
ঘটনাটি মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলার ছোট কালিয়াকৈর গ্রামে।
ফেসবুকে আপত্তিকর ছবি ছড়িয়ে দেয়ায় দিশারী বিশ্বাস মিম নামে ১০ম শ্রেণির এক স্কুলছাত্রী আত্মহত্যা করেছে। সোমবার (৮ অক্টোবর) দুপুরে সিংগাইর উপজেলার ছোট কালিয়াকৈর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
দিশারীর মামা মিজানুর রহমান জানান, সদর উপজেলার নালরা গ্রামের আনোয়ার হোসেনের ছেলে কলেজছাত্র আলাউদ্দিন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ইমোর ভুয়া আইডি খুলে তার ভাগ্নি দিশারীর সঙ্গে যোগাযোগ করতো। একপর্যায়ে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এ সময় ইমোর মাধ্যমে তারা কিছু ছবিও আদান-প্রদান করে।
তিনি আরও বলেন, প্রেমের কিছুদিন যাওয়ার পর দিশারী ছেলেটির আসল পরিচয় জানলে যোগাযোগ কমিয়ে দেয়। কিন্তু আলাউদ্দিন দিশারীকে বিয়ে করার জন্য চাপ দিতে থাকে। এতে রাজি না হওয়ায় নানাভাবে দিশারীকে ব্লাকমেইল ও হুমকি দিয়ে আসছে আলাউদ্দিন। এ ঘটনা আলাউদ্দিনের স্বজনদেরও একাধিকবার জানানো হয় পাশাপাশি মৌখিকভাবেও সতর্ক করা হয়েছে আলাউদ্দিনকেও। কিন্তু এতেও আলাউদ্দিন ক্ষান্ত না হয়ে রোববার (৭ অক্টোবর) তার ফেসবুক আইডি ’অলেখা কাব্য’তে দিশারীর কয়েকটি আপত্তিকর ছবি পোস্ট করে। যা বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে সবার কাছে ছড়িয়ে পড়ে।
দিশারীর মামা আরও জানান, এতে ভাগনি মান-সম্মানের ভয়ে সোমবার (৭ অক্টোবর) দুপুরে নিজ ঘরে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করে দিশারী। পরে সিংগাইর থানা পুলিশ দিশারীর মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মানিকগঞ্জ সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। তবে এ ঘটনার পর থেকে মোবাইল ফোন বন্ধ করে পালিয়ে গেছে আলাউদ্দিন।
নিহত দিশারী ওই গ্রামের মোহাম্মদ আলী টুলুর মেয়ে এবং স্থানীয় কালিয়াকৈর খান উচ্চ বিদ্যালয়ের ১০ম শ্রেণির শিক্ষার্থী।
দুই ভাই এক বোনের মধ্যে দিশারীই ছিল পরিবারের সবার বড় সন্তান। একমাত্র কন্যা সন্তানকে হারিয়ে পাগলপ্রায় তার বাবা-মা। এ ঘটনায় দায়ী আলাউদ্দিনের শাস্তির দাবি জানিয়েছেন তারা।
সিংগাইর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মতিউর রহমান জানান, নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় মামলা দায়েরের প্রস্ততি চলছে। ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
ফেসবুকে আপত্তিকর ছবি এবং পরে আত্মহত্যার ঘটনা নতুন কিছু নয়। এতে সামাজিকভাবে যেমন হেনস্থা হতে হয়, তেমনই ধ্বংস হয়ে যেতে পারে একটি পরিবার।
অনলাইন বাংলা নিউজ বিডি :/ মোঃ মোস্তফা কামাল
Leave a Reply