
বুধবার জাতীয় সংসদ অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর নির্ধারিত ৩০ মিনিটের প্রশ্নোত্তর পর্বে বক্তব্য রাখেন। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে শেষ সংসদ অধিবেশনে এসংক্রান্ত প্রশ্নটি উত্থাপন করেন জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য মো. ফখরুল ইমাম।
প্রশ্ন করতে গিয়ে জাপার সদস্য মো. ফখরুল ইমাম বলেন, দেশে যে রাজনৈতিক মান-অভিমান চলছে, বাড়তে থাকা দূরতে ক্ষোভের পাহাড় জমছে। রাজনৈতিক এই সমস্যা রোহিঙ্গা ইস্যুর চেয়ে কম গুরুত্ব নয়। এটা ভাঙাতে প্রধানমন্ত্রী কোনো উদ্যোগ নেবেন কি না?
এই সম্ভাবনা নাকচ করে দিয়ে বলেছেন, ‘এখানে মান-অভিমানের কিছু নেই, এটা হচ্ছে নীতির প্রশ্ন। রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত ও আইনের প্রশ্ন। দেশের মানুষকে গ্রাম পর্যায় পর্যন্ত উন্নয়নের ছোঁয়া দিতে পেরেছি সেটাই আমাদের সবচেয়ে বড় পাওয়া। এখানে কে মান-অভিমান করল, কার মান ভাঙাতে যাব—সেটা আমি জানি না। তবে সহানুভূতি দেখাতে গিয়ে যদি অপমানিত হয়ে ফিরে আসতে হয়! সেখানে আর যাওয়ার কোনো ইচ্ছা আমার নেই।’
জবাব দিতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এটা হচ্ছে নীতির প্রশ্ন। আইনের প্রশ্ন। কেউ যদি দুর্নীতি করে, এতিমের টাকা চুরি করে, মানুষ খুন করে, খুন করার চেষ্টা চালায়, গ্রেনেড মারে, বোমা মারে তার বিচার হবে—এটাই তো স্বাভাবিক। এখানে কে মান-অভিমান করল, কার মান ভাঙাতে যাব—সেটা আমি জানি না।’
তিনি আরো বলেন, ‘নিঃস্বার্থভাবে ও দেশের মানুষকে ভালোবেসে কাজ করতে পেরেছি বলেই এত অল্প সময়ে দেশের এত উন্নয়ন করতে সক্ষম হয়েছি। অতীতে তো অনেক সরকারই ক্ষমতায় ছিল। এত অল্প সময়ে দেশের এত উন্নয়ন কে করতে পেরেছে? কেউ পারেনি।’
রোহিঙ্গা ইস্যুতেও কথা হয় জাতীয় সংসদে। সরকারি দলের ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভুর সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিন দফা চুক্তি এবং আশ্বাস দিলেও মিয়ানমার তাদের নাগরিক রোহিঙ্গাদের ফেরত নিতে তেমন উদ্যোগী হচ্ছে না। কিন্তু আমরা বিশ্বজনমত সৃষ্টি করতে সক্ষম হয়েছি।
চীন, রাশিয়া ও ভারতও রোহিঙ্গা ইস্যুতে বলেছে মিয়ানমারের উচিত রোহিঙ্গাদের ফেরত নেওয়া। চীন ও ভারত রোহিঙ্গাদের জন্য ঘরবাড়ি নির্মাণেও সাহায্য দিচ্ছে। আন্তর্জাতিক আদালতও মিয়ানমারে রোহিঙ্গা নির্যাতনের সঙ্গে জড়িতদের বিচারের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। আমরা ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের রাখার জন্য ঘরবাড়ি নির্মাণ করছি।
জাতীয় পার্টির নুরুল ইসলাম মিলনের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে দীর্ঘমেয়াদে অবস্থানের কোনো সুযোগ নেই।
সরকারদলীয় সংসদ সদস্য এম এ মালেকের প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে আমরা সব মহাসড়কই চার লেনে উন্নীত করার সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করে যাচ্ছি। রাজধানী ঢাকার যানজট নিরসনে চারপাশে এলিভেটেড রিং রোড করা হবে। এ ছাড়া পাতাল রেল নির্মাণের জন্য সমীক্ষা চলছে।
পাতাল রেল নির্মাণেরও পরিকল্পনা আমাদের রয়েছে। তিনি আরো বলেন, একসময় রেল ছিল মৃতপ্রায়। সেই রেলকে আমরা পুনরুজ্জীবিত করেছি। অভ্যন্তরীণ ও আঞ্চলিক রুটে চলাচলের জন্য আরো কয়েকটি ছোট বিমান ক্রয় করা হবে বলেও জানান মন্ত্রী। তিনি বলেন, মাত্র সাড়ে ৯ বছরে আমরা দেশের যত উন্নয়ন করেছি, তা বলতে গেলে টানা কয়েক দিন সময় লাগবে।
অনলাইন বাংলা নিউজ বিডি :/ এম ইউ
Leave a Reply