
বৃহস্পতিবার ইউনিসেফের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সাম্প্রতিক ভারি বর্ষণে বন্যা ও পাহাড় ধসের ঘটনায় এক রোহিঙ্গা শিশুর মৃত্যু হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে শতাধিক আশ্রয়কেন্দ্র। এতে শরণার্থী পরিবারগুলোর সুরক্ষা ঝুঁকির মুখে পড়েছে। জাতিসংঘ সংস্থাটি বলছে, রোহিঙ্গা শিবিরগুলোর শিশুরা ব্যাপকভাবে স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা ঝুঁকিতে পড়েছে।
ইউনিসেফের বাংলাদেশ প্রতিনিধি এডওয়ার্ড বেগবেদার বলেন, “হাজার হাজার শরণার্থী শিশু ও পরিবারগুলো পাহাড়ি আশ্রয়কেন্দ্রে বাস করছে, যেখানে বালুমাটি আটকে রাখার মতো কোনো গাছ, পাথর বা ঝোঁপ নেই। যেহেতু বৃষ্টি হয়েই চলেছে এবং পানির উচ্চতা বাড়ছে এখানকার মাটি এখন কাদায় পরিণত হয়েছে।
প্রায় ৯০০টি আশ্রয়কেন্দ্র, ১৫টি পানি সংগ্রহ কেন্দ্র এবং ২০০টি শৌচাগারসহ ইউনিসেফের স্বাস্থ্যসেবা দেওয়ার দুটি কেন্দ্র, দুটি খাবার বিতরণকেন্দ্রও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এগুলো মেরামতের প্রক্রিয়া চলছে বলে জানিয়েছে ইউনিসেফ।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে থেকে জানানো হয়, ক্যাম্পে চলাচলের অধিকাংশ রাস্তাই বন্যার পানিতে প্লাবিত। অন্যদিকে গুরুত্ব একটি সড়ক ওষুধ বহনকারী গাড়ি ছাড়া সাধারণের জন্য বন্ধ রাখা হয়েছে।
ইউনিসেফ ও এর সহযোগী সংস্থাগুলো পরিচালিত বেশ কয়েকটি শিক্ষাকেন্দ্র এবং শিশু ও নারীদের বিনোদনের জন্য নির্ধারিত স্থানগুলো খারাপ আবহওয়ার কারণে সাময়িকভাবে বন্ধ রাখায় এতে নারী ও শিশুরা ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে।
মৌসুমী বৃষ্টির কারণে ক্যাম্পে বিশেষত ডায়রিয়া ও কলেরার মতো পানিবাহিত রোগসহ অন্যান্য স্বাস্থ্যগত ঝুঁকিও দেখা দিয়েছে।
বেগবেদার বলেন, “প্রবল বৃষ্টির কারণে পাহাড় ধস ও বন্যায় শিশুরা কেবল আহতই হচ্ছে না, মৃত্যুও ঘটছে। এছাড়াও রোগ দেখা দিচ্ছে, সেই সঙ্গে শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবায় ব্যাঘাত ঘটছে।
“আরও বিপর্যয় এড়াতে এই হাজার হাজার শিশুদের জন্য জরুরি সহায়তা প্রয়োজন।”
মৌসুমী বৃষ্টি ও বর্ষায় জুন, জুলাই ও অগাস্ট মাসে কক্সবাজারে আড়াই মিটারেরও বেশি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।
বর্ষা মৌসুমে অতিরিক্ত বৃষ্টির ফলে সৃষ্ট পাহাড়ধস প্রতি বছরেই হয়ে থাকে। এতে কখনো কখনো প্রাণহানী হয় ব্যাপক হারে।
এবার পরিস্থিতি আরো অবনতির দিকে। রোহিঙ্গারা পাহাড়ি ঢালে পাহাড় কেটে স্থাপন করেছে জনবসতি। পাহাড় ধ্বসের আশংকা এতে বেড়ে গেছে বহুগুন। যাতে রোহিঙ্গা ছাড়াও হতাহত হতে পারে আমাদের দেশের জনগন।
রোহিঙ্গা আশ্রয় দেয়ার এই ঘটনায় এভাবেই অপূরণীয় ক্ষতির সম্মুখীন হতে হচ্ছে বাংলাদেশকে। আবার তাঁরা চলে যেতেও ইচ্ছুক নয়- যেটি আরো চিন্তার বিষয়।
দেশের স্বার্থে এই সমস্যাটির আশু সমাধান প্রয়োজন।
Leave a Reply