সংবাদ মাধ্যমের স্বাধীনতাবিষয়ক বৈশ্বিক সূচকে চার ধাপ নিচে নেমে ১৫০তম বাংলাদেশ। গতকাল বৃহস্পতিবার প্যারিসভিত্তিক অলাভজনক সংস্থা ‘রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডার’ (আরএসএফ) ১৮০টি দেশের সমন্বয়ে বার্ষিক এই সূচক প্রকাশ করে। বিশ্ব সংবাদ মাধ্যম স্বাধীনতা সূচক ২০১৯-এ (ওয়ার্ল্ড প্রেস ফ্রিডম ইনডেক্স ২০১৯) শীর্ষ অবস্থানে রয়েছে নরওয়ে। শীর্ষ পাঁচ দেশের সবগুলোই ইউরোপের। তালিকার সর্বশেষ দেশ ভিয়েতনাম। গত বছর এ তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ১৪৬তম।
এই সূচক অনুযায়ী, বাংলাদেশের সংবাদ মাধ্যমের স্বাধীনতা লঙ্ঘন মারাত্মকভাবে বেড়েছে। মাঠপর্যায়ে সংবাদ কর্মীদের ওপর রাজনৈতিক কর্মীদের হামলা, নিউজ ওয়েবসাইট বন্ধ এবং সাংবাদিক গ্রেফতারের ঘটনা বেড়েছে বলে রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডারের বিশ্লেষণে উল্লেখ করা হয়েছে।
বাংলাদেশ সংশ্লিষ্ট বিশ্লেষণ সূচকে বলা হয়, ‘ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও এর প্রধান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গৃহীত কড়া নীতির যৌথ শিকার বাংলাদেশি সাংবাদিকরা। ২০১৮ সালের অক্টোবরে প্রণীত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনকে সর্বশেষ অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে নির্বাহীরা। এই আইনে নেতিবাচক প্রচারণার শাস্তি ১৪ বছরের কারাদণ্ড। যেসব সাংবাদিক এবং ব্লগার সমাজে অতিরিক্ত ধর্মনিরপেক্ষ মতপ্রকাশের সুরক্ষা চান তারা উগ্রবাদী ইসলামপন্থিদের হয়রানি আর হত্যার শিকার হচ্ছে’।
আরএসএফ সারা বিশ্বের সাংবাদিকদের ওপর নিপীড়ন ও হামলার ঘটনা নথিবদ্ধ করে তা প্রতিরোধে কাজ করে। সংস্থাটির ২০১৯ সালের সূচকে দেখা গেছে, সাংবাদিকদের ওপর ঘৃণা সহিংসতায় পরিণত হচ্ছে। আর এর ফলে সারা বিশ্বে ভয়ের পরিবেশ বাড়ছে। বাংলাদেশের পরিস্থিতি বর্ণনা করতে গিয়ে ফটো সাংবাদিক শহিদুল আলমের গ্রেফতারের ঘটনাকে সামনে এনেছে রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডার। বলা হয়েছে সরকার বিরোধীদের দমন করতে বিচার ব্যবস্থাকে ব্যবহারের নজির এই ঘটনা। গত বছর গ্রেফতার হয়ে একশো দিনেরও বেশি কারাগারে কাটিয়েছেন এই ফটো সাংবাদিক।
আরএসএফ-এর সূচকে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর অবস্থান স্বভাবতই নিচের দিকে। দুই ধাপ নিচে নেমে ভারতের অবস্থান ১৪০ আর তিন ধাপ নিচে নেমে পাকিস্তানের অবস্থান ১৪২। আরএসএফ এর বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, সাংবাদিকদের নিরাপদে কাজ করতে পারা দেশের সংখ্যা কমে যাচ্ছে আর স্বৈরাচারী শাসকগোষ্ঠী সংবাদ মাধ্যমের ওপর নিয়ন্ত্রণ জোরালো করা অব্যাহত রেখেছে।
অনলাইন বাংলা নিউজ বিডি:/আমিরুল ইসলাম
Leave a Reply