বিভিন্ন দেশে নিয়োজিত বাংলাদেশি দূতদের উদ্দেশে তিনি বলেছেন, “আপনারা স্যুটেড-ব্যুটেড হয়ে নিয়মমাফিক দায়িত্ব পালনের মধ্য দিয়ে মিশন পরিচালনা করতে পারেন, আবার প্রচলিত প্রথার বাইরেও নিজ উদ্যোগে সৃজনশীলভাবে দেশকে উপস্থাপন করতে পারেন। দেশের কৃষ্টি, ঐতিহ্য, পোশাক, খাদ্য জীবনাচারের পাশাপাশি আমাদের সমৃদ্ধ লোকসংস্কৃতিও বিশ্বে তুলে ধরতে পারেন।”
‘দূত সম্মেলন’ এ অংশগ্রহণকারীরা মঙ্গলবার বঙ্গভবনে দেখা করতে গেলে তাদের একথা বলেন আবদুল হামিদ।
রোববার রাজধানীতে প্রথমবারের মতো শুরু হওয়া এই সম্মেলন উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিন দিনের এই দূত সম্মেলনে ৫৮টি দেশে কর্মরত কূটনীতিকরা অংশ নিচ্ছেন।
রাষ্ট্রদূতদের কাজের গুরুত্ব তুলে ধরে রাষ্ট্রপতি বলেন, “বিদেশে প্রতিটি চ্যান্সেরি এক একটি বাংলাদেশ। বিশ্বে বাংলাদেশকে তুলে ধরতে তাই আপনাদের ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আপনাদের কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে দেশের সাথে বন্ধুপ্রতীম দেশসমূহ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ও সংস্থার সাথে যেমন ভালো সম্পর্ক স্থাপিত হয়, তেমনি দেশের ভাবমূর্তি ও অর্জন আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে প্রতিফলিত হয়।
“আপনাদের কর্মকাণ্ড পেশাদারিত্বসুলভ না হলে তা কেবল দেশের ভাবমূর্তিকেই ক্ষুণ্ণ করে না, আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও তা দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। যা কোনোভাবেই কাম্য নয়।”
রবাসী বাংলাদেশিরা যাতে কোনো ধরনের হয়রানির শিকার না হয়, সেদিকে লক্ষ্য রাখতেও রাষ্ট্রদূতদের আহ্বান জানান আবদুল হামিদ।
বিদেশি বিনিয়োগ বাড়াতে রাষ্ট্রদূতদের উদ্যোগ নেওয়ার পরামর্শ দেন রাষ্ট্রপতি। তিনি বলেন, “আমাদের আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য ক্রমশ সম্প্রসারিত হচ্ছে। রপ্তানির ক্ষেত্রে সে সব পণ্যের উজ্জ্বল সম্ভাবনা রয়েছে, তা চিহ্নিত করে বাজার সম্প্রসারণে কাজ করে যেতে হবে। দেশীয় শিল্পের অনেক কাঁচামাল ও যন্ত্রপাতি বিদেশ থেকে আনতে হয়। রপ্তানি সম্প্রসারণের পাশাপাশি আমদানি সহজলভ্য ও সাশ্রয়ীকরণের বিষয়েও আপনাদের উদ্যোগী হতে হবে। বিনিয়োগ শিল্প ও কর্মসংস্থানের ভিত্তি। তাই জাতীয় স্বার্থে বিদেশী বিনিয়োগ বৃদ্ধিরও উদ্যোগ নিতে হবে।”
কূটনৈতিক মিশনগুলোতে জ্যেষ্ঠ ও নবাগতদের একত্রে কাজ করার কথাও মনে করিয়ে দেন রাষ্ট্রপতি। “আমাদের মিশনগুলোতে যেমন সিনিয়র কূটনীতিক রয়েছেন তেমনি আছেন নবাগত। নতুনরা সিনিয়রদের পরামর্শ ও উপদেশ নেবেন। আপনি তখনই সফল কূটনীতিক হবেন যখন দেশের স্বার্থ অর্জনে সফল হবেন। আপনারা বিশ্বের যে প্রান্তেই থাকুন আপনাদের, কর্ম ও চিন্তায় এ দেশের জনগণের কল্যাণকেই অগ্রাধিকার দিবেন।”
অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলী, পররাষ্ট্র সচিব শহীদুল হক উপস্থিত ছিলেন। পরে দূতদের সম্মানে বঙ্গভবনের দরবার হলে আয়োজিত নৈশভোজে অংশ নেন রাষ্ট্রপতি।
অনলাইন বাংলা নিউজ বিডিঃ / কাউসার।
Leave a Reply