
বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখার যুগ্ম আহ্বায়ক এ পি এম সুহেল। বৃহস্পতিবার ভোর রাতে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়।
সুহেলকে পাওয়া গেছে গনজাগরণ মঞ্চের সক্রিয় নেতা লাকী আক্তারের ভাড়া বাসায়।
লাকী বলেছেন, বৃহস্পতিবার ভোররাতে তার বাসা থেকে সুহেলকে ধরে নেওয়া হয়।
ছাত্র ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি ও বর্তমানে কৃষক সমিতির নেতা লাকীও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজির শিক্ষার্থী ছিলেন।
সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে যে আন্দোলন চলছে, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে তা সংগঠনে ভূমিকা রয়েছে সুহেলের। তিনি সম্প্রতি তিনি ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের হামলার শিকারও হয়েছিলেন।
লাকী বলেন, রাত সোয়া ৪টার দিকে শান্তিনগরে তার ভাড়া বাসায় সাদা পোশাকের একদল ব্যক্তি অভিযানে যায়। লাকী প্রথমে দরজা না খুললেও অনেকক্ষণ বাক-বিতণ্ডার এক পর্যায়ে বাড়িওয়ালা আসার পর দরজা খুলে দেন।
তিনি বলেন, “ক্যাম্পাসে আমার ডিপার্টমেন্টের ছোটভাই এবং কোটা সংস্কার আন্দোলনের সংগঠক সুহেল আমার বাসায় ছিল। তারা তাকে তুলে নিয়ে গেছে। যাওয়ার আগে বাসার কম্পিউটারের হিস্ট্রি চেক করেন। এছাড়া সুহেল যে রুমে ছিল সেখানে তন্ন তন্ন করে তল্লাশি চালান। সুহেলের ব্যবহৃত একটি ফোন ছাড়া আর কিছুই তারা পাননি।”
প্রায় দেড় ঘণ্টা বাসায় অবস্থানকালে ওই ব্যক্তিরা সুহেলকে আলাদা কক্ষে নিয়ে ‘হাতকড়া পরিয়ে’ জিজ্ঞাসাবাদ করেন বলেও লাকী জানান।
“সুহেলকে নিয়ে যাওয়ার আগে আমি জানতে চাইলাম ওর বিরুদ্ধে অভিযোগ কী? তারা বললেন, কোটা সংস্কার আন্দোলন ইস্যুতে তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিয়ে যাচ্ছেন।”
“যাওয়ার সময় তারা বলে গেছেন, আপনারা ডিবি অফিসে যোগাযোগ করেন,” বলেন লাকী।
এর আগে কোটা আন্দোলনকারী কয়েকজন নেতাকে সম্প্রতি গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। অধিকাংশ ক্ষেত্রে বেশ পরে পুলিশের পক্ষ থেকে আটকের খবর নিশ্চিত করা হয়েছিল।
সুহেলকে আটকের বিষয়টিও বিকাল পর্যন্ত কোনো পুলিশের কোনো কর্মকর্তা স্বীকার করছিলেন না।
বিকালে ঢাকা মহানগর পুলিশের উপকমিশনার (মিডিয়া) মাসুদুর রহমান বলেন, “তাকে (সুহেল) গ্রেপ্তার করা হয়েছে।”
কী অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে- জানতে চাইলে তিনি তাৎক্ষণিকভাবে এর বেশি কিছু বলতে রাজি হননি।
লাকী বলেছেন, “আমি এ ঘটনায় মোটেও ভীত নই। কিন্তু যখন-তখন সাদা পোশাকে নাগরিকদের ঘরে হানা দেওয়ার এই সংস্কৃতি একজন নাগরিক হিসেবে আমাকে শংকিত করে।”
শিক্ষার্থী গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিয়ে যোগাযোগ করা হলে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. নুর মোহাম্মদ বলেন, “বিষয়টি আমি শুনেছি। আইন শৃঙ্খলা বাহিনী কেন তাকে নিয়ে গেছে, তা আমি জানি না। তবে কেউ যদি অপরাধ করে, তবে সে শাস্তি পাবে, আর না করলে মুক্তি পাবে- এটাই স্বাভাবিক ব্যাপার।
কোটা আন্দোলনের বিষয়ে সরকারকে একটি সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ নিতে হবে। তা না হলে এভাবে ধর-পাকড় ছাত্রমনে অসন্তোষ সৃষ্টি করবে। যার পরিণতি কারো জন্যেই ভাল হবে না।
অনলাইন বাংলা নিউজ বিডি :/ এম ইউ
Leave a Reply