
ঈদকে সামনে রেখে জাল নোটের কারবারিরা সক্রিয় হয়ে উঠেছে। সীমান্তে গরু বেচাকেনা ও দেশের ভিতরে বিভিন্ন গরুহাটকে কেন্দ্র করে জাল নোট সরবরাহ করছে কয়েকটি চক্র। নগরীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে ৯০ লাখ দেশীয় জালনোট ও ভারতীয় ২৬ লাখ জাল রুপির জালনোট তৈরির মূলহোতা ও তিন নারীসহ সাতজনকে গ্রেফতার করেছে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) মো. আবদুল বাতেন।
গ্রেফতারের বিষয়ে অতিরিক্ত কমিশনার বলেন, জাল নোটের কারবারিরা ঈদ সামনে রেখে বড় ধরনের টার্গেট নিয়ে মাঠে কাজ করে। বিভিন্ন গরুর হাট ও কাপড়ের ব্যবসায়ীদের মাঝে এই টাকা ছড়ানোর চেষ্টা করে। তাছাড়া সীমান্তে গরু বেচাকেনার জন্য একটি গ্রুপ ভারতীয় রুপির জাল নোট সরবরাহ করার পাঁয়তারা করছিল।
গোয়েন্দা পুলিশের কঠোর নজরদারির কারণে ওই সব চক্রের মূলহোতা লিয়াকত হোসেন ওরফে জাকিরসহ শান্তা আক্তার ও মমতাজ বেগমকে যাত্রাবাড়ীর মাতুয়াইল এলাকা থেকে বুধবার রাতে ২৬ লাখ জাল রুপি ও সরঞ্জামাদিসহ গ্রেফতার করা হয়েছে। এ সময় জাল রুপি তৈরির বিপুল পরিমাণ কাগজ, প্রিন্টারে ব্যবহৃত বিভিন্ন ধরনের কালির কার্টিজ, সিকিউরিটি সিল সংবলিত স্ক্রিন বোর্ড, গাম ও সিল মারা ফয়েল পেপার উদ্ধার করা হয়।
তাছাড়া রাজধানীর ফকিরাপুল থেকে লাল মিয়া ও শহিদুল ইসলামকে ৫০ লাখ টাকা, সবুজবাগ এলাকা থেকে আবিদা সুলতানা ও আল আমিনকে ৪০ লাখ টাকার জাল নোটসহ গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ঈদ টার্গেট করেই তারা জাল নোট সরবরাহ করছিল বলে জানান তিনি।
তিনি আরও বলেন, জাল রুপি নিয়ে গ্রেফতাররা আসন্ন কোরবানির ঈদে পোশাক ও গরু আমদানির কাজে বিভিন্ন ব্যবসায়ীদের মাধ্যমে জাল ভারতীয় রুপি পাচার করে আর্থিকভাবে লাভবান হবার উদ্দেশ্যে সক্রিয় হয়। চক্রটির মূল হোতা লিয়াকত হোসেন। সে বিভিন্ন স্থান থেকে জাল রুপি তৈরির প্রয়োজনীয় কাঁচামাল সরবরাহ এবং প্রস্তুত জাল ভারতীয় রুপি দেশের সীমান্তবর্তী জেলা চাঁপাইনবাবগঞ্জের আগ্রহী ব্যবসায়ীদের চাহিদা অনুযায়ী সরবরাহ করত। শান্তা আক্তার ও মমতাজ বেগম জাল রুপি তৈরির দক্ষ কারিগর ছিল। তারা জাল ভারতীয় রুপির সঙ্গে আসল রুপির পার্থক্য খুব সূক্ষ্মপর্যায়ে নামিয়ে আনতে আরও সুচারুরূপে জাল রুপি তৈরি করত। প্রায় ১০ বছর যাবৎ নোট জালিয়াতির সঙ্গে যুক্ত এ চক্রটি।
তিনি আরও বলেন, এই চক্রটি বাংলাদেশি নোট জালিয়াতিতে যুক্ত থাকলেও সম্প্রতি ভারতীয় রুপি জালিয়াতিতে যুক্ত হয়। তারা গ্রেফতার এড়াতে বারবার বাসা পরিবর্তন করত। বাসা ভাড়া নেওয়ার ক্ষেত্রে বহুতল ভবনের উপরের দিকের ফ্ল্যাটই বেছে নিত।
তাছাড়া ৯০ লাখ টাকা নিয়ে গ্রেফতাদের লক্ষ্যই ছিল কোরবানির ঈদ। তবে জাল নোটের চক্রটি যতই সক্রিয় হোক না কেন কঠোর নজরদারির মাধ্যমে আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে তাদের। আসামিরা অতীতে কয়েকবার গ্রেফতার হয়ে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা ভোগ করে জামিনে বের হয়ে তারা আবারও নোট জালিয়াতির কাজে লিপ্ত হয়েছে বলে জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।
অনলাইন বাংলা নিউজ বিডি:/আমিরুল ইসলাম
Leave a Reply