
ভবিষ্যতের উন্নয়নের জন্যে অতীত ভুল থেকে শিক্ষা নিতে হয়। তা না করে, অতীতের সেই ভুলের পক্ষে সাফাই গাইলে অবনতির দিকে যেতে বাধ্য- হোক সে একজন মানুষ, জাতি, কিংবা গোটা একটি দেশ।
পাকিস্তান হয়তো সেই পথেই হাঁটছে। সন্ত্রাসে আর্থিক মদতদাতা দেশ হিসেবে ফের পাকিস্তানের নাম উঠে আসছে বৈশ্বিক অর্থ পাচার পর্যবেক্ষণ সংস্থা ফিনান্সিয়াল অ্যাকশন টাস্ক ফোর্সের (এফএটিএফ) তালিকায়। যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি এক কর্মকর্তা ও একজন কূটনীতিক শুক্রবার একথা জানিয়েছেন।
এফএটিএফের পাকিস্তানকে তালিকাভুক্তি করার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলার বিষয়টি নিশ্চিত করে জানিয়েছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই কূটনীতিক। খবর রয়টার্সের। এতে পাকিস্তানের অর্থনীতিতে বড় আঘাত আসবে বলে মনে করা হচ্ছে। দেশটির যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রেও যে টানাপোড়েন চলছে, সেটা আরও অবনতির দিকে যাবে। তালিকাভুক্তির আগে পাকিস্তানকে সন্ত্রাসে অর্থায়ন না করার তথ্যপ্রমাণ হাজির করে নজরদারি গোষ্ঠীকে আশ্বস্ত করার জন্য তিনমাস সময় দেয়া হয়েছিল। এর কয়েকদিন পরই নতুন এ খবর এসেছে।
পাকিস্তানকে এফএটিএফের তালিকায় রাখতে গত সপ্তাহে জোর চেষ্টা চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। সন্ত্রাসে অর্থায়নের ব্যাপারে সংস্থাটির বিধিবিধান না মানলে পাকিস্তানকে কালো তালিকাভুক্ত করার জন্য প্রচার চালায় যুক্তরাষ্ট্র। অন্যদিকে, পাকিস্তানও তালিকাভুক্তি এড়াতে শেষ মুহূর্তের প্রচার চালায়। কিন্তু তাতে লাভ হয়নি। শেষ পর্যন্ত বৃহস্পতিবার দিনশেষেই পাকিস্তানকে ফের তালিকাভুক্ত করার সিদ্ধান্ত নেয় এফএটিএফ। পাকিস্তানের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও সংশ্লিষ্ট এক কূটনীতিক একথা জানিয়েছেন।
এ সপ্তাহের শুরুর দিকে চীন, তুরস্ক ও উপসাগরীয় সহযোগিতা পরিষদ (জিসিসি) এ তালিকাভুক্তির বিরোধিতা করে পাকিস্তানকে বাঁচিয়েছে। কিন্তু বৃহস্পতিবার চীন ও জিসিসিও বিরোধিতা করা থেকে সরে আসে। এরপরই এফএটিএফের সিদ্ধান্ত হয়েছে। শুক্রবার এ সংক্রান্ত ঘোষণা আসার কথা থাকলেও পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় খবরটি নিশ্চিত বা অস্বীকার কোনোটিই করেনি। আবার যুক্তরাষ্ট্র এবং ভারতের কর্মকর্তারাও বলছেন, সিদ্ধান্তটি চূড়ান্ত কিনা, তা তারা এখনই বলতে পারছেন না। পাকিস্তান এর আগে ২০১৫ সাল পর্যন্ত তিন বছর এফএটিএফ এর নজরদারি তালিকায় ছিল। এ সংস্থা বিভিন্ন দেশের সন্ত্রাসে অর্থায়ন ও মুদ্রা পাচারের ওপর নজর রাখে। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি এলিস ওয়েলস বলেন, হাফিজ সাঈদের বিরুদ্ধে পাকিস্তান যথেষ্ট ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থ হওয়ায় দেশটিকে এফএটিএফের অংশত নজরদারি তালিকায় রাখতে যুক্তরাষ্ট্র চেষ্টা চালিয়েছে। যখন আমরা দেখি, হাফিজ সাঈদের মতো লোক গৃহবন্দীত্ব থেকে মুক্তি পেয়েছেন। তখন তা আমাদের মাঝে উদ্বেগ তৈরি না করে পারে না।
যুক্তরাষ্ট্র, তথা পুরো বহির্বিশ্বের সঙ্গেই এই তালিকাভুক্তির জন্য পাকিস্তানের সম্পর্ক অবনতি ঘটবে। এখন দেখার, পাকিস্তান কালো তালিকা থেকে সরে আসতে দেশের ভেতর কী উদ্যোগ গ্রহন করে।
অনলাইন বাংলা নিউজ বিডি :/ এস এস
Leave a Reply