
ঘটনা রাজধানীর মধুবাগ এলাকার। মুক্তিপণ আদায়ের জন্য রাজধানীর মধুবাগ এলাকা থেকে সাবেক ছাত্র সামিরকে অপহরণ করে মাদ্রাসা শিক্ষক মো. মঈনুল ইসলাম।
র্যাবের বরাত থেকে জানা যায়, শুক্রবার (২৪ আগস্ট) বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে রাজধানীর বিমানবন্দর স্টেশন এলাকায় অভিযান চালিয়ে শিশুটিকে উদ্ধার করে অপহরণকারীকে আটক করা হয়। আটক অপহরণকারী হাফেজ মো. মঈনুল ইসলাম (২৪) নোয়াখালী জেলার সোনাপুর সাঈদাতুল আবরার মাদ্রাসার শিক্ষক।
শিশুকে অপহরণের কথা র্যাবের কাছে স্বীকার করেছেন।
শনিবার (২৫ আগস্ট) র্যাব-৩ এর সিনিয়র সহকারী পরিচালক (অপারেশন অফিসার) এএসএম শাখাওয়াত হোসেন জানান, র্যাব জানায়, অপহরণের শিকার শিশুটির নাম মো. সামির (৮)। সে বরিশালের কোতোয়ালি থানার বুখাইনগর গ্রামের মো. কাওসার আহম্মেদ পিন্টুর ছেলে। সামিরের বাবা একজন মাইক্রোবাস চালক। তারা এখন ঢাকার হাতিরঝিল থানা এলাকার মধুবাগ মগবাজারের একটি বাসায় বাস করেন।
র্যাব-৩ এর সিপিসি-২ স্কোয়াড কমান্ডার এএসপি রবিউল ইসলাম বলেন, ‘গত এক বছর ধরে সামিরকে প্রাইভেট পড়াতেন মাদ্রাসা শিক্ষক মঈনুল ইসলাম। তিন মাস আগে সে নোয়াখালীর একটি মাদ্রাসায় চাকরি পেয়ে চলে যান। তবে সামিরের পরিবারের সঙ্গে সে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ রেখে আসছিল। অপহরণের উদ্দশ্যেই সে আবার ঢাকায় আসে। পরে সে হাতিরঝিল মধুবাগের বাড়ির সামনে থেকে সামিরকে ফুসলিয়ে বিমানবন্দর আশকোনায় তার এক বন্ধুর বাসায় নিয়ে যায়।’
তিনি বলেন, ‘আসামি প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানায়- সামিরকে নিয়ে তার বন্ধুর বাসায় ওঠার পর তার বন্ধু শিশুটির সম্পর্কে জানতে চায়। সে তখন তার আত্মীয় বলে পরিচয় দেয়। পরে মোবাইর ফোন ও চিঠির মাধ্যমে সামিরের পরিবারের কাছে ৫০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয় এবং শর্ত দেওয়া হয় যে শুধু সামিরের মা একা ওই মুক্তিপণের টাকা নিয়ে আসবেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামি এটাও স্বীকার করেছে যে- এই ঘটনার বিষয়ে তার বন্ধু কিছুই জানতো না। অপহরণের পরিকল্পনাটি সে একাই করেছিল।’
র্যাব-৩ এর সিনিয়র সহকারী পরিচালক (অপারেশন অফিসার) এএসএম শাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘ভুক্তভোগী শিশুর বাবা কাছ থেকে অর্থ আদায়ের উদ্দেশ্যে ২৩ আগস্ট বিকাল ৪টার দিকে হাতিরঝিলের মধুবাগ ৩৩১/সি বাসার সামনে থেকে শিশু মো. সামিরকে অপহরণ করা হয়। পরে ভুক্তভোগীর বাবার অভিযোগের ভিত্তিতে র্যাব-৩ এর সিপিসি-২ এর একটি দল গোয়েন্দা কার্যক্রমের মাধ্যমে ঢাকার বিমানবন্দর স্টেশন এলাকা থেকে অপহরণকারী মো. মঈনুল ইসলামকে আটক এবং শিশু সামিরকে উদ্ধার করে।’
তিনি আরও বলেন, ‘জিজ্ঞাসাবাদে আসামি জানায়- সে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের নূরানী তালীমূল কোরআন মাদ্রাসা থেকে হাফেজ হিসেবে পাস করেছে। সে কওমি মাদ্রাসা থেকেও কিতাব বিভাগে জালালাইন কিতাব পর্যন্ত পড়াশুনা করেছে। গত একমাস পূর্বে সে নোয়াখালী জেলার সোনাপুর সাঈদাতুল আবরার মাদ্রাসার নূরানী বিভাগে শিক্ষক হিসেবে নিয়োজিত হয়।’
শিক্ষকের প্রতি মানুষ সর্বদাই শ্রদ্ধাশীল। বিশেষ করে সে যখন হয় মাদ্রাসার শিক্ষক, তখন ধর্মপ্রাণ মুসুল্লীরা তাঁকে একটু বাড়তি সমীহের চোখেই দেখে থাকেন।
এই মাদ্রাসা শিক্ষকের মুক্তিপণের লোভে শিশুকে অপহরণ প্রশ্নবিদ্ধ করলো শিক্ষক পেশাটিকেই। এর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিৎ।
অনলাইন বাংলা নিউজ বিডি :/ এম ইউ
Leave a Reply