ঘূর্ণিঝড় ফণীর প্রভাব কাটতে না কাটতেই বৈশাখের খরতাপে পুড়ছে দেশ। যশোর ও রাজশাহী অঞ্চলের উপর দিয়ে এখন বয়ে যাচ্ছে মাঝারি ধরণের তাপপ্রবাহ। প্রচণ্ড তাপদাহে জনজীবন যেমন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে, তেমনি রোজাদাররাও পড়েছেন বেকায়দায়। আর আর মাঠের পাকা ধান ঘরে তুলতেও হিমশিম খাচ্ছেন কৃষকেরা।
দেশের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে বয়ে চলা মৌসুমের দ্বিতীয় তাপপ্রবাহে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ফের ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ঘর ছুঁতে চাইছে।
যশোর বিমান বাহিনীর আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার যশোরে সর্বোচ্চ ৩৮ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। বুধবারও যশোরে একই তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল। যা ছিল দেশের সর্বোচ্চ।
আর আবহাওয়া অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, যশোরের বৃহস্পতিবারের তাপমাত্রাকে ছাড়িয়ে গেছে এই অঞ্চলের চুয়াডাঙ্গা ও উত্তরবঙ্গের রাজশাহী। এদিন চুয়াডাঙ্গায় সর্বোচ্চ ৩৯ দশমিক ২ এবং রাজশাহী ৩৯ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে।
ঘূর্ণিঝড় ফণী আসার আগে গত ২৯ এপ্রিল রাজশাহীতে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৯ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস; এ মৌসুমে এটাই দেশের সর্বোচ্চ।
আবহাওয়াবিদরা ৩৬ থেকে ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রাকে ‘মৃদু’, ৩৮ থেকে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসকে ‘মাঝারি’ এবং ৪০ ডিগ্রি ছাড়িয়ে গেলে তাকে তীব্র তাপপ্রবাহ হিসেবে বিবেচনা করেন।
সেই হিসাবে গত চার দিন ধরে দেশে মৃদু থেকে মাঝারি মাত্রার তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে বলে জানান আবহাওয়াবিদ রুহুল কুদ্দুস। তিনি বলেন, ঢাকা, রাজশাহী, খুলনা বিভাগে তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। শুক্রবারও এটা অব্যাহত থাকতে পারে। সেই সঙ্গে রংপুর, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের দুয়েক জায়গায় বৃষ্টি-বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।
বৃষ্টিহীন বৈশাখে বিরাজমান অস্বস্তিকর গরম আরও অন্তত কয়েকদিন থাকবে। তবে বঙ্গোপসাগরে এখনই কোনো নিম্নচাপের পরিস্থিতি তৈরি হয়নি বলে জানান এ আবহাওয়াবিদ।
চলতি মে মাসের দীর্ঘমেয়াদী পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, এ মাসে উত্তর ও উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে একটি তীব্র তাপপ্রবাহ (৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের উপরে) এবং অন্যত্র ১-২টি মৃদু তাপপ্রবাহ (৩৬-৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস) বা মাঝারি তাপপ্রবাহ (৩৮-৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস) বয়ে যেতে পারে।
সেই সঙ্গে দেশের উত্তর থেকে মধ্যাঞ্চলে ২-৩ দিন মাঝারি/তীব্র কালবৈশাখী এবং দেশের অন্যত্র ৩-৪ দিন হালকা/মাঝারি কালবৈশাখী হতে পারে। এ সময় শিলা বৃষ্টি হওয়ারও সম্ভাবনা রয়েছে।
সূত্র জানায়, এপ্রিলের শেষ সপ্তাহে কয়েকদিনের তাপদাহের পর ঘূর্ণিঝড় ফণী’র প্রভাবে আবহাওয়া শীতল হয়ে এসেছিল। কিন্তু ফণীর প্রভাব কাটতে না কাটতেই আবারও শুরু হয়েছে তাপদাহ। প্রচন্ড এই তাপপ্রবাহের কারণে মাঠের পাকা ধান ঘরে তুলতে সমস্যা হচ্ছে কৃষকের। অল্পতেই অতিরিক্ত ঘেমে ক্লান্ত হয়ে পড়ছেন তারা। তার মধ্যে আবার চলছে রমজান মাস। প্রচ- গরম রোজাদারদেরও ফেলেছে বেকায়দায়।
এদিকে, রমজানে তৃষ্ণার্ত রোজাদাররা অনেকেই সন্ধ্যার পর ডাবের পানি, লেবুর সরবত ও তরমুজের মতো ফল খেয়ে শরীর শীতল করার চেষ্টা করছেন। শহরের মোড়ে মোড়ে আর ফুটপাতের খোলা জায়গায় সন্ধ্যার পর ঠান্ডা পানির লেবুর শরবতের অস্থায়ী দোকান বসছে।
অনলাইন বাংলা নিউজ বিডি:/আমিরুল ইসলাম
খবরটি যদি গুরুত্বপুর্ন মনে হয় তাহলে লাইক, কমেন্টস, শেয়ার করুন
Leave a Reply