
ইউরোপ অনেক বাঙালিদের কাছেই স্বপ্নের দেশ। সে দেশে তারা পাড়ি জমায় বৈধ কাগজপত্র-ভিসা ছাড়াই অবৈধ পথে। এভাবেই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ইউরোপে পাড়ি জমাতে গিয়ে গত ২৫ বছরে ৩৪ হাজারেরও বেশি অভিবাসন-প্রত্যাশীর মৃত্যু হয়েছে।
২০ জুন, বুধবার বিশ্ব শরণার্থী দিবস উপলক্ষে যুক্তরাজ্যের সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ান তালিকাটি প্রকাশ করেছে।
এদের মধ্যে কেউ সাগরে নৌকা ডুবে, কেউ আটককেন্দ্রে, আবার কেউবা সহিংস ঘটনায় মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েছেন। আর এই মিছিলে রয়েছে বহু বাংলাদেশিও। এমনকি এদের মধ্যে সকলের পরিচয়ও পাওয়া যায় নি।
গত ২৫ বছরে ইউরোপে যাওয়ার চেষ্টার সময় ঠিক কত অভিবাসন-প্রত্যাশীর মৃত্যু হয়েছে, সে বিষয়ে সরকারি হিসাব সেভাবে নেই। তবে নেদারল্যান্ডসের আমস্টারডামভিত্তিক বেসরকারি সংগঠন ইউনাইটেড ফর ইন্টারকালচারাল অ্যাকশন একটি তালিকা তৈরি করেছে।
কোস্টগার্ডের প্রতিবেদন থেকে পাওয়া তথ্য থেকে নিহত ব্যক্তিদের এই তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে। এতে দেখা গেছে, প্রায় ৪০০ অভিবাসন-প্রত্যাশী আত্মহত্যা করেছেন। ৬০০ জনেরও বেশি সহিংসতার শিকার হয়ে নিহত হয়েছেন।
মৃত্যুর এই তালিকায় প্রথম যে বাংলাদেশি রয়েছে, তার নাম জানা যায়নি। ১৯৯৮ সালের ৮ এপ্রিল চেক-জার্মান সীমান্তের কাছে সড়ক দুর্ঘটনায় অজ্ঞাতনামা এক বাংলাদেশির প্রাণ যায়। ২০০০ সালের ১২ জানুয়ারি সুইডেনের স্টকহোমে আত্মহত্যা করেন হোসেন (৩০) নামের এক বাংলাদেশি।
দুই বছর পর তুরস্কের ইস্তাম্বুলে একটি ট্রাকে শ্বাসরোধে মারা পড়েন তিন বাংলাদেশি। ওই বছরই ১৯ জুন তুরস্কে প্রবেশের সময় সীমান্তরক্ষীদের গুলিতে নিহত হন আরও দুই বাংলাদেশি। এর তিন মাসের মাথায় ২২ সেপ্টেম্বর ইরান-তুরস্ক সীমান্তে নিহত হন মোহাম্মদ সারাদ নামের আরেক বাংলাদেশি।
এ ছাড়া আরও ৩৭ বাংলাদেশির নাম জানা যায়নি। তাদের মধ্যে ১১ জনকে ২০০৫ সালের ১১ মার্চ মরক্কো থেকে নৌকায় করে স্পেনে যাওয়ার পথে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়।
২০১১ সালের ৬ মার্চ লিবিয়া থেকে জাহাজে করে গ্রিসে যাওয়ার সময় সাগরে লাফিয়ে পড়েন ১৮ বাংলাদেশি। তাদের মধ্যে ৩ জনের মরদেহ উদ্ধার করা গেছে। ১৫ জন এখনো নিখোঁজ। এই হিসাবের বাইরেও নিহত ও নিখোঁজের তালিকায় রয়েছেন বহু বাংলাদেশি।
বাংলাদেশের জীবন যাত্রার মান অনেক ক্ষেত্রেই উন্নত নয়। এদেশে বেয়াকার সমস্যা প্রকট রুপ ধারন করছে দিন দিন।এর থেকে জন্ম নিচ্ছে হতাশা, মানুষ ঝুঁকি নিয়ে পাড়ি জমাচ্ছে বাইরের উন্নত দেশগুলোতে, উন্নত জীবন লাভের আশায়।
তবে এ অবস্থা থেকে পরিত্রান প্রয়োজন। এজন্য অবৈধ ভাবে এদের দেশ ছাড়ার প্রবনতা কমাতে হবে। বাড়াতে হবে সচেতনতা। ভিসা প্রক্রিয়া সহজ এবং দুর্নীতি মুক্ত করতে পারলেও এ অবস্থা থেকে কিছুটা মুক্তি পাওয়া যেতে পারে।
অনলাইন বাংলা নিউজ বিডি :/ ও এস
Leave a Reply