
‘যতদিন শেখ হাসিনা আছেন তখন এদেশের আলেমদের কোনো ক্ষতি হবে না। তিনি আলেম ও মাদরাসা শিক্ষার্থীদের কল্যাণে কাজ করে যাবেন। কওমি মাদরাসা স্বীকৃতি দিয়ে তিনি সেটা প্রমাণ করে দিয়েছেন।’
রোববার (০৪ নভেম্বর) রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আয়োজিত ‘শুকরিয়া মাহফিলে’ বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় প্রধানমন্ত্রীর সামরিক সচিব মেজর জেনারেল মিয়া মোহাম্মদ জয়নুল আবেদীন আলেম-উলামা ও মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের আশ্বস্ত করে বলেন।
কওমি সনদের স্বীকৃতি বাস্তবায়ন হওয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সংবর্ধনা জানাতে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। আল্লামা শাহ আহমদ শফীর সভাপতিত্বে শুকরিয়া মাহফিলে প্রধানমন্ত্রী উপস্থিত রয়েছেন।
পৌনে ১১টার দিকে প্রধানমন্ত্রী সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে পৌঁছালে তাকে স্বাগত জানান আয়োজক সংশ্লিষ্ট শীর্ষ আলেমরা। সেখানে কওমি আলেমদের সঙ্গে কুশল বিনিময়ের পর প্রধানমন্ত্রী অনুষ্ঠান মঞ্চে আসন গ্রহণ করেন। মঞ্চে প্রধানমন্ত্রীর পাশে বসেছেন শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ এবং নৌমন্ত্রী শাহজাহান খান।
সামরিক সচিব প্রধানমন্ত্রীকে একজন ধর্মভীরু ও মহিয়সী নারী উল্লেখ করে বলেন, আমি কখনও উনাকে নামাজ মিস করতে দেখিনি। তার দিন শুরু হয় নামাজ ও তেলাওয়াতের মাধ্যমে। কোরআন তেলাওয়াত উনার জন্য সাক্ষী হয়ে থাকবে।
জয়নুল আবেদীন বলেন, কওমি মাদ্রাসা কখনও জঙ্গিবাদে জড়িত নয়। কওমি আলেমরা সব উগ্র ও সন্ত্রাসী কার্যকলাপের বিরোধী। তিনি জানান, কওমি আলেমরা অসাম্প্রদায়িকও। তিনি উদাহরণ হিসেবে উল্লেখ করেন, হাটহাজারীতে দেশের সবচেয়ে বড় কওমি মাদরাসা, এর পাশেই বড় মন্দির। কিন্তু কোনোদিন কোনো সমস্যা হয়নি। রামুতে বৌদ্ধ মন্দির পুড়িয়ে দেয়ার পর কওমি শিক্ষার্থীরা বৌদ্ধদের পাশে দাঁড়িয়েছিল।
বক্তৃতায় প্রধানমন্ত্রীর সামরিক সচিব বিএনপির দিকে ইঙ্গিত করে প্রশ্ন রাখেন, যারা কওমি মাদরাসার স্বীকৃতির নামে প্রতারণা করেছিল তাদের সঙ্গে আপনারা কী আচরণ করবেন।
জামায়াতে ইসলামীর দিকে ইঙ্গিত করে বলেন, যারা নবী-রাসুল ও সাহাবায়ে কেরামের সমালোচনা করে তাদের ব্যাপারে আপনাদের ভূমিকা কী হবে। কওমি স্বীকৃতি দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে ঐতিহাসিক ভূমিকা পালন করেছেন তার সঙ্গে আপনাদের আচরণ কী হবে- প্রশ্ন রাখেন সামরিক সচিব।
এদিকে শোকরানা মাহফিল উপলক্ষে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে নেমেছে মাদরাসা শিক্ষার্থীদের ঢল। রাজধানীর বাইরের বিভিন্ন জেলা থেকে শত শত বাস ভর্তি করে মাদরাসার শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা মধ্যরাত থেকেই ঢাকায় এসেছেন।
অন্যদিকে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ও এর চারপাশের এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। শাহবাগ ও টিএসসি মোড়ে প্রস্তুত রাখা হয়েছে পুলিশের সাঁজোয়া যান। ইউনিফর্মের পাশাপাশি সাদা পোশাকে বিপুল সংখ্যক পুলিশ সদস্য দায়িত্ব পালন করছেন।
মৎস্যভবন, হাইকোর্টের সামনের এলাকা, দোয়েল চত্ত্বর, টিএসসি থেকে সোহরাওয়র্দী উদ্যানের প্রতিটি প্রবেশ পথে সতর্ক অবস্থা দেখা গেছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী সদস্যদের। এ ছাড়া প্রতিটি প্রবেশপথে বসানো হয়েছে আর্চওয়ে। মেটাল ডিটেক্টর ও হাতে তল্লাশির মধ্য দিয়ে সভাস্থলে প্রবেশ করতে দেয়া হচ্ছে।
অনলাইন বাংলা নিউজ বিডি:/ আমিরুল ইসলাম
Leave a Reply