
জীবনে প্রেম করেছেন, অথচ প্রতারণার শিকার হন নি, এমন মানুষের সংখ্যা কম। হোক সেটা কারো ইচ্ছায় কিংবা অনিচ্ছাতেই। কারো হাত ধরলেন, জীবনের অনেকটা পথ একসাথে চললেন। তারপর হুট করে একদিন মনে হলো, সে আপনার উপযুক্ত নয়। আরো ভালো কিছুর আশায় আপনি মাঝপথে তার হাত ছেড়ে দিলেন। তারপর খুঁজলেন নতুন কিছু। ছেড়ে দেয়া মানুষটার দিকে ফিরে তাকাবার সময় আপনার আর হলো না।
এমন ঘটনা হর-হামেশাই ঘটে থাকে। আমরা কয়টার খবরই বা পাই? ক’জনকেই বা চিনি? অথচ প্রতারিত হওয়া মানুষগুলো আমাদের আপন কেউ হয়েই দেহের ভেতর ভেঙ্গে যাওয়া মন নিয়ে চলাফেরা করছে। আমরা ঘুণাক্ষরেও বুঝতে পারি না তাদের।
এজন্যেই এবার সম্পর্কের ব্রেকাপের উপরও শাস্তির আইন ঘোষনা করল সুপ্রিম কোর্ট। আইনগত ভাবে যেমন সম্পর্ক গড়াও যায় তেমনি সম্পর্ক ভাঙলে শাস্তিও হতে পারে আইনগত ভাবেই।
সমাজ শরীরের মূল্য দেয়। কেউ কাওকে শারীরিক আঘাত করলে, কিংবা নারীর প্রতি শারীরিক সহিংসতায় শাস্তি হয়। সেটা হওয়াই স্বাভাবিক। তবে মনের ব্যাপারে কেন এত উদাসীনতা থাকবে? আসুন আমরা জেনে নেই এই সম্পর্কে বিস্তারিত।
ধর্ষনের যদি শাস্তি হয়ে থাকে তবে সম্পর্ক ব্রেকাপ করলে শাস্তি হবে না কেন? এরকম দেশের অনেকেই দাবি করেছেন। শরীরের যন্ত্রনা তো বাইরে থেকে দেখা যায়, মানুষকে বলাও যায়। অনেকেই আছেন যারা শুধুমাত্র টাইমপাসের জন্য একটা সম্পর্কে জড়িয়ে থাকে। পরে বাবা মা-র পছন্দ করা জনকেই বিয়ে করে নেন। আবার অনেকে এমনও আছেন নতুন কাউকে পেয়ে পুরনো জন কে ভুলে যান।
এবার আর নয়। এতদিন ধরে মন ভাঙার কোনো শাস্তিই ছিল না কিন্তু এখন মন ভাঙাও একধরনের ক্রাইম। তাই এরা সবাই এই সমাজের চোখে এক একটি ক্রিমিনাল।
অনেকে রিলেশনের ব্যাপারে সিরিয়াস থাকেন না। দায়বদ্ধতা থাকে না সঙ্গীর প্রতি। সেক্ষেত্রে এক পক্ষকে কেবল কষ্টই পেয়ে যেতে হয়। রাতের আঁধারে বালিশ ভেজান। ব্রেকাপ অবশ্য ছেলে অথবা মেয়েরা উভয়েই কম বেশি করে থাকেন। এই ব্রেকাপের জন্য দেশে বাড়ছে সুইসাইডের প্রবনতা। যার জন্যে পরোক্ষভাবে সেই রিলেশনে থাকা মানুষটিই দায়ী।
উচ্চ আদালত জানিয়েছেন এবার ব্রেকাপ হলে ছেলে অথবা মেয়ে যে কেউ নিকটবর্তি থানায় অভিযোগ দায়ের করতে পারেন। 24 ঘন্টার মধ্যে অ্যারেস্ট করা হবে অভিযুক্তকে। অবশ্য এক্ষেত্রে নাবালক বা নাবালিকা হলে অভিযোগটি বাতিল করা হবে।
দেশে এইরকম আইন আসাতে স্বস্থির নিঃশাস ফেলেছেন অনেকে। অনেকে এই নয়া আইনকে সাধুবাদ জানিয়েছেন। দেশের রাষ্ট্রপতি বলেছেন “যে বা যারা সম্পর্কের মিথ্যে নাটক করে দু একদিনের জন্য টাইমপাস করতে আসে তার অপরাধের ক্ষমা নেই। এদের মতন ক্রিমিনালদের উচ্চ থেকে উচ্চতর শাস্তি হওয়া দরকার।
এই ধরনের অপরাধিদের কমপক্ষে দুবছরের কারাদণ্ড এবং পঞ্চাশ হাজার টাকা জরিমানা দিতে হবে বলে জানিয়েছে উচ্চ আদালত। উচ্চ আদালতের এই ধরনের আইন ব্যবস্থা কে সম্মান ও সহমত জানিয়েছেন সারা দেশবাসী।
এবার শুধু শরীরের আঘাত নয়, মানসিক যন্ত্রনা দেয়া মানুষগুলোও শাস্তি পাবে তাদের কৃতকর্মের জন্য। যা হয়তো আগে অনেকেই ভাবেন নি। অথচ হৃদয় ভাঙ্গার যন্ত্রনাটাই মানুষকে পুরোপুরি শেষ করে ফেলে না, বরং একটু একটু করে পোড়ায়। এর শাস্তি হওয়া উচিত শারীরিক আঘাতের শাস্তির চেয়ে বেশি কিছু। এই আইনে তাই সকলে আশাবাদী। চাইলেই পরস্পরকে ছেড়ে যাবে না। এবং হুট করে সময় কাটাবার জন্যে কেউ কোনো সম্পর্কে জড়াবেও না।
অনলাইন বাংলা নিউজ বিডি :/ ও এস
Leave a Reply