
রোহিঙ্গা সমস্যার নিরসন হয়নি এখনো। বিভিন্ন মহল থেকে আহ্বান করা হলেও মিয়ানমার এগিয়ে আসছে না এই সমস্যা নিরসনে। বরং যেন অনেকটা লুকোছাপা করেই আড়াল করতে চাইছে বিষয়গুলো।
এবার রয়টার্সের দুই সাংবাদিকেকে রাষ্ট্রের গোপনীয়তা আইন ভঙ্গের দায়ে দোষী সাব্যস্ত করেছে মিয়ানমারের এক আদালত। এই অপরাধে তাদের ৭ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। বিবিসি, রয়টার্স।
অভিযুক্ত দুই সাংবাদিক তাদের নিজেদেরকে নির্দোষ প্রমাণ করেছেন। অন্যদিকে এই মামলাটিকে মিয়ানমারে সংবাদপত্রের স্বাধীনতার পরীক্ষা হিসাবে ব্যাপকভাবে দেখা হয়।
রয়টার্সের প্রধান সম্পাদক স্টিফেন অ্যাডলার বলেন, আজ মিয়ানমারের জন্য দুঃখজনক দিন, রয়টার্সের সাংবাদিক ওয়া লোন এবং কিয়াউ সয়ে ঊ যে কোনও জায়গায় স্বাধীনতার কথা বলছেন।
২০১৭ সালের ১২ ডিসেম্বর রয়টার্সের সাংবাদিক ওয়া লোন (৩২) এবং কিয়াও সোয়ে ও (২৮)-কে আটক করে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ। তারা রাখাইনে মিয়ানমার সেনাবাহিনী কর্তৃক চালানো নিধনযজ্ঞ নিয়ে প্রতিবেদন তৈরি করেছিল। ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট রাখাইনে সহিংসতার পর রোহিঙ্গাদের ওপর নিধনযজ্ঞ জোরালো করে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। হত্যা ও ধর্ষণ থেকে বাঁচতে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে সাত লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা। ব্রিটিশ শাসনামলের ‘অফিশিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্ট’ নামের ঔপনিবেশিক আইনে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
শুনানিতে এই দুই সাংবাদিক বলেছেন, ‘তারা আমাদের গ্রেফতার করেছে কারণ আমরা তাদের হত্যাযজ্ঞের বিরুদ্ধে কথা বলেছি। আমরা সত্য প্রকাশ করার চেষ্টা করেছি।’
মিয়ানমারের একটি আদালত বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রীয় গোপনীয়তা আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে আটক বার্তা সংস্থা রয়টার্সের দুই সাংবাদিক কাইওয়া সোয়ে ও এবং ওয়া লোনের জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করেছে।
এদের সর্ব্বোচ্চ ১৪ বছর কারাদণ্ড হতে পারে। খবর এএফপি’র।
বিচারক ইয়ে লোইন আদালতে বলেন, ‘এ দু’জনকে আইন অনুযায়ী জামিন মঞ্জুর করা যায় না। আর আদালত তাদের জামিন না দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’
মিয়ানমারের নাগরিক সাংবাদিক ওয়া লোন (৩২) ও কিয়াও সোয়ে ও (২৮) রাখাইনের সঙ্কট নিয়ে কাজ করছিলেন। ২৫ শে আগস্ট রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠির ওপর দমন-পীড়ন শুরুর পর প্রায় সাত লাখ রোহিঙ্গা জীবন বাঁচাতে পালিয়ে বাংলাদেশে চলে আসেন। এই রোহিঙ্গা সঙ্কট নিয়ে কাজ করছিলেন আটক দুই সাংবাদিক। কিন্তু ১২ই ডিসেম্বর তাদেরকে আটক করে পুলিশ। তাদেরকে ওই দিন নৈশভোজে ডেকে নেয় পুলিশ। এরপর তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়।
সাংবাদিকদের স্বাধীনতার বদলে স্বেচ্ছাচারিতায় বন্দী করার বিষয়টি মিয়ানমারের জন্য ন্যাক্কারজনক। এর মাধ্যমে ফের প্রমাণিত হলো, রোহিঙ্গা বিষয়ে তারা আন্তরিক নয়। তাঁদের উপর চলমান সেনাবাহিনীর অত্যাচারে অনেকটা মৌন সমর্থনই দিয়ে যাচ্ছে যেন।
অনলাইন বাংলা নিউজ বিডি :/ এম ইউ
Leave a Reply