ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানোর কর্মসূচি সরকার আকস্মিকভাবে স্থগিত করেছে ক্যাপসুলের মান নিম্নমানের হওয়ার অভিযোগে। সারা দেশে ২ কোটি ২০ লাখ শিশুকে এই ক্যাপসুল খাওয়ানোর কথা ছিল আগামীকাল শনিবার।
দুটি পৃথক কমিটি গঠন করেছে সরকার এই ঘটনা তদন্তে।
ভিটামিন এ ক্যাপসুল খাওয়ানোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছিল গত সপ্তাহে। এরপর ভিটামিন এ ক্যাপসুল পাঠানো হয় দেশের বিভিন্ন এলাকায়। ক্যাপসুলের মান নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মাঠপর্যায়ের কর্মী ও কর্মকর্তারা। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরকে তাঁরা ঘটনাটি জানান। এরপর গত বুধবার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এই কর্মসূচি স্থগিতের ঘোষণা দেয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি জেলার সংশ্লিষ্ট একজন কর্মকর্তা বলেন, তাঁরা ছত্রাক দেখতে পেয়েছেন ক্যাপসুলে। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে পরে বিষয়টি জানানো হয়।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবুল কালাম আজাদ গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে ভিটামিন এ ক্যাপসুল খাওয়ানোর কর্মসূচি স্থগিতের বিষয়টি নিশ্চিত করেন। স্থগিতের কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ক্যাপসুল জোড়া লাগানো দেখা গেছে কয়েকটি জায়গায়। এ জন্য কর্মকর্তারা আর কোনো ঝুঁকি নিতে চাননি। তাই আপাতত স্থগিত করা হয়েছে ক্যাপসুল খাওয়ানো।
মহাপরিচালক আবুল কালাম আজাদ প্রথম বলেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এই ঘটনায় দুটি পৃথক তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। বিজ্ঞানীরাও রয়েছেন এই কমিটিতে। এর মান খারাপ ছিল কি না ক্যাপসুল পরীক্ষা করার পর বলা যাবে।
স্বাস্থ্যকর্মী ও স্বেচ্ছাসেবকদের আগামীকাল শনিবার সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত শিশুদের ভিটামিন এ ক্যাপসুল খাওয়ানোর কথা ছিল। স্থায়ী টিকা কেন্দ্র ছাড়াও বাসস্ট্যান্ড, বিমানবন্দর, ব্রিজের টোল প্লাজা, লঞ্চঘাট, ফেরিঘাট, রেলস্টেশন, খেয়াঘাটসহ বিভিন্ন স্থানে ও ভ্রাম্যমাণ কেন্দ্রে শিশুদের ভিটামিন এ খাওয়ানোর কথা।
সাংসদ ও ঢাকা শিশু হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক মো. আবদুল আজিজ কর্মসূচি স্থগিত করায় সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন । তিনি বলেন, ‘শিশুদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম। কোনো ঝুঁকি নেওয়া উচিত না। তদন্তে কোনো ত্রুটি ধরা পড়লে সংশ্লিষ্টদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হবে এটাই প্রত্যাশা।’
৬-১১ মাস বয়সী ২৫ লাখ শিশুকে এবং ১২-৫৯ মাস বয়সী ১ কোটি ৯৫ লাখ শিশুকে জাতীয় পুষ্টি কর্মসূচির আওতায় যথাক্রমে নীল ও লাল রঙের ক্যাপসুল খাওয়ানো হয়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পুষ্টি কর্মসূচির একজন কর্মকর্তা গত রাতে জানিয়েছেন, সমস্যা পাওয়া গেছে লাল রঙের ক্যাপসুলগুলোতেই। সারা দেশের প্রায় ৩০ শতাংশ এলাকা থেকে এই সমস্যার কথা কেন্দ্রকে জানানো হয়েছে।
অনলাইন বাংলা নিউজ বিডি:/আমিরুল ইসলাম
Leave a Reply