
গত শুক্রবার দশমির রাতে ভারতের অমৃতসরে ‘রাবনের শেষকৃত্য’ অনুষ্ঠান দেখতে গিয়ে চলন্ত ট্রেনের নিচে পড়ে ৫৯ জন মারা যান, এতে আহত হন আরও ৭২ জন। এই ঘটনায় সবকিছু ছাপিয়ে এখন ধর্মীয় দাঙ্গা উঁকি দিচ্ছে পার্শ্ববর্তী দেশটিতে।
ভারতের সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলোতে মুসলমানদের নামাজ পড়ার কয়েকটি ছবি পোস্ট করে উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে সাম্প্রাদায়িক দাঙ্গার বীজ বোনার চেষ্টা চলছে। ভাইরাল হওয়া সেই সব ছবিতে দেখা যায়, কোনো এক দুপুরে মুসলমানরা রেল লাইনের ওপর দাঁড়িয়ে নামাজ পড়ছেন আর পাশেই ট্রেন থেমে আছে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ওই ছবিগুলোর ক্যাপশনে লেখা হয়েছে- ‘তামিলনাড়ুতে ট্রেন থামিয়ে রেললাইনের ওপর নামাজ পড়ার সুযোগ দেয়া হয়েছে। ওই ট্রেনে অনেক স্কুল কলেজের পরীক্ষার্থী ছিল।
এখন একদল উগ্রবাদী হিন্দু বলছেন, যদি হিন্দুদের উপাসনা বা কোনো অনুষ্ঠানের জন্য ট্রেন না থামিয়ে ভক্তদের ওপর চালিয়ে দেয়া হয়, তাহলে মুসলিমদের নামাজের সময় ট্রেন কেনো বন্ধ রাখা হয়? তাদের ওপর দিয়ে কেনো ট্রেন চালিয়ে দেয়া হয়নি?
এ ধরনের সাম্প্রদায়িক পোস্ট এবং মন্তব্যে যখন ফেসবুক, টুইটার, হোয়াটস অ্যাপ তোলপাড়, তখন টাইমস অব ইন্ডিয়া জানাচ্ছে ভিন্ন খবর। সংবাদমাধ্যমটি বলছে, পুরানো ভুল ছবি দিয়ে এক শ্রেণির স্বার্থবাদী হিন্দু সাধারণ মানুষকে বিপথগামী করার চেষ্টা চালাচ্ছে।
টাইমস অব ইন্ডিয়ার সূত্র অনুযায়ী, ওই দুটি ছবি তাদের ফটো সাংবাদিক অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায় ২০১৭ সালের ‘জুমআ’তুল বিদা’র দিন নয়াদিল্লি রেল স্টেশন এলাকা থেকে তুলেছিলেন।
ছবি দুটি প্রসঙ্গে অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘মুসলমানরা যে রেল লাইনে দাঁড়িয়ে নামাজ পড়ছিলেন ওই লাইনগুলো ব্যবহার হয় না। আর যে ট্রেনটিকে অপেক্ষা করতে দেখা যাচ্ছে আসলে সেটি আগে থেকেই ওইখানে ছিল। হয়তো পরিষ্কার বা যান্ত্রিক ত্রুটি সারানোর জন্য ট্রেনটি ওখানে রাখা হয়েছিল।’
ওই প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, গত মার্চেও এই ছবিগুলো দিয়ে সাধারণ হিন্দুদের মধ্যে উগ্রবাদ ছড়ানো চেষ্টা করা হয়েছিলো। তখন বিষয়টি সাধারণ মানুষের কাছে খোলাসা করতে ব্যাঙ্গালুরু মিররে প্রতিবেদন ছাপানো হয়েছিল।
অনলাইন বাংলা নিউজ বিডি:/ আমিরুল ইসলাম
Leave a Reply