শনিবার ভোর থেকে বিশ্ব ইজতেমায় আধিপত্য নিয়ে তাবলিগ জামাতের দুই পক্ষ মুখোমুখি অবস্থান নেয়। পরে তা সংঘর্ষে রূপ নেয়। টঙ্গীতে ইজতেমা ময়দানের ১ নম্বর প্রবেশ ফটকে দুই পক্ষের পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও সংঘর্ষে ৫০ থেকে ৬০ জন আহত হন।
এই সংঘর্ষে এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। নিহত ব্যক্তির নাম ইসমাইল মণ্ডল (৬৫)। বাড়ি মুন্সিগঞ্জে। শনিবার সকালে ছেলে জাহিদ হাসানের সঙ্গে তিনি টঙ্গী এসেছিলেন।
আহতদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা গুরুতর। আহত লোকজনকে টঙ্গী সরকারি হাসপাতাল ও উত্তরার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত গাজীপুর পুলিশের গোয়েন্দা শাখা–ডিবির পরিদর্শক এ কে এম কাওসার চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, এখন পর্যন্ত একজনের মৃত্যুর খবর পেয়েছেন। নিহত ব্যক্তির মাথায় আঘাত রয়েছে। ধারালো কিছু বা বাঁশজাতীয় কোনো লাঠি দিয়ে আঘাত করা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ভোরে বিশ্ব ইজতেমা পরিচালনাসংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে তাবলিগ জামাতের দুই পক্ষ মুখোমুখি অবস্থান নেয়। মাওলানা জুবায়ের ও দিল্লির মাওলানা সাদের অনুসারী দুই পক্ষের হাজার হাজার মুসল্লি পৃথকভাবে টঙ্গীতে ইজতেমা ময়দান ও ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক ও আবদুল্লাহপুর থেকে কামারপাড়া হয়ে আশুলিয়ার দিকে সড়কে অবস্থান নেন।
নিহত ইসমাইলের ছেলে জাহিদ হাসান বলেন, তাঁর বাবা আলুর ব্যবসা করতেন। জাহিদ হাসানের সঙ্গে আজ সকালে তিনি টঙ্গী আসেন। তাঁর বাবা সাদপন্থী। সাদবিরোধীরা মাঠে অবস্থান করছিলেন। এ সময় সাদপন্থীরা মাঠে ঢোকার চেষ্টা করছিলেন। ধাক্কাধাক্কির সময় তাঁর বাবা সামনে ছিলেন। তাঁর মাথায় আঘাত লেগেছিল। সাদবিরোধীরা ধারালো কিছু দিয়ে আঘাত করেন তাঁকে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বেলা সাড়ে ১১টার দিকে কামারপাড়া থেকে একদল মুসল্লি লাঠিসোঁটা হাতে ইজতেমা ময়দানের ১ নম্বর প্রবেশদ্বারে প্রতিপক্ষের অনুসারীদের ওপর হামলা চালান। মুহূর্তের মধ্যে স্থানটি রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। আধা ঘণ্টা পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও সংঘর্ষ চলার পর পুলিশের হস্তক্ষেপে তা নিয়ন্ত্রণে আসে।
দুই পক্ষের বিরোধিতার কারণে আসছে বছরের বিশ্ব ইজতেমা স্থগিত ঘোষণা করে সরকার। ১৫ নভেম্বর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় তাবলিগ জামাতের বিবদমান দুই পক্ষ ছাড়াও পুলিশের আইজি, ধর্মসচিবসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন। আগামী জানুয়ারিতে বিশ্ব ইজতেমা হওয়ার কথা ছিল।
ধর্ম মানুষের শান্তির জন্য। সেখানে এই ধর্ম নিয়ে এমন ঘটনা অনাকাঙ্ক্ষিত এবং লজ্জাজনক। আমাদের এমন আদি বর্বর আচরণ থেকে বেরিয়ে আসা উচিৎ।
অনলাইন বাংলা নিউজ বিডি :/ সাহাজুল ইসলাম
Leave a Reply