
প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরা সুন্দরবনে গভীর সমুদ্র থেকে অসংখ্য ছোট খাল ধরে খুব সহজে প্রবেশ করা যায় গভীর বনে। জেলেদের জিম্মি করে মুক্তিপণ আদায় ও নানা অপরাধ কার্যক্রমের জন্য এ বনকে তাই ব্যবহার করে জলদস্যুরা। বিভিন্ন সময় অভিযান র্যাব চালিয়ে জলদস্যু বাহিনী ও তাদের আস্তানা গুড়িয়ে দিলেও আবারো নতুন করে আস্তানা গড়ে তুলতো তারা।
সুন্দরবন থেকে র্যাব ক্যাম্প উঠিয়ে নেয়ায় শঙ্কিত বরগুনাসহ উপকূলের জেলেরা। তাদের ধারনা র্যাব না থাকায় সুন্দরবনে আবারো গড়ে উঠতে পারে জলদস্যুদের আস্তানা । তাহলে আবারো শুরু হবে মুক্তিপণের দাবিতে জেলে অপহরণ, জেলেদের জাল,মাছ ও ট্রলার লুটের ঘটনা। আর সচেতন মহল বলছে শুধু জলদস্যু নয় সক্রিয় হয়ে উঠবে হরিণ শিকারি ও চোরাকারবারিরা।
তাই স্থায়ী সমাধানের জন্য বনের মধ্যে ক্যাম্প করে র্যাব। শুরু হয় অভিযান, এতে বাধ্য হয়ে আত্মসমর্পণ করতে থাকে একের পর এক জলদস্যু বাহিনী। জলদস্যু না থাকায় প্রায় এক বছর ধরে সমুদ্রে নির্বিঘ্নে মাছ ধরছে জেলেরা। তবে সম্প্রতি সুন্দরবন থেকে র্যাব ক্যাম্প উঠিয়ে নেয়ায় আবারো জলদস্যু আতঙ্ক শুরু হয়েছে জেলেদের মাঝে।
স্থানীয়রা বলেন, ‘র্যাব ক্যাম্প যদি উঠিয়ে নেয় সরকার তাহলে জলদস্যুরাতো আবারো হামলা করবে।’
এদিকে র্যাব না থাকলে শুধু জলদস্যু নয় সুন্দরবনে বেড়ে যাবে অন্যান্য অপরাধী চক্র। চোরাকারবারিদের হাতে বিলুপ্ত হবে বন ও বন্য প্রাণী।
বরগুনার বন্য প্রাণী ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ কমিটির সভাপতি সোহেল হাফিজ বলেন, ‘হরিণ শিকার থেকে শুরু করে অবৈধ সব কাজ বেড়ে যাবে। র্যাব থাকার কারণে অবৈধ ব্যবসায়ীরা সুন্দরবনে প্রবেশ করেনা। এক্ষেত্রে একটা র্যাবক্যাম্প খুবই জরুরি।’
অবশ্য জেলে নেতাদের সাথে নিয়ে সুন্দর বনের বিভিন্ন স্থান পরিদর্শন শেষে কটকা নামক স্থানে র্যাব ক্যাম্প করার আশ্বাস দিয়েছে র্যাব। এমনটাই দাবি করেছেন বরগুনার ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি মোস্তফা চৌধুরী।’
প্রায় ১০ হাজার বর্গ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে বিশ্বের সর্ববৃহৎ অখণ্ড বনভূমি সুন্দরবন। এ বনে র্যাব ক্যাম্প স্থাপনের পর ২০১৬ সালে ৫টি ও এ বছরে আরো একাধিক জলদস্যু বাহিনী আত্মসমর্পণ করে। সুন্দরবন জলদস্যু মুক্ত হওয়ায় সমুদ্রে নির্বিঘ্নে মাছ ধরতে শুরু করে জেলেরা। কিন্তু র্যাব ক্যাম্প না থাকলে বা প্রশাসনের নজরদারি কমিয়ে দিলে আবারো জলদস্যুসহ অপরাধী চক্রের দখলে চলে যেতে পারে সুন্দরবন।
অনলাইন বাংলা নিউজ বিডিঃ / কাউসার।
Leave a Reply