
দেশজুড়ে চলমান মাদকবিরোধী অভিযানের মধ্যে কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচর উপজেলার ছয় চিহ্নিত মাদক কারবারি পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করেছেন।
গত বৃহস্পতিবার বিকেলে কুলিয়ারচর মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ে তাঁরা আনুষ্ঠানিকভাবে আত্মসমর্পণ করে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার অঙ্গীকার করেন। পুলিশ কর্মকর্তা ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, জনসচেতনতা বাড়াতে বৃহস্পতিবার কুলিয়ারচর থানার পক্ষ থেকে মাদকবিরোধী আলোচনাসভার আয়োজন করা হয়। এ খবর জানতে পেরে ছয়জন মাদক কারবারি থানার এক কর্মকর্তার মাধ্যমে আত্মসমর্পণের ইচ্ছা প্রকাশ করেন। পরে আলোচনাসভায় তাঁদের উপস্থিত করা হয়।
এ সময় সভার প্রধান অতিথি জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) মো. শফিকুল ইসলাম তাঁদের কাছে জানতে চান, বিদ্যমান পরিস্থিতিতে গা বাঁচাতে তাঁরা এসেছেন নাকি সত্যিকার অর্থেই সংশোধনের জন্য আত্মসমর্পণ করছেন।
উত্তরে মাদক কারবারিরা বলেন, ভয়ে নয়, আত্মশুদ্ধির জন্য তাঁরা এসেছেন। স্বাভাবিক জীবনে ফেরার স্বপ্ন নিয়ে স্বেচ্ছায় তাঁরা সভায় উপস্থিত হয়েছেন। এ সময় পুলিশের পক্ষ থেকে তাঁদের জায়নামাজ, তসবি ও টুপি উপহার দেওয়া হয়।
আত্মসমর্পণকারীরা হলেন উপজেলার বাজরা মিয়াবাড়ির জহির উদ্দিন আহমেদ তাইনুস, চারারবনের সাইফুল ইসলাম, পূর্ব গাইলকাটার মোবারক হোসেন, কামালিয়াকান্দির মো. শহীদুল ইসলাম, উছমানপুরের আবু কাশেম ও আগরপুরের তাজুল ইসলাম ওরফে তাজু কসাই। এঁরা প্রত্যেকেই তালিকাভুক্ত মাদক কারবারি বলে নিশ্চিত করেছে পুলিশ।
অনুষ্ঠানে মাদক কারবারি তাইনুস বলেন, ‘ভালো একটি পরিবারের সন্তান হয়েও ভুলক্রমে আমি আজ এ পথে। নেশা করতে করতেই মাদকের কারবার পেশা হয়ে যায়। এলাকাবাসী ও পরিবারের কাছে এখন আমি ঘৃণিত মানুষ। তাই দুই শিশুসন্তানের মুখের দিকে তাকিয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে চাই। ’
সভায় বক্তৃতা করেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নূরুল মিল্লাত, উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) কাউসার আজিজ, সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (ভৈরব সার্কেল) মো. কামরুল ইসলাম প্রমুখ। কুলিয়ারচর থানার ওসি মো. নান্নু মোল্লা বলেন, ‘আত্মসমর্পণকারী মাদক কারবারিরা অনুশোচনায় ভুগছেন। তাঁরা ভবিষ্যতে এ পেশায় না ফেরার অঙ্গীকার করে পুলিশের সহায়তা চেয়েছেন।’
মাদক ব্যবসায়ীরা যদি এভাবে নিজ থেকে সরে আসতে চান এমন অনৈতিক পন্থা থেকে, তবে দেশে মাদকের সহজলভ্যতা কমে আসবে। কাওকে গুলিবিদ্ধ না করেও বাচানো যাবে যুবসমাজকে।
অনলাইন বাংলা নিউজ বিডি :/ এস এস
Leave a Reply