
গতকাল শনিবার ঢাবির রেজিস্টার ভবনের সামনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) দুই শিক্ষার্থীকে বিশ্ববিদ্যালয়েরই কিছু শিক্ষার্থী মারধর করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এই ঘটনায় তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এরা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, মারধরে জড়িত বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষা বিজ্ঞান বিভাগের তাহমীল হাসান, ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের আরাফাত হোসাইন অভি, সমাজকল্যাণ ইনস্টিটিউটের জীম। এই তিনজন প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী। এ ছাড়া উইমেন অ্যান্ড জেন্ডার স্টাডিজের সিফাত উল্লাহ ও শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের পলাশ এ ঘটনা জড়িত। এ দুইজন দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। অভিযুক্তরা সবাই মাস্টার দ্য সূর্যসেন হল ছাত্রলীগের কর্মী বলে জানা গেছে।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী পলাশ ঘটনা জানেন না বলে জানান। তবে হল ছাত্রলীগের এক এক নেতা জানান, সিফাত উল্লাহ ঘটনাস্থলে ছিলেন।
প্রত্যক্ষদর্শী ও ভুক্তভোগীরা জানান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের ছাত্র আসাদুজ্জামান ও একই বিভাগের একই বর্ষের ছাত্রী লীনা শনিবার বিকেল ৫টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের (রেজিস্টার বিল্ডিং) সামনে দাঁড়িয়েছিলেন। তারা একটি রিকশা ডাকছিলেন কার্জন হলের যাওয়ার জন্য। এ সমন সময় ১০-১২ ছাত্র তাদের সামনে এসে দাঁড়ায়। ওই দুই শিক্ষার্থী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী কিনা তা জানতে চান ও প্রমাণস্বরূপ আইডি কার্ড দেখাতে বলেন। ওই দুই শিক্ষার্থী তাদের আইডি কার্ড দেখান। তা সত্ত্বেও একাধিক শিক্ষার্থী আসাদুজ্জামানকে মারধর করেন। এসময় তার সঙ্গে থাকা লীনা তাকে রক্ষা করতে গেলে তাকেও মারধর করা হয়।
ভুক্তভোগীরা জানান, মারধর করে সূর্যসেন হলের ভেতরে প্রবেশ করেন মারধরকারীরা। এসময় মারধরের শিকার আসাদ্জ্জুামানও প্রবেশ করেন এবং কারণ জানতে চান। এই পর্যায়ে ওই শিক্ষার্থীকে ক্রিকেট স্ট্যাম্প দিয়ে মারধর শুরু করা হয়। তার সঙ্গে থাকা ছাত্রী লীনা রক্ষা করতে গেলে তাকেও স্ট্যাম্প দিয়ে আঘাত করা হয়। এক পর্যায়ে ওই ছাত্রীর পায়ের বুড়ো আঙুলের নখ উঠে যায়।
পরে রাত পৌনে ১০টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় সূর্যসেন হলের প্রাধ্যক্ষ (প্রভোস্ট) অধ্যাপক এএসএম মাকসুদ কামাল এসে ভুক্তভোগীদের বক্তব্য শোনেন। তিনি ভুক্তভোগীদেরকে ঘটনার বিবরণ দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর বরাবর একটি দরখাস্ত লিখতে বলেন। আহত ওই দুই শিক্ষার্থীকে তিনি হলে পৌঁছানোর ব্যবস্থা করেন এবং তাদের চিকিৎসারও বন্দোবস্ত করেন।
মারধরের শিকার ছাত্রী লীনা বলেন, ‘আমাদের ক্যাম্পাসে আমাদের কেন মারা হলো শুধু সেটুকু জানতে চাই।’ তিনি বলেন, ‘বিনা কারণে প্রথম ও দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্ররা আমাদের মারল। কেন মারল, আমাদের ক্যাম্পাসে আমাদের নিরাপত্তা কোথায়?’
এ বিষয়ে অধ্যাপক মাকসুদ কামাল সাংবাদিকদের বলেন, ‘এই ঘটনায় তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। কমিটি সাত দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দেবে।
প্রাচ্যের অক্সফোর্ড খ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মেধাবী শিক্ষার্থীরা এসে ভর্তি হয় এখানে। এই মেধাবী শিক্ষারথীদেরই একাংশ হয়তো জড়িয়ে পড়ে বিভিন্ন অনৈতিক কাজে। যাতে ভুক্তভোগী হয় সাধারন শিক্ষার্থী।
এটি মোটেও কাম্য নয়। ভবিষ্যতে এ অবস্থা থেকে উত্তরনের জন্যে এদেরকে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।
অনলাইন বাংলা নিউজ বিডি :/ এম ইউ
Leave a Reply