
জাতীয় নির্বাচন দরজায় কড়া নাড়ছে। এটিকে সামনে রেখে ইতোমধ্যেই শুরু হয়ে গেছে দলগুলো প্রচার প্রচারণা এবং পরস্পর বিরোধী বাকযুদ্ধ।
নির্বাচন বিষয়ে আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের অনেকে মনে করছেন, বিএনপি বুঝে গেছে, নিরপেক্ষ নির্বাচনকালীন সরকারসহ তাদের অন্য দাবিগুলো বাস্তবায়ন হবে না। তফসিল ঘোষণার মাসখানেক বাকি। এর মধ্যে ১০ অক্টোবর ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার রায়ের দিন ধার্য আছে। এই মামলায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সাজা হতে পারে। এই অবস্থায় অল্প সময়ের মধ্যে বিএনপিসহ অন্যান্য বিরোধী দলকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ অথবা বর্জনের সিদ্ধান্ত নিতে হবে। এ সিদ্ধান্ত নিতে গিয়ে তারা দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়বে। কেউ নির্বাচনে আসার আগ্রহ দেখাবে, কেউ বর্জনের ঘোষণা দিয়ে প্রতিহত করতে চাইতে পারে। এই ক্ষেত্রে নির্বাচনে অংশগ্রহণে আগ্রহী অংশকে দিয়ে দল বা জোট ভাঙার চেষ্টা থাকবে এবং তাতে সফল হলে তাদের সঙ্গে আসন সমঝোতাসহ প্রয়োজনীয় সবই করবে আওয়ামী লীগ।
আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল সূত্র বলছে, বিরোধীদের মধ্যে নির্বাচনে অংশ নিতে আগ্রহী অংশটা মনে করছে, সরকার শেষ পর্যন্ত কিছুটা হলেও ছাড় দেবে। তবে তারা এখনো দ্বিধাগ্রস্ত। অন্য অংশ মনে করছে, আওয়ামী লীগের ছক মেনে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার অর্থ বিরোধী দলের আসনে বসা এবং নির্বাচনের বৈধতা দেওয়া। তবে সরকারি দলের নীতিনির্ধারকেরা মনে করছেন, কোনো কারণে বিএনপির কট্টর অংশ নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিলে তাদের ঘায়েল করা কঠিন হবে না।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও ১৪ দলের মুখপাত্র মোহাম্মদ নাসিম বলেন, বিএনপি এবার নির্বাচন বর্জন করলে দলের ভেতরেই ব্যাপক প্রতিক্রিয়া হবে। তারা সেই পথে হাঁটবে না বলে মনে হয়। আর বিএনপি জোট ২০১৪ সালে নির্বাচন বানচাল করতে পারেনি। আগামী নির্বাচনেও পারবে না। সরকার, আওয়ামী লীগ ও ১৪-দলীয় জোটের সেই প্রস্তুতি আছে। তিনি জানান, তফসিল ঘোষণার আগ পর্যন্ত আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে ১৪ দল সভা-সমাবেশ কর্মসূচি নিয়ে মাঠ দখলে রাখবে। তফসিল ঘোষণার পর প্রচার কৌশলে পরিবর্তন আসবে।
জানা গেছে, আওয়ামী লীগ ও ১৪ দল তফসিল ঘোষণা পর্যন্ত গণসংযোগ ও সভা-সমাবেশের টানা কর্মসূচি পালন করবে। এর বড় লক্ষ্য হচ্ছে বিরোধীদের চাপে রাখা, নিজেদের নেতা-কর্মীদের চাঙা রাখা এবং সরকারের উন্নয়নমূলক কাজের প্রচার করা।
আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, এখন দুটি বিষয় বিবেচনায় নিয়ে এগোচ্ছে সরকার ও আওয়ামী লীগ। প্রথমটি হচ্ছে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার রায়। ১০ অক্টোবর এই রায়ের দিন ধার্য আছে। এই মামলায় তারেক রহমানের নিশ্চিত সাজা ধরে রেখেছে আওয়ামী লীগ। আর সাজা হলে বিএনপি মাঠে নামার চেষ্টা করতে পারে-এই চিন্তা থেকে গত সোমবার রাজধানীতে সপ্তাহব্যাপী গণসংযোগ কর্মসূচি শুরু করা হয়। প্রায় ১০ লাখ প্রচারপত্র ছেপে বিলি করা হচ্ছে। এতে সন্ত্রাস ও নৈরাজ্যের বিরুদ্ধে মানুষকে রুখে দাঁড়ানো এবং নৌকায় ভোট দেওয়ার আহ্বান রয়েছে।
অনলাইন বাংলা নিউজ বিডি :/ মোঃ মোস্তফা কামাল
Leave a Reply