নিলয় ধর, যশোর প্রতিনিধি : যশোরাঞ্চলে পাট চাষে আগ্রহ হারাচ্ছেন চাষিরা। আর এ কারণে দিন দিন কমে যাচ্ছে পাট চাষ। এ বছর লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ছয় হাজার হেক্টর জমিতে কম পাট চাষ হয়েছে। সময়মতো বিক্রি করতে না পারা এবং দাম কম পাওয়া চাষ কমে যাওয়ার অন্যতম প্রধান কারণ বলছেন সংশ্লিষ্টরা। যশোরাঞ্চলে এ বছর পাট চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২৬ হাজার ৪শ’ ৫০ হেক্টর। কিন্তু লক্ষ্যমাত্রার নির্দিষ্ট পরিমাণ জমিতে এ চাষ হয়নি। চাষ হয়েছে ২০ হাজার ১শ’ ৪০ হেক্টরে। ৬ হাজার ৩শ’ ১০ হেক্টরে চাষ কম হয়েছে। যশোর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে পাওয়া তথ্যানুযায়ী, সদর উপজেলায় ১ হাজার ২শ’, শার্শায় ২ হাজার ৬শ’ ৮০, ঝিকরগাছায় ৪ হাজার, চৌগাছায় ১ হাজার ৫শ’ ৫৫, অভয়নগরে ৩০, বাঘারপাড়ায় ১ হাজার ১শ’ ২০, মণিরামপুরে ৫ হাজার ১শ’ ৭৫ ও কেশবপুরে ৪ হাজার ৩শ’ ৮০ হেক্টর জমিতে এ বছর পাট চাষ হয়েছে।
এ বছর সবচেয়ে বেশি পাট চাষ হয়েছে মণিরামপুরে ৫ হাজার ১শ’ ৭৫। আর সবচেয়ে কম চাষ হয়েছে অভয়নগরে মাত্র ৩০ হেক্টরে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দীর্ঘদিন ধরে চাষি সময়মতো পাট বিক্রি করতে না পারায় এবং ঠিকমতো দাম না পাওয়ায় আগ্রহ হারাচ্ছেন। পাট চাষে নিয়োজিত চাষিরা দিন দিন ধান চাষে ঝুঁকছেন বলে জানিয়েছেন কৃষি কর্মকর্তারা। কৃষি কর্মকর্তারা বলছেন, অন্যান্য ফসলের তুলনায় পাটে রোগবালাই অপেক্ষাকৃত কম। ধানের মতো পাটে ব্লাস্টের আক্রমণ নেই। সেভাবে মড়কও লাগে না। এ কারণে পাট চাষ তুলনামূলক নিরাপদ। নিয়মিত পাট চাষ করেন এমন কয়েকজনের সঙ্গে আলাপকালে তারা বলেন, সময়মতো বিক্রি করতে না পারা এবং দাম না পাওয়ার সাথে বড় সঙ্কট জাগ (পঁচানো) দেয়ার ব্যবস্থা না থাকা।
তারা বলেন, অধিকাংশ জায়গায় খালবিল ভরাট হয়ে গেছে। পাট জাগ দেয়ার মতো জায়গা পাওয়া এখন কঠিন। পানির অভাবে ঠিকমতো জাগ দেয়া যায় না। অনেক সময় জমিতে গর্ত খুঁড়ে পাট জাগ দিতে হয়। যা করা কৃষকের জন্যে কঠিন হয়ে পড়ে। সাইফুল ইসলাম নামে একজন কৃষক বলেন, এক সময় নদী কিংবা খালে পাট জাগ দেয়া যেত। নদী কিংবা খালে বেশি পরিমাণ পানি থাকে। বেশি পানিতে পাট জাগ দিতে পারলে রঙ ভালো হয়। ফলে, বেশি দাম পাওয়া যায়। অন্যদিকে, বদ্ধ পানিতে জাগ দিলে পাটের রঙ তুলনামূলক কালচে হয় বলে চাষিরা বলছেন। এ কারণে দাম কম হয়। এ ধরনের নানাবিধ সমস্যার কারণে পাট চাষে আগ্রহ হারাচ্ছেন যশোরাঞ্চলের চাষিরা। এ ব্যাপারে যশোর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক এমদাদ হোসেন শেখের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, চাষ কমে যাওয়ার মূল কারণ দাম না পাওয়া। আর তা ছাড়া, যখন পাট বোনার সময় এ বছর তখন অতি বৃষ্টি হয়। এ কারণে চাষি ঠিকমতো আবাদ করতে পারেনি।
অনলাইন বাংলা নিউজ বিডি:/আমিরুল ইসলাম
খবরটি যদি গুরুত্বপুর্ন মনে হয় তাহলে লাইক, কমেন্টস, শেয়ার করুন
Leave a Reply