
সম্প্রতি র্যা পিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যা ব) দুই অভিযানে আড়াই হাজার মণ এবং ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) ৪০০ মণ আম ধ্বংস করা হয়েছে। তাদের অভিযোগ, আমগুলো অপরিপক্ব এবং কার্বাইড ও ইথোফেন দিয়ে পাকানো হয়েছে।
এই আম স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর কিনা? এর জবাবে নিরাপদ খাদ্য কর্তপক্ষ বলেছে- অপরিপক্ব আমে স্বাদ, গন্ধ ও পুষ্টির পরিমাণ স্বাভাবিক পাকা আমের চেয়ে কম থাকে। কিন্তু এটা ক্ষতিকর নয়। তাই এসব আম ধ্বংস করার কোন মানে হয় না। আর কার্বাইড (ক্যালসিয়াম কার্বাইড) দিয়ে পাকালে ফলে এর অবশিষ্টাংশ বা রেসিডিউ থাকে না। তাই তা ক্ষতিকর নয়।
বাজারে অভিযান চালিয়ে কয়েক হাজার মণ আম, কলা ধ্বংস করা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে সরকারী সংস্থা বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ (বিএফএসএ)। বুধবার রাজধানীর বিজ মিলনায়তনে ‘মৌসুমি ফল পাকাতে বিভিন্ন রাসায়নিকের ব্যবহার ও জনস্বাস্থ্য’ শীর্ষক কর্মশালায় এ সম্পর্কে বক্তৃতা দেয়া হয়।
কর্তৃপক্ষ বলছে, জানা-বোঝার ঘাটতির কারণে এভাবে আমসহ ফলমূল নষ্ট করা হচ্ছে। এসব ফলমূল ইথোফেনের মাধ্যমে পাকানো হলেও তা অনিরাপদ বা ক্ষতিকর নয়। আর ইথোফেন ফরমালিনের চেয়েও ক্ষতিকর- এ তথ্যও সঠিক নয়। অপরিপক্ব আমে স্বাদ, গন্ধ ও পুষ্টির পরিমাণ স্বাভাবিক পাকা আমের চেয়ে কম থাকে। তার মানে এই নয় যে, এসব আম-কলা ধ্বংস করতে হবে। এর ফলে একদিকে যেমন কৃষক ও দেশ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে পাশপিাশি জনমনে আতঙ্কের সৃষ্টি হচ্ছে। বহির্বিশ্বে দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হচ্ছে। ফলমূলের বাজার চলে যাচ্ছে অন্য দেশের দখলে।
আবার নির্দিষ্ট মাত্রায় ইথোফেন ব্যবহার করে ফল পাকানো দেশের আইনে বৈধ। সারা বিশ্বেও তাই। ২০১৪ সালের আগে ফরমালিন মেশানোর অভিযোগে প্রচুর আম ও অন্যান্য ফল ধ্বংস করা হয়েছিল। পরে দেখা যায়, যে যন্ত্র দিয়ে ফরমালিন পরীক্ষা করা হচ্ছে, তা বাতাসে ফরমালডিহাইড মাপার যন্ত্র। তিনটি সংস্থার পরীক্ষার ফলের ভিত্তিতে হাইকোর্ট সেই যন্ত্রটি ফল ও মাছে ফরমালিন পরীক্ষায় অকার্যকর ঘোষণা করেন। এ অবস্থায় ফল পাকানোর বৈজ্ঞানিক বিষয়াদি জানাতে সরকারের সংশ্লিষ্ট সব সংস্থাকে নিয়ে বুধবার কর্মশালার আয়োজন করে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ।
বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান(অতিরিক্ত সচিব) মোহাম্মদ মাহফুজুল হকের সভাপতিত্বে কর্মশালায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের সদস্য ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. মোঃ ইকবাল রউফ মামুন। এছাড়া বক্তব্য রাখেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের সাবেক মহাপরিচালক ড. শাহ মনির, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের পরিচালক(পুষ্টি) ড. মোঃ মনিরুল ইসলাম, একই প্রতিষ্ঠানের হর্টিকালচার বিভাগের অতিরিক্ত পরিচালক শাহ মোঃ আকরামুল হক, বারি’র প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মনোরঞ্জন ধর, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের ডিসি (অপারেশন) শাহেদ আলম, বিএসটিআইএর সহকারী পরিচালক এ এস এম আবু সাইদ, ক্যাবের সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট হুমায়ুন কবীর ভুইয়া, কৃষি বিপণন অধিদফতরের আব্দুর রশিদ, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মোবাইল কোর্ট পরিচালনা দলের পরিদর্শক কামরুল হাসান প্রমুখ।
অনলাইন বাংলা নিউজ বিডি :/ এস এস
Leave a Reply