
ভোলা সদর উপজেলার শিবপুর সংলগ্ন ভোলার খাল এলাকার জেলে বাবুল মাঝি বলছিলেন, আমরা সাত জেলে সকাল ৮টায় ট্রলার নিয়ে নদীতে নেমে ছয় ঘণ্টার চেষ্টায় পেয়েছি মাত্র সাতটি ইলিশ মাছ। ঘাটে এসে সেই ইলিশ বিক্রি করে পেয়েছি সাড়ে তিন হাজার টাকা। সাত জেলের ভাগ্যে তাহলে কী জুটলো?
এদিকে, ছয় ঘণ্টায় ট্রলারের তেল খরচই হয়েছে দুই হাজার টাকা, পরিশ্রমের কথা না হয় বাদই দিলাম। এভাবে চলতে থাকলে পরিবার-পরিজন নিয়ে না খেয়ে থাকতে হবে।
তিনি আরো বলেন, সারাদিন জাল বেয়েও নদীতে মাছের দেখা মিলছে না।একই অবস্থা আমির হোসেনের ট্রলারের জেলেদেরও। আমির হোসেন জানান, টানা দু’দিন নদীতে মাছ শিকারে গিয়ে সাত হাজার দুইশ’ টাকার মাছ বিক্রি করেছেন। এর মধ্যে দুই হাজার টাকার তেল খরচ করে হাতে পেয়েছেন পাঁচ হাজার দুইশ’ টাকা। এ টাকার অর্ধেক মহাজনকে (ট্রলার মালিক) দেয়ার পর অবশিষ্ট ছিলো মাত্র দুই হাজার ছয়শ’ টাকা। পাঁচ জেলের ভাগ্যে জুটেছে মাত্র ৫২০ টাকা করে।
দুইদিন মাছ ধরে যদি এমন অবস্থা হয়, তাহলে কীভাবে দিন চলবে? প্রশ্ন আমির হোসেনের।একই অবস্থা মেঘনা-তেঁতুলিয়ার অধিকাংশ জেলের। দুই মাসের নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে নদীতে ইলিশ শিকারে নামলেও ইলিশের দেখা পাচ্ছেন না ভোলার জেলেরা। নিষেধাজ্ঞার তুলে দেওয়ার পর ২৩ দিন কেটে গেছে, তবুও কাটেনি মাছের সংকট। এতে অভাব-অনটন আর আর অনিশ্চয়তার মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন জেলেরা।
নদীতে সারাদিন জাল বেয়ে যে মাছ পাচ্ছেন তা দিয়ে দেনা পরিশোধ করে সংসার চালানো কঠিন হয়ে পড়েছে মেঘনা পাড়ের জেলেদের।
জেলেরা জানান, প্রতি বছর এমন সময় নদীতে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ ধরা পড়লেও এ মৌসুমে মাছের সংকট। ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ শিকারের আশা নিয়ে জাল-নৌকা ও ট্রলারে করে উত্তাল মেঘনার সঙ্গে যুদ্ধ করে ফিরতে হচ্ছে অনেকটা খালি হাতে।
প্রবাদ রয়েছে, মাছে ভাতে বাঙ্গালী। ইলিশের এই ভরা মৌসুমেও যদি জেলেরা মাছের দেখা না পায়, তবে সেটা অবশ্যই চিন্তার বিষয়। এজন্যে নিষেধাজ্ঞার সময় জাটকা মাছ ধরা পুরোপুরি বন্ধ করে দিতে হবে।
অনলাইন বাংলা নিউজ বিডি :/ এস এস
Leave a Reply