
মিয়ানমারের রাখাইনে গ্রাম গুলোতে মুছে ফেলবার চেষ্টা করা হচ্ছে সকল অত্যাচার-নিপীড়নের চিহ্ন বুলডোজার চালানো হচ্ছে প্রতিদিনই গ্রাম গুলোতে।।আগুনে পোড়া ঘর-বাড়ি, ভেঙে ফেলা স্থাপনা, সবকিছু মিশিয়ে ফেলা হচ্ছে বুলডোজার দিয়ে মাটির সঙ্গে।
গত শুক্রবার জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থা বলে, স্যাটেলাইটে ধারন করা দৃশ্যে অন্তত ৫৫ টি গ্রামে এই বুলডোজারের তান্ডব দেখা যায়। গত বছরের ২৫ আগস্ট থেকে এই পর্যন্ত রোহিঙ্গা দের ৫৫ টি গ্রাম সহ মোট ৩৬২ টি গ্রাম পুরোপুরি কিংবা আংশিক ভাবে ধ্বংস করে ফেলে মিয়ানমার সেনাবাহিনী। তখন থেকে এ পর্যন্ত প্রাণ বাঁচাতে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা।
জাতিসংঘ অভিযোগ করে, রাখাইনে রোহিঙ্গাদের জাতিগত নির্মূলের চেষ্টা করা হচ্ছে। এতে প্রায় হাজার খানেক রোহিঙ্গা নিহত হয়েছে বলে আশংকা করা হয়। পালিয়ে আসা রোহিঙ্গার একজনের নাম রবিউল হাসান। তার বয়স ৩৫ বছর। যে সকল পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা টেকনাফ কক্সবাজার অঞ্চলে শিবিরে বসবাস করছে রবিউল তাদের একজন। তিনি বলেন, সারা দিন শুয়ে-বসেই কাটাতে হয়। তার ধারণা, এভাবেই কাটবে হয়তো বাকি জীবন।
রাখাইন থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা ফেরত দিতে মিয়ানমারের সাথে প্রত্যাবাসন চুক্তি সই হয় গত বছরের নভেম্বরে। কিন্তু এর পরও সেখান থেকে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ থামে নি। এসব আলোচনার মধ্যে রোহিঙ্গা আবু জামিল বলে ওঠেন, ‘কেন যাব? এখানে তো বেশ আছি।’ নিজ দেশে চায়ের দোকানে কাজ করতেন তিনি। সেই অভিজ্ঞতার জোরে কাজ পেয়েছেন বাংলাদেশের এক চায়ের দোকানে। অবশ্য এমন চিন্তা শুধু জামিলেরই নয়। বরং প্রত্যেকেই বলছেন, তারা বাংলাদেশে ভাল আছেন। ‘বাংলাদেশ সরকার পাঠালে যেতেই হবে। তবে সরকার যেন একটু চিন্তা করে, সেখানে গিয়ে আবার যেন নির্যাতনের মুখে পড়তে না হয়।’ একজন বললেন, ‘এখানে ভাতের কোনো কষ্ট নেই। তিন বেলাই ভাতের ব্যবস্থা রয়েছে।’
এনজিও কর্মীদের সাথে কথা বলেও জানা যায়, ত্রাণসামগ্রী কোনো অভাব নেই। কোনো কোনো ক্ষেত্রে প্রয়োজনের চেয়ে বেশিই আছে। এমনকি চাল, ডাল, চিনি, কম্বল ইত্যাদি সামগ্রী রোহিঙ্গারা বিক্রি করে দিচ্ছে স্থানীয়দের কাছে। বিষয়টি নিয়ে আপাতদৃষ্ট ভাববার কিছু না থাকলেও এর প্রভাব পড়ছে সুদূরপ্রসারী। এইসব রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী বাংলাদেশে তাদের প্রয়োজনের চেয়ে বেশি পাচ্ছে সবকিছু। খুব আরাম-আয়েশ না থাকলেও খাবার কষ্ট, নিরাপত্তার অভাব, মাথার উপর খোলা আকাশ, এসবও নেই।
সরকার চাইলেই এই বিশাল জনগোষ্ঠীকে কতটা ফেরত পাঠাতে পারবে, সে বিষয়ে নিশ্চিন্ত হওয়া যাচ্ছে না এখনই। অথচ বাংলাদেশের মতো ছোট্ট জনবহুল দেশে তারা ক্রমশই বিশাল বড় বোঝা হয়ে দাঁড়াচ্ছে, সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই।
অনলাইন বাংলা নিউজ বিডি :/ এস এস
Leave a Reply