
দুর্নীতির দায়ে পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরীফকে ১০ বছরের কারাদণ্ড এবং তার মেয়ে মরিয়ম শরিফকে সাত বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন দেশটির জবাবদিহি আদালত। পাশাপাশি নওয়াজকে ৮০ লাখ ব্রিটিশ পাউন্ড ও মরিয়মকে ২০ লাখ ব্রিটিশ পাউন্ড জরিমানা করা হয়। নওয়াজের বিরুদ্ধে বিচারাধীন চারটি মামলার একটির রায় ঘোষণায় এ আদেশ দেওয়া হয়। মামলাটিতে তার মালিকানায় লন্ডনের অভিজাত ভবনে অ্যাপার্টমেন্ট থাকার অভিযোগ করা হয়।
নওয়াজ শরীফ দেশে ফিরছেন। ধারণা করা হচ্ছে লাহোরে পৌঁছানোর আগে প্লেনেই গ্রেফতার হতে পারেন। জানা যায়, তারা লন্ডন থেকে লাহোরের পথে রয়েছেন এবং তাদের ফ্লাইটটি শুক্রবার (১৩ জুলাই) সকালে আবুধাবিতে অবতরণ করেছে। এই নাটকীয় গ্রেফতারের উদ্দেশে ইতোমধ্যে লাহোরে প্রায় ১০ হাজার পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
জানা যায়, ফ্লাইটটি পাকিস্তানের আকাশ সীমায় পৌঁছানোর সঙ্গে সঙ্গে যাতে নওয়াজ শরিফ ও তার মেয়েকে গ্রেফতার করা যায়, সেই উদ্দেশে পাকিস্তানের ন্যাশনাল অ্যাকাউন্টেবিলিটি ব্যুরোর একটি দল আবুধাবি রওনা হয়েছেন।
ধারণা করা হচ্ছে, পাকিস্তানের স্থানীয় সময় বিকেলের দিকে ফ্লাইটটি লাহোর বিমানবন্দর এসে পৌঁছাবে এবং সেখানে নওয়াজ শরিফ ও তার দলের হাজার হাজার সমর্থক ভিড় করতে পারেন।
কর্তৃপক্ষ জানায়, বিমানবন্দর থেকে নওয়াজ ও তার মেয়েকে কারাগারে নেওয়ার জন্য হেলিকপ্টারের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
আবুধাবি বিমানবন্দর থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে নওয়াজ বলেন, আমি জানি আমাকে সরাসরি কারাগারে নেওয়া হবে। আমার এই আত্মত্যাগ পাকিস্তানের জনগণ ও পরবর্তী প্রজন্মের জন্য। এমন সুযোগ আর আসবে না।
এদিকে একটি রিপোর্টে বলা হয়, লাহোরের স্থানীয় সময় বিকেল ৩টা থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত মোবাইল নেটওয়ার্ক বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে প্রশাসন। এছাড়াও টেলিভিশনে রাজনৈতিক সংবাদ পরিবেশনের ওপর আনা হয়েছে কঠোর সতর্কতা।
গত বছর পানামা পেপারস কেলেঙ্কারিতে জড়িত থাকার অভিযোগে প্রধানমন্ত্রীর পদ হারান নওয়াজ। পানামা পেপারস কেলেঙ্কারির মাধ্যমে নওয়াজ শরিফের সন্তানদের সঙ্গে অফশোর কোম্পানির যোগাসাজশ প্রকাশ হয়ে পড়ে। এই কোম্পানিগুলোর মাধ্যমেই আভেনফিল্ড হাউজে বিলাসবহুল অ্যাপার্টমেন্ট ক্রয়সহ বিভিন্ন খাতে অবৈধ উপায়ে অর্থ লেনদেন করার অভিযোগ ওঠে।
চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে নওয়াজ শরিফকে রাজনৈতিক দলের নেতৃত্ব দানের অযোগ্য ঘোষণা করেন পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্ট। এর ফলে নিজ দল পাকিস্তান মুসলিম লিগ (পিএমএল) প্রধানের পদ থেকেও তিনি চ্যুত হন।
দুর্নীতির অভিযোগে সাজা থেকে পার পাচ্ছেন না পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী, এ কথা জোর দিয়েই বলা যায়। অভিযুক্ত যত ক্ষমতাশালীই হোক না কেন, আইনের চোখে সব দোষীই সমান অপরাধী। পাকিস্তান এক্ষেত্রে অবশ্য একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে পেরেছে।
অনলাইন বাংলা নিউজ বিডি :/ এম ইউ
Leave a Reply