
নিরাপত্তা সম্মেলনে মিয়ানমারের নিরাপত্তা উপদেষ্টাকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, রাখাইন রাজ্যের পরিস্থিতি কি মিয়ানমারকে জাতিসংঘের আরটুপি (রেসপন্সসিভিলিটি টু প্রটেক্ট) ফ্রেমওয়ার্ক চালুর দিকে নিয়ে যাবে? কথিত এই আরটুপি ফ্রেমওয়ার্কটি ২০০৫ সালে জাতিসংঘের বিশ্ব সম্মেলনে গ্রহণ করা হয়। এর মধ্য দিয়ে গণহত্যা, যুদ্ধাপরাধ, জাতিগত নিধনযজ্ঞ ও মানবতাবিরোধী অপরাধ থেকে নিজ দেশের জনগণকে রক্ষা এবং এই প্রতিশ্রুতিকে ঊর্ধ্বে তুলে ধরতে এক দেশ অন্য দেশকে সহযোগিতা করবে।
জবাবে নিরাপত্তা উপদেষ্টা বলেন, স্বেচ্ছায় যদি ৭ লাখকে ফেরত পাঠানো যায় তাহলে আমরা তাদের গ্রহণে আগ্রহী। বাংলাদেশে পালিয়ে আসা ৭ লাখ রোহিঙ্গার সবাই যদি স্বেচ্ছায় ফিরে যেতে চায় তাহলে সবাইকে ফিরিয়ে নেয়া হবে বলেও জানিয়েছেন মিয়ানমারের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা থাউং তুন।
এটাকে কি জাতিগত নিধনযজ্ঞ বলা যায়? থাউং তুন আরো বলেন, সেখানে কোনও যুদ্ধ চলছে না, তাই এটা যুদ্ধাপরাধ নয়। মানবতাবিরোধী অপরাধের বিষয়টি কিছুটা বিবেচনা করা যেতে পারে। কিন্তু আমাদের অকাট্য প্রমাণ লাগবে। এই গুরুতর অপরাধ প্রমাণিত হতে হবে এবং তা নিয়ে হালকাভাবে আলোচনা করা উচিত নয়।
থাউং তুন জানান, রাখাইনের যে আখ্যান প্রকাশিত হচ্ছে তা ‘অসম্পূর্ণ ও বিভ্রান্তিকর’। তিনি বলেন, রাখাইনের উত্তরাঞ্চলে যে মানবিক সংকট সৃষ্টি হয়েছে মিয়ানমার সেটাকে অস্বীকার করছে না। রাখাইনের মুসলিম জনগোষ্ঠী যে ভুক্তভোগী তা অস্বীকার করা হচ্ছে না। বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী রাখাইন, হিন্দু ও অন্যান্য সংখ্যালঘুরাও কম নিপীড়িত হচ্ছে না। এই উপদেষ্টা জানান, দেশকে রক্ষার অধিকার রয়েছে সেনাবাহিনীর। তদন্তে যদি প্রমাণিত হয় তারা আইন লঙ্ঘন করেছে তাহলে পদক্ষেপ নেয়া হবে।
উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের আগস্টে রাখাইনে সেনাবাহিনীর সহিংসতায় বাংলাদেশে পালিয়ে আশ্রয় নিয়েছে প্রায় সাত লাখ রোহিঙ্গা। এসব রোহিঙ্গাকে ফিরিয়ে নিতে বাংলাদেশ সরকার ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় দফায় দফায় মিয়ানমারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। উভয় দেশের মধ্যে স্বাক্ষরিত হয়েছে প্রত্যাবাসন চুক্তিও। তবে রোহিঙ্গারা কবে ফিরতে পারবে তা এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে বিভিন্ন সময়ে মায়ানমারের বিভ্রান্তিমূলক বক্তব্য বিষয়টি নিয়ে ধোঁয়াশার সৃষ্টি করেছে। এতে বাংলাদেশের মত জনবহুল দেশেও তৈরী হচ্ছে সমস্যা। এই সমস্যা সমাধানে আন্তর্জাতিক মহলকে আরো একটু চাপ প্রয়োগ করতে হবে মিয়ানপমারের উপর।
অনলাইন বাংলা নিউজ বিডি :/ এস এস
Leave a Reply