
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার উথুরী গ্রামের শাহজাহান মৃধার মেয়ে লিজা আক্তারের সঙ্গে প্রায় পাঁচ বছর আগে পাশের ধামাইল পূর্বপাড়া গ্রামের ফারুক ঢালীর ছেলে রাজীব ঢালীর বিয়ে হয়। এই দম্পতির ঘরে ইয়াসিন নামে দুই বছর বয়সের একটি ছেলে সন্তান। কিন্তু লিজার স্বামী রাজীব ঢালী, শ্বশুর ফারুক ঢালীসহ শ্বশুর বাড়ির লোকজন বিভিন্ন কারণে লিজাকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতেন।
ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ে এই অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে শিশুপুত্রকে কোলে নিয়ে ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন লিজা আক্তার (২৫) নামের এক গৃহবধূ। মায়ের সঙ্গে নিহত শিশুপুত্রের নাম ইয়াসিন (২)।
আজ মঙ্গলবার ভোরে উপজেলার ঢাকা-ময়মনসিংহ রেলপথের ধামাইল পূর্বপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর স্বামী-শ্বশুরসহ বাড়ির লোকজন ঘরে তালা ঝুলিয়ে পালিয়ে গেছেন।
গফরগাঁও জিআরপি ফাঁড়ি পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য তা ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে। এ সময় নিহতের স্বামী ও শ্বশুরকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ আটক করে।
এ জন্য ইতিপূর্বে লিজা একাধিকবার রাগ করে বাবার বাড়িতে চলে যায়। পরে বাবা-মা আত্মীয়-স্বজনসহ প্রতিবেশীরা তাকে বুঝিয়ে স্বামীর বাড়ি পাঠায়। গত সোমবার পুনরায় লিজার সঙ্গে শ্বশুরবাড়ির লোকজনের ঝগড়া হয়। একপর্যায়ে শ্বশুর ফারুক ঢালীসহ পরিবারের লোকজন লিজাকে মারধর করেন।
আজ মঙ্গলবার ভোর ৫টার দিকে লিজা আক্তার শিশুপুত্র ইয়াসিনকে কোলে নিয়ে কাউকে না বলে বাড়ি থেকে বের হয়ে আসে। পরে লিজা শিশুপুত্র ইয়াসিনকে কোলে নিয়ে পৌনে ৬টার দিকে ঢাকাগামী আন্তঃনগর যমুনা এক্সপ্রেস ট্রেনের নিচে ঝাঁপিয়ে পড়েন। এতে গৃহবধূ লিজা আক্তার ঘটনাস্থলেই মারা গেলেও শিশু ইয়াসিনের হাত-পা কেটে গুরুতর আহত হয়। এ সময় গতি কম থাকায় চালক ট্রেন থামিয়ে আশপাশের লোকজনকে ডেকে শিশুটিকে বাঁচানোর অনুরোধ করেন। পরে স্থানীয়রা শিশুটিকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়ার পথে মারা যায় সে।
খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য তা ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।
ঘটনার পর থেকেই শ্বশুর বাড়ির লোকজন ঘরে তালা দিয়ে পালিয়ে গেছেন। পরে পুলিশ এলাকা থেকে নিহত গৃহবধূ লিজার স্বামী রাজিব ঢালী ও শ্বশুর ফারুক ঢালীকে আটক করে।
এদিকে স্থানীয় একটি পক্ষ আলোচনার মাধ্যমে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা চালাচ্ছে বলে জানা গেছে।
অনলাইন বাংলা নিউজ বিডি :/ এস এস
Leave a Reply