গতকাল, শনিবার শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে অতর্কিত হামলা করা হয় অধ্যাপক মুহাম্মদ জাফর ইকবালের উপর। সেই হামলাকারী তরুণ তৎক্ষণাত ধরা পড়েছেন। শনিবার বিকালে ক্যাম্পাসের মুক্তমঞ্চে এই হামলার পরপরই ওই তরুণকে ধরে ফেলা হয় বলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন।
ওই তরুণকে বেদম পেটানোর পর বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবন-২ এ আটকে রাখা হয়েছে। এখনও তার পরিচয় পাওয়া যায়নি বলে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ ইলিয়াস উদ্দিন বিশ্বাস জানিয়েছেন। ইলেট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে ফেস্টিভ্যাল চলছিল ক্যাম্পাসের মুক্তমঞ্চে। এই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন অধ্যাপক জাফর ইকবাল; সেখানেই তার উপর হামলা হয়। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী এক শিক্ষার্থী বলেন, “বিকাল ৫টায় মঞ্চে ওঠার সময় পেছন থেকে ছুরি দিয়ে মাথায় আঘাত করা হয়।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর জহির উদ্দিন আহমেদ বলেন, “মঞ্চের পেছন থেকে এসে এক ছেলে ছুরি মারে গলা, বুক ও মুখের দিকে। সঙ্গে সঙ্গে পুলিশসহ অন্যরা তাকে আটক করে।” কী কারণে ওই তরুণ জাফর ইকবালের উপর হামলা করেছেন, সে বিষয়ে কিছু তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি। তবে উল্লেখ্য, সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ে র্যাগিং নিয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছিলেন জাফর ইকবাল। র্যাগিংয়ের দায়ে পাঁচ ছাত্রের শাস্তি দেওয়া হলে তিনি বলেছিলেন, এদের শাস্তির পরিমাণ কম হয়েছে, তাদের পুলিশে দেওয়া উচিৎ। আবার এর পেছনে জঙ্গিদের হাত থাকতে পারে বলেও সন্দেহ রয়েছে কোনো কোনো শিক্ষার্থীর। জাফর ইকবাল বরাবরই জঙ্গিবাদ ও সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে উচ্চকণ্ঠ।
এদিকে মাথায় জখম অবস্থায় জাফর ইকবালকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। এরপর সেখান থেকে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে তাঁকে ঢাকায় নিয়ে আসার ব্যবস্থা করা হয়। হামলার পর রক্তক্ষরণ হলেও তিনি কথা বলছিলেন বলে প্রত্যক্ষদর্শী শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন। হামলার পর শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ শুরু করেছেন।
জাফর ইকবাল শুধু শাহাজালাল বিজ্ঞান ইউনিভার্সিটির একজন অধ্যাপকই নন, তিনি খ্যাতনামা শিক্ষাবিদ, দেশে ও দেশের বাইরে সাহিত্য অঙ্গনেও রয়েছে তাঁর অগাধ বিচরণ। কিশোরদের জন্য রচনা করেছেন অসাধারণ সব গল্প-উপন্যাস। তাঁর উপর এই হামলা জাতির জন্য দুঃখজনক।
অনলাইন বাংলা নিউজ বিডি :/ এস এস
Leave a Reply