
বুধবার (৭ মার্চ) সকাল ১১টার পর থেকেই খণ্ড খণ্ড মিছিল ঢুকেছে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে। দুপুর ১২টার পর থেকে উদ্যানের আশপাশ মিছিলে মিছিলে সরগরম হয়ে উঠেছে। আওয়ামী লীগের সমাবেশে অংশ নিতে রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অভিমুখে জনতার ঢল নেমেছে।
ঢাকার বিভিন্ন এলাকা থেকে বিশাল বিশাল মিছিল নিয়ে দলের নেতা-কর্মী-সমর্থকরা এ উদ্যানে আসতে শুরু করেছেন। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ উপলক্ষে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ এ জনসভার আয়োজন করেছে।
বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ ইউনেস্কোর তরফ থেকে বিশ্ব ঐতিহ্যের দলিল হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়ায় এবং আগামী জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে আয়োজিত এই সমাবেশকে জনসমুদ্রে পরিণত করার প্রস্তুতি নিয়েছে আওয়ামী লীগ। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের বিভিন্ন প্রান্ত ঘুরে দেখা গেছে, লাল-সবুজের টি-শার্ট ও মাথায় ক্যাপ পরে পায়ে হেঁটে বা পিকআপ ভ্যান, ট্রাক ও বাসযোগে বিভিন্ন সড়ক ধরে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের দিকে আসছেন ঢাকা মহানগরের বিভিন্ন থানা, ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন থেকে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, মহিলা আওয়ামী লীগ, যুব মহিলা লীগ, শ্রমিক লীগের নেতা-কর্মী-সমর্থকরা। রাজধানীর আশপাশের জেলাগুলো থেকেও আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী-ভ্রাতৃতিপ্রতিম সংগঠনের নেতাকর্মীরা সমাবেশে এসে যোগ দিচ্ছেন। নেতাকর্মীদের মিছিল-স্লোগান ও পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠেছে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের চারপাশ। ঢোল-তবলাসহ বিভিন্ন ধরনের বাদ্যযন্ত্রের ব্যঞ্জনায় পুরো এলাকায় উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে।
নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে সমাবেশে যোগ দিতে আসা শেরেবাংলা নগর থানা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভপতি শাহজাহান চৌধুরী বলেন, প্রতিবার আমরা দিবসটি গুরুত্বের সঙ্গে উদযাপন করলেও এবারের বিষয়টি আলাদা। কারণ এবার আমরা পালন করবো আন্তর্জাতিক স্বীকৃত একটি ভাষণ। যদিও এর গুরুত্ব আমাদের কাছে সবসময়ই বেশি ছিলো। কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সমাবেশে যোগ দিতে আসা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক জুয়েল রানা হালিম বলেন, জাতির জনকের এই ভাষণ বাঙালিকে অন্ধকার থেকে বের হতে পথ দেখিয়েছে। এতোদিন পরে হলেও ইউনেস্কো এই ভাষণকে স্বীকৃতি দিয়েছে। এতে আমরা ভীষণ খুশি। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আমরা নেতাকর্মীদের নিয়ে দিবসটি উদযাপন করতে এসেছি।
এদিকে, মঙ্গলবার (৬ মার্চ) রাত থেকেই রাজধানীর পাড়া-মহল্লায় বাজছে বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ মার্চের সেই ভাষণ। বাজছে দেশাত্মবোধক বিভিন্ন গানও। দিবসটির শুরুতে ভোরে সূর্য ওঠার সঙ্গে সঙ্গে বঙ্গবন্ধু ভবন, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়সহ সারাদেশের দলীয় কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। সকালে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দলের নেতাদের নিয়ে ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান।
১৯৭১ সালের এই দিনে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে (তৎকালীন রেসকোর্স ময়দান) স্বাধীনতা সংগ্রামের চূড়ান্ত পর্বে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ঐতিহাসিক ভাষণ দেন। এই ভাষণে তিনি বাঙালি জাতিকে সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ার চূড়ান্ত নির্দেশ দেন। গত অক্টোবরে জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি বিষয়ক সংস্থা ইউনেস্কো বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণটিকে বিশ্ব ঐহিত্যের দলিল (ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ) হিসেবে স্বীকৃতি দেয়।
অনলাইন বাংলা নিউজ বিডি :/ এস এস
Leave a Reply