
তথ্যপ্রযুক্তি খাতে বাংলাদেশ আরও অনেক আগেই সাফল্য অর্জন করতে পারতো। কিন্তু কেন পারলো না, মনে সে প্রশ্ন জাগাই স্বাভাবিক। চলুন পেছন ফিরে দেখা যাক। দক্ষিণ এশিয়ায় যখন সাবমেরিন ক্যাবল আসে তখন বাংলাদেশকে বিনে পয়সায় এর সাথে যুক্ত হওয়ার প্রস্তাব এসেছিলো। ১৯৯১ সালে একবার ও ১৯৯৪ সালে আরেকবার এ প্রস্তাব এসেছিলো। রাষ্ট্রক্ষমতায় তখন বিএনপি। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া হাস্যকর এক যুক্তিতে এই প্রস্তাবকে দু’বারই ‘না’ করে দেন। তিনি বলেন, ‘সমুদ্রের তলদেশের হাঙ্গরের পেটে করে বাংলাদেশের সব তথ্য বিদেশে পাচার হয়ে যাবে, তাই এই সংযোগ নেয়া যাবে না’।
তার এই খামখেয়ালিপনা ও মূর্খতার খেসারত বাংলাদেশকে দিতে হয়েছে দীর্ঘকাল। সারাবিশ্ব যেখানে ’৯০ দশকেই ইন্টারনেট জগতে পুরোপুরি প্রবেশ করেছে, সেখানে বাংলাদেশ আরো অনেক পরে মোবাইল ইন্টারনেট যুগে প্রবেশ করে। এছাড়াও বিএনপি সরকারের শেষদিকে মোবাইল কোম্পানী ও মোবাইল ফোন ব্যবসার একচ্ছত্র আধিপত্য তুলে দেয়া হয় অনুগত লোকদের। ফলে মোবাইল বিলাসী পণ্যই থেকে যায় জনসাধারণের কাছে। ’৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে এই ব্যবসা তুলে দেয়। ফলে জনগণের হাতে হাতে মোবাইল ফোন চলে যায়।
২০০৮ সালে ডিজিটাল বাংলাদেশ গঠনের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্ষমতায় আসে আওয়ামী লীগ। আজ বাংলাদেশ সত্যিকার অর্থেই ডিজিটাল বাংলাদেশে পরিণত হয়েছে। ঘরে বসেই পাওয়া যাচ্ছে বিভিন্ন সেবা। দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের জনগণ ইন্টারনেটের সুবাদে আধুনিক জীবনযাত্রার সুবিধা ভোগ করছে। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষিসহ সকল ক্ষেত্রে অভাবনীয় উন্নতি সাধন করেছে বাংলাদেশ। এমন অনেক কিছুই হয়েছে, যা কেউ ভাবেনি আগে।
সবচেয়ে মজার ব্যাপার হচ্ছে, ডিজিটাল বাংলাদেশের ঘোর বিরোধী বিএনপি-জামায়াত জোটও এর সুবিধা ভোগ করতে ভুল করছে না। এদের সকল নেতাকর্মীই ‘বদলে যাওয়া বাংলাদেশের’ তথ্যপ্রযুক্তির অগ্রযাত্রাকে নিজেদের প্রতিদিনের কাজে লাগাচ্ছেন। বাদ যাচ্ছেন না বিদেশে পলাতক দণ্ডিত আসামী তারেক জিয়াও।
ডিজিটাল বাংলাদেশের সুবাদেই বিদেশে বসে তারেক বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশীদের সাক্ষাৎকার নিচ্ছেন। আইনের চোখে এটি অপরাধ কিনা, তা অবশ্যই সংশ্লিষ্টরা দেখবেন। কিন্তু বিএনপি-জামায়াত যে আওয়ামী লীগের ডিজিটাল বাংলাদেশের বাস্তবতাকে শতভাগ মেনে নিয়েছে, সেকথা তাদের স্বীকার করতে আর আপত্তি আছে কি!
অনলাইন বাংলা নিউজ বিডি:/আমিরুল ইসলাম
Leave a Reply