
পুলিশের দায়িত্ব আইন রক্ষা করা। সেটি না করে যদি নিজেরাই হয়ে ওঠে আইনের ধ্বংসক, তবে বিষয়টা লজ্জার ও ন্যাক্কার জনক। এমনই এক ঘটনা প্রত্যক্ষ করা গেল এবার।
কুতুবদিয়া থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলতাফ হোসেনকে জেলহাজতে পাঠিয়েছেন আদালত।
মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টায় কক্সবাজার জেলা দায়রা জজ আদালতের বিচারক মীর শফিকুল আলমের আদালতে বিচারাধীন একটি মামলায় এই আদেশ দেন।
মামলা নিতে ঘুষগ্রহণের অভিযোগে ভুক্তভোগীর পক্ষ থেকে এ মামলা দায়ের করা হয়।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, পারিবারিক অভাব অনটনের কারণে ২০১৪ সালের ১৮ জুন সকালে ছিন্নি খাইয়ার পাড়ায় মৃত নজির আহম্মদ এর ছেলে উপজেলার ভূমি অফিসের কর্মচারী ফরিদুল আলমকে হত্যা করে তার স্ত্রী রোকেয়া বেগম ডেজি ও ছেলে অহিদুল আলম (রিয়াদ)।
এ ঘটনায় নিহতের মা নুর জাহান বেগম বাদী হয়ে মামলা করতে গেলে কুতুবদিয়া থানার ওসি আলতাফ হোসেন এক লক্ষ টাকা দাবী করে।
ছেলে হত্যার ন্যায় বিচার পাওয়ার আশায় এসআই এবিএম কামাল উদ্দিনের মাধ্যমে আলতাফ হোসেনকে ৫০ হাজার টাকা দেয় ওই বৃদ্ধা। কিন্তু ওসি আলতাফ হোসেন নুরজাহানের দায়ের করা এজাহারটি আমলে নেয়নি।
উল্টো নিহতের ছেলে মোহাম্মদ তৌহিদুল আলমের নিকট থেকে মোটা অংকের ঘুষগ্রহণ করে একটি মামলা গ্রহন করে।
ওই মামলায় নিহতের বৃদ্ধ মা নূর জাহান নিহতের দুই ভাই ইস্কান্দর মির্জা মাহবুব আলমকে ও আসামী করা হয়। সেই মামলায় দীর্ঘদিন কারাগারে ছিল দুই ভাই।
এ নিয়ে ইস্কান্দর মির্জার স্ত্রী জামিলা আকতার বাদি হয়ে কক্সবাজার সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতে কুতুবদিয়া থানার ওসি আলতাফ ও এসআই এবিএম কামাল উদ্দিনকে আসামি করে মামলাটি দায়ের করেন।
দুদকের পিপি এডভোকেট আবদুর রহিম বলেন, বাদীনির লিখিত অভিযোগ পেয়ে কক্সবাজার সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতের তৎকালীন সাদিকুল ইসলাম তালুকদার মামলাটি আমলে নিয়ে দুদককে তদন্তের নির্দেশ দেয়।
দীর্ঘ তদন্ত শেষে ২০১৭ সালের ১৫ মার্চ ওসি এবং এস আই দুইজনকেই অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশীট দেয় তদন্ত কর্মকর্তা অজয় ঘোষ। এরপর তাদের বিরুদ্ধে আদালত থেকে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়। সেই গ্রেফতারি পরোয়ানা মূলে আদালতে আত্বসমর্পণ করে ওসি আলতাফ হোসেন।
তিনি আরো বলেন, ওসি আলতাফ আত্বসমর্পণের সময় সঙ্গে বাদীনিকে নিয়ে আসেন। বাদী মামলাটি সামাজিকভাবে সুরাহা করা হয়েছে বলে আদালতে লিখিত আবেদন করেছেন।
তবে আদালত ওসির জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে। আর এই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে আগামী ২৬ শে জুন।
পুলিশ বা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাজ আইন রক্ষা করা এবং জনগনের সেবা।
তাদের পক্ষ থেকে এমন নীতি বিবর্জিত কাজ সত্যিই আশা করা যায় না। এটি দেশ ও জনসাধারনের জন্যেও হুমকিসরূপ। যে যে-ই পেশাতেই থাকি না কেন, আমাদের উচিৎ সততার সঙ্গে নিজ কাজটি করে যাওয়া।
অনলাইন বাংলা নিউজ বিডি :/ ও এস
Leave a Reply