
ভারতের কলকাতা শহরের বেহালার ঘোলসাপুর এলাকায় জেমস লং সরণিতে শুভব্রতর পৈতৃক বাড়ি। এই বাড়িতে মা-বাবার সঙ্গে থাকতেন শুভব্রত। তিনি একজন লেদার ইঞ্জিনিয়ার। মোটা বেতনে চাকরিও করছেন কলকাতার বানতলার চর্মনগরীতে.
নিজের বাড়িতে মায়ের লাশ তিন বছর ধরে ফ্রিজে সংরক্ষণ করে রেখেছিলেন এই ছেলে। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে বৃহস্পতিবার পুলিশ ওই বাড়ি থেকে ফ্রিজে সংরক্ষণ করে রাখা অবস্থায় লাশটি উদ্ধার করেছে। এ ঘটনায় ছেলে শুভব্রত মজুমদার (৪৫) ও তাঁর বাবা গোপাল মজুমদারকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে পুলিশ।
গোপাল ছেলের সঙ্গে একই বাড়িতে থাকেন। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ২০১৫ সালের এপ্রিলে শুভব্রতর মা বীণা মজুমদার অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। ৭ এপ্রিল তাঁর মৃত্যু হয়। মৃত্যুর পর তাঁর লাশ গোপনে বাড়ি এনে প্রচার করা হয়, পিস হ্যাভেনে রাখা হয়েছে লাশ। শুভব্রত মায়ের শেষকৃত্যের অনুষ্ঠান করেননি। তাঁর মা বীণা মজুমদার ফুড করপোরেশন অব ইন্ডিয়ায় চাকরি করতেন।
পুলিশ বলছে, মৃত্যুর পর শুভব্রত মায়ের দেহ সংরক্ষণ করেন। কিনে আনা হয় বড়মাপের একটি ফ্রিজ। বিভিন্ন কেমিক্যাল দিয়ে তাতে সংরক্ষণ করা হয় বীণা মজুমদারের লাশ। পুলিশ গোপন সূত্রে খবর পেয়ে বৃহস্পতিবার শুভব্রতদের বাড়িতে অভিযান চালায়। এ সময় একটি ফ্রিজ থেকে বীণা মজুমদারের লাশ উদ্ধার করা হয়। আর একটি ফ্রিজ ফাঁকা পাওয়া যায়। পুলিশ এই বাড়ি থেকে মরদেহ সংরক্ষণের নানা রাসায়নিক পদার্থ উদ্ধার করেছে।
শুভব্রতর বাবা গোপাল মজুমদারকে বলেন, ছেলের ভয়ে তিনি সবকিছু জেনেও কোনো কথা বলতে সাহস পাননি। কারণ তাঁর ছেলে বলেছিলেন, এ কথা কাউকে জানালে তিনি বাড়ি ছেড়ে চলে যাবেন। শুভব্রত দাবি করেছেন, তিনি তাঁর মাকে প্রচণ্ড ভালোবাসতেন। তাঁর বিশ্বাস ছিল, মানুষের কোষের মৃত্যু হয় না। কোষ বাঁচিয়ে রাখা মানে মানুষকে বাঁচিয়ে রাখা। তাই মাকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য তাঁর দেহ সংরক্ষণ করে রেখেছিলেন। তবে এসব কথায় এখনো পুরোপুরি বিশ্বাস করতে পারছে না পুলিশসহ এলাকাবাসী। শুভব্রত মানসিক রোগী কি না, তা পরীক্ষা করে দেখছে পুলিশ।
ঘটনাটি যে কারনেই হোক, বেশ চাঞ্চল্যকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে এলাকায়।
অনলাইন বাংলা নিউজ বিডি :/ এস এস
Leave a Reply