
বেঁচে থাকবার জন্য প্রথম সারির চাহিদা গুলোর মাঝে একটি, নিরাপত্তা। খাদ্য, বাসস্থান, কিংবা শিক্ষা সবকিছু মূল্যহীন হয়ে পড়ে সামাজিক নিরাপত্তার অভাবে। রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানোর বিষয়ে নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ। জাতিসংঘের আশংকা, রাখাইন রাজ্য এখনো রোহিঙ্গাদের বসবাসের উপযুক্ত হয় নি।
অতএব এই মুহূর্তে তাদের সেখানে ফেরত পাঠালে নতুন করে হুমকির মুখে পড়তে পারে জাতিগত ভাবে। প্রায় বছর খানেক ধরে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী, সেদেশের রাখাইন অঞ্চলে বসবাসরত রোহিঙ্গা দের উপর বিভিন্ন ভাবে নিপীড়ন চালিয়ে আসছিলো। তাদের ঘর-বাড়ি পুড়িয়ে দেয়া হয়, অনেকের ক্ষেত্রে চালানো হয় শারীরিক অত্যাচার।
একসময় এই অন্যায় নিপীড়ন সহ্য করতে না পেরে অনেকেই পূর্বপুরুষের ভিটেমাটি ত্যাগ করে বেরিয়ে পড়েন অজানা গন্তব্যে। এদের বেশির ভাগেরই ঠাঁই হয় বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী এলাকায়। প্রায় ছয় লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশের উখিয়া, ও তার নিকটবর্তী অঞ্চলে আশ্রয় নিয়েছে সাম্প্রতিককালের এই নিপীড়নে। বাংলাদেশ ছোট, জনবহুল একটি দেশ।
বেঁচে থাকবার জন্যে আবশ্যকীয় প্রয়োজন চাহিদা গুলো দেশের নাগরিকদের জন্যেই নিশ্চিত করা যাচ্ছে না অনেক ক্ষেত্রে। তার উপর এই বিপুল সংখ্যক বার্মাবাসী আমাদের দেশের জন্যে বাড়তি চাপ সৃষ্টি করছে, এবং অদুর ভবিষ্যতে আরো করবে, তা নিশ্চিত করেই বলা যায়।
বাংলাদেশ রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে আন্তর্জাতিক মহল থেকে মিয়ানমারের উপর চাপ তৈরি করবার কথা বলেছে। মিয়ানমারের পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয় থেকে এসেছে বিভিন্ন অভিযোগ। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য, বাংলাদেশ রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে দিতে আন্তরিক নয়, তারা প্রয়োজনীয় সহায়তা করছে না।
এর মধ্যে, মিয়ানমারের আকাশ থেকে তোলা ছবিতে মুসলিম জনগোষ্ঠীর বেশ কিছু ঐতিহ্যবাহী স্থাপনা গুড়িয়ে দেয়ার দৃশ্য দেখা গেছে। এটি নতুন করে প্রশ্ন তুলছে, সেখানে রোহিঙ্গারা কতটুকু নিরাপত্তা পাবেন।
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য পরিদর্শনে গত সপ্তাহে এক সফরে যান কূটনীতিকেরা। এরপরই সেখানের অবস্থা নিয়ে ছবি দেয়া হয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। এসব ছবিতে ফুটে ওঠে বীভৎস নৃশংসতা। বিস্তৃত এলাকা জুড়ে দেখা যায় ধ্বংসযজ্ঞ ছবি। তাতে গুঁড়িয়ে যাওয়া থেকে শুধু বাড়িঘর-স্থাপনাই নয়, রক্ষা পায় নি গাছ-গাছালি, ফসল-ফলের জমিও। আশংকা করা হচ্ছে, বর্ষা মৌসুমে রাখাইনে রোহিঙ্গাদের অতীত বসবাসের চিন্হটুকুও ধুয়ে মুছে যাবে।
এ বিষয়ে মিয়ানমার সরকার এর পক্ষ থেকে বিবৃতি দেয়া হয়েছে। তাঁরা বলছেন, স্থাপনাগুলো গুঁড়িয়ে দেয়ার পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে গ্রামগুলোকে আগের চেয়ে ভালো মানে উন্নীত করার জন্যে। এর পর রোহিঙ্গাদের ভাগ্যে কি আছে, সেটি এখনই বলা যাচ্ছে না।তবে বিশ্ববাসীর মানবতার স্বার্থে মিয়ানমারের ধ্বংস যজ্ঞ শীঘ্রই বন্ধ হবে বলে আশা করছে আন্তর্জাতিক বিশ্ব।
অনলাইন বাংলা নিউজ বিডি :/ ও এস
Leave a Reply