতে চাইছি।’
কাদের বলেন, ‘মনোনয়ন নিয়ে সবকিছুই ঠিক, এখন শুধু ফিনিসিং টাচটা বাকি আছে। আশা করছি, ৪-৫ দিনের মধ্যেই তালিকা দিতে পারবো।’
তিনি বলেন, ‘আমরা উইনেবল ও ইলেক্টেবল প্রার্থী চাই। যিনি উইনেবল ও ইলেক্টেবল প্রার্থী বলে বিবেচিত হবেন তাকেই মনোনয়ন দেয়া হবে। এক্ষেত্রে যদি আওয়ামী লীগের বাইরে ১৪ দলের অন্য কাউকে বেশি সম্ভাবনাময় মনে হয় তবে তাকেই আমরা মনোনয়ন দেবো। সেই প্রার্থী জাতীয় পার্টি কিংবা অন্য কোনও শরিক দলেরও হতে পারে।’
এ প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, ‘দলের মনোনয়ন প্রায় চূড়ান্ত। আগের জরিপে দেখা গিয়েছিল, দলের অনেক সাংসদের জনপ্রিয়তা ও গ্রহণযোগ্যতা কমেছিল। কিন্তু সর্বশেষ মার্চ মাসের জরিপে দেখা গেছে ওই সাংসদেরা তাদের জনপ্রিয়তা ও গ্রহণযোগ্যতা ফিরে পেয়েছেন। তাই খুব বেশি সাংসদ এখান থেকে বাদ পড়ছেন না। এছাড়া ১৪ দলে যারা সাংসদ আছেন এবং জোটের অন্য শরিকেরা যারা সংসদ হওয়ার সম্ভাবনা রাখেন তারাও মনোনয়ন পাবেন।’
এর আগে শনিবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের প্রধান কার্যালয়ে বিদেশে লবিস্ট নিয়োগ করে নির্বাচন নিয়ে সংশয় সৃষ্টি করছে বিএনপি, রবিবারের মধ্যে আওয়ামী লীগের তিনশ আসনে মনোনয়ন চূড়ান্ত হবে।
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘কনডিউসিভ অ্যাটমোস্ফিয়ার (সহযোগিতা বা অংশগ্রহণমূলক পরিবেশ) সম্পূর্ণ বিষয়টাই নিশ্চিত করবে ইলেকশন কমিশনের ওপর, এখানে সরকারের কিছু করার নেই।’
জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ও বিএনপি নেতাদের উদ্দেশে সরকারের সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘এখনো নমিনেশন পর্বই তো শেষ হয়নি, তবুও যদি তারা মনে করেন লেবেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত হয়নি, তবে সেটা কমিশনের হাতে। এখানে সরকারের কোনো এখতিয়ার নেই।’
এর আগে শুক্রবার সকালে ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে কাদের বলেন, সব সাম্প্রদায়িক শক্তিই এখন ধানের শীষে যোগ দিচ্ছে।
তিনি বলেন, ‘সব সাম্প্রদায়িক শক্তি এখন ধানের শীষে ভর করেছে। যারা এতদিন গণতন্ত্রের বেশে ছিল, মুক্তিযুদ্ধের নানা বুলি ছড়িয়েছিল, আসলে তারা ছদ্মবেশী।’
কাদের বলেন, ‘বিএনপি-জামায়াতের মতো সাম্প্রদায়িক শক্তির সঙ্গে যারা নির্বাচনে জেতার জন্য, ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য আঁতাত করে। তাদের সবার পরিচয় সাম্প্রদায়িক অপশক্তি। এটার বিরুদ্ধেই আমাদের লড়াই।’
নির্বাচন কমিশনকে আওয়ামী লীগ ব্যবহার করছে বিএনপির এমন অভিযোগের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, আসলে জনসমর্থনের যে পারদ তাতে বিএনপির অবস্থান নিচের দিকে। বিষয়টি তারা অনুধাবন করতে পেরে হতাশা থেকে বেপরোয়া হয়ে এমন বক্তব্য দিচ্ছে।
তফসিল ঘোষণার পর থেকে কয়েকটি মামলায় বিএনপি নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তাদের অভিযোগ লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নেই- এমন প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, আগুন দিয়ে পুলিশের গাড়ি পুড়িয়ে ফেলবে, ভাঙচুর করবে, ২০জন পুলিশকে আহত করে হাসপাতালে পাঠাবে, এই অপকর্ম সন্ত্রাস, সহিংসতার কাজ কি বিনা শাস্তিতে ঢাকা পড়ে যাবে? তফসিল ঘোষণার পর এই দুঃসাহস তারা কিভাবে দেখায়? অপরাধ করলে কি অপরাধীর বিরুদ্ধে মামলা হওয়া অপরাধ?
এটা ক্রিমিনাল অফেন্স, এক্ট অব টেররিজম। এ ধরণের অপরাধ বিনা শাস্তিতে যাবে না। পুলিশ কোনও হস্তক্ষেপ করছে না যাতে নির্বাচনটা ভালো ভাবে হয়। দেশের মানুষ যাতে শান্তিপূর্ন পরিবেশে ভোট দিতে পারে এজন্য সরকারি দল হিসেবে আমরা অনেক কিছু সহ্য করে যাচ্ছি। তারা যেন আমাদের সহনশীলতাকে দুর্বলতা না ভাবে।
কাদের আরও বলেন, পল্টনে পুলিশের ওপর হামলা করে তারা প্রমাণ করেছে। তারা তাদের পুরানো পথ, আগুন সন্ত্রাসের পথ, সেই পথ ধরে এগিয়ে যেতে চায়। কারণ তারা জানে বাংলাদেশের জনগণের সমর্থন তাদের পক্ষে নেই। সে কারণে তারা সহিংসতার পথ, নাশকতার পথ বেছে নিয়েছে।
কানাডার আদালত তাদেরকে যে রায় দিয়েছে এই চরিত্র থেকে তারা বেরিয়ে আসতে পারবে না।
অনলাইন বাংলা নিউজ বিডি:/আমিরুল ইসলাম
Leave a Reply