
কামরান আহমেদ রাজীব, কুষ্টিয়া জেলা প্রতিনিধিঃ কুষ্টিয়ার গ্রাম গঞ্জের খেটে খাওয়া অতি সাধারণ পরিবারের শিক্ষিত ও মেধাবী সন্তানদের ১০৩ টাকায় চাকুরী প্রদানের মাধ্যমে মুখে হাসি ফোটালেন কুষ্টিয়া পুলিশ সুপার এসএম তানভীর আরাফাত পিপিএম (বার)। তিনি সত্য হলেও এমন অবিশ্বাস্য এবং বিরল ঘটনা সৃষ্টি করেছেন কুষ্টিয়ায়। বিভিন্ন পেশাজীবি এবং শিক্ষিতজনেরা এ প্রতিবেদককে জানান, আমরা ভেবেছিলাম ১০৩ টাকায় চাকুরী এটা হয়তো কথার কথা। কারণ অতিতেও অনেকে মুখে বড় বড় কথা বলে শেষ পর্যন্ত তা ধরে রাখতে পারেন নি। কিন্তু এই প্রথম পুলিশ সুপার এসএম তানভীর আরাফাত পিপিএম (বার) যিনি তাঁর প্রতিশ্র“তির প্রতিটি শব্দ অক্ষরে অক্ষরে প্রমান করেছেন। তিনি যে চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করেছিলেন সেখানে শতভাগ সফল হয়েছেন। কুষ্টিয়ার সকল শ্রেণী পেশার মানুষের কাছে পুলিশ সুপার আইন, মানবিকতা এবং নীতি আদর্শের মডেল হয়ে থাকবেন। কুষ্টিয়া চাকরি পাওয়া
৭৫ জনের চোখেমুখে ছিল আনন্দের ছাপ। এদের মধ্যে সোনিয়া আক্তার দরিদ্র কৃষক পরিবারের মেয়ে। ছোটবেলা থেকেই তার স্বপ্ন ছিল পুলিশে চাকরি করার। কিন্তু অভাবের সংসারে ঘুষ দিয়ে চাকরি নেয়ার সেই সামর্থ ছিলো না। পুলিশের মাইকিং শুনেছে চাকরিতে কোনো ঘুষ দেয়া লাগবে না। পুলিশের এমন প্রচারণায় আবেদন করেছিলেন তিনি। পরিবারের পক্ষ থেকেও উৎসাহ দেওয়া হয় তাকে। শারীরিক ফিটনেস এবং মেধা দুটিই ছিল তার। তাই আত্মবিশ্বাসও ছিল বেশ। মাত্র ১০৩ টাকায় পেয়ে গেলেন পুলিশের চাকুরি। কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার শেরপুর গ্রামের দরিদ্র কৃষক দিদার আলীর মেয়ে সোনিয়া। ৪ ভাই বোনের মধ্যে সবার ছোট তিনি। গত ৬ জুলাই সকালে কুষ্টিয়া পুলিশ লাইন্সস সাংবাদিকদের এসব কথা জানান সোনিয়া। জানা গেছে, গতকাল শনিবার দুপুরে কুষ্টিয়া পুলিশ লাইন্সে চাকরি পাওয়া ৭৫ জনের স্বাস্থ্য পরীক্ষা শেষে তাদের মিষ্টি মুখ করানোসহ ফুল দিয়ে বরণ করে নেন জেলা পুলিশ সুপার এস এম তানভীর আরাফাত। সোনিয়া কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন পুলিশ সুপারের প্রতি। শুধু সোনিয়াই নয়, তার মতো চাকরি পাওয়া
বাকিদের জীবনের গল্পও প্রায় একই রকম। চাকরি পাওয়ার পর সবার চোখেমুখে ছিল আনন্দের ছাপ। তারা সবাই পুলিশ সুপারের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন। পুলিশে চাকরি পাওয়া কুমারখালী উপজেলার মানিক কুমার ঘোষ বলেন, ‘ঘুষ ছাড়াও এখন পুলিশে চাকরি হয়। চাকরি পাওয়ার খবরে আমার পরিবার অনেক খুশি হয়েছে।’ কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার এসএম তানভীর আরাফাত বলেন, ‘আমার চ্যালেঞ্জ ছিল ঘুষ ছাড়া নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার। সেই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আমি সফল হয়েছি। প্রকৃত মেধাবীরা সুযোগ পেয়েছে। মাত্র ১০৩ টাকায় চাকরি হয়েছে।’ গত ১ জুলাই কুষ্টিয়ায় প্রাথমিকভাবে দুই হাজারেও বেশি পুলিশে চাকরি প্রত্যাশী আবেদন করেন। এদের মধ্যে লিখিত পরীক্ষায় সুযোগ পায় ৩শ জন। এর থেকে আবার চুলচেরা বিশ্লেষণ করে সম্পূর্ণ মেধার ভিত্তিতে চূড়ান্ত করা হয় ৭৫ জনের নাম। শনিবার তাদের সকলের স্বাস্থ্য পরীক্ষা শেষে মিষ্টি মুখ ও ফুলেল শুভেচ্ছা জানান সৎ ও সাহসী পুলিশ সুপার এসএম তানভীর আরাফাত পিপিএম বার।
অনলাইন বাংলা নিউজ বিডি:/আমিরুল ইসলাম
Leave a Reply