
দীর্ঘ ২২ বছর ধরে দিনাজপুর ৬ আসনে নেই কোনো বিএনপির প্রার্থী। এই আসনে সর্বশেষ ১৯৯৬ সালে দলীয় প্রার্থী দিয়েছিল বিএনপি। এরপর জোটবদ্ধ হওয়ায় ২০০১ ও ২০০৮ সালের নির্বাচনে জামায়াতকে আসনটি ছেড়ে দেয় বিএনপি।
এই দীর্ঘ বিরতির ফলে দলের অস্তিত্ব দিন দিন হুমকির মুখে পড়ছে উল্লেখ করে স্থানীয় বিএনপি দাবি তুলেছে, এবারের নির্বাচনে দলীয় নেতাকেই এই আসনে প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দিতে হবে।
বিরামপুর, নবাবগঞ্জ, হাকিমপুর ও ঘোড়াঘাট উপজেলা নিয়ে গঠিত দিনাজপুর-৬ আসন। ১৯৯১ সালে এখানে জামায়াত মনোনীত প্রার্থী নির্বাচিত হয়েছিলেন। এ কারণে ২০০১ সালে চারদলীয় জোট গঠন হলে জামায়াতের প্রার্থীকে আসনটি ছেড়ে দিয়ে আসছে বিএনপি। যদিও ১৯৯৬–এর নির্বাচনে জামায়াতের প্রার্থী বিএনপি প্রার্থীর অর্ধেক ভোট পেয়ে তৃতীয় হয়েছিলেন।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, এবার দিনাজপুর-৬ আসনের চার উপজেলা থেকে বিএনপির আট নেতা দলীয় মনোনয়ন ফরম জমা দিয়েছেন। তাঁরা হলেন দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি জাহিদ হোসেন, জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক লুৎফর রহমান, নবাবগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবু জাফর মো. সাহাবুদ্দিন, সহসভাপতি মশিউর রহমান, নবাবগঞ্জ উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান মকবুলার রহমান, ঘোড়াঘাট উপজেলা চেয়ারম্যান শামীম হোসেন চৌধুরী, হিলি পৌরসভার সাবেক মেয়র সাখোয়াত হোসেন, বিএনপি নেতা শাহিন মণ্ডল, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য শফিকুল আলম। তাঁদের মধ্যে জাহিদ হোসেন এবং আবু জাফর মো. সাহাবুদ্দিন গত বৃহস্পতিবার সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছ থেকে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন।
নেতা–কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দীর্ঘদিন দলীয় প্রার্থী না থাকায় এবার সংসদ নির্বাচনে দলীয় নেতাকে মনোনয়ন দেওয়ার বিষয়ে নেতা–কর্মীরা সরব ছিলেন। বিষয়টি বারবার কেন্দ্রীয় কমিটিকেও অবহিত করা হয়েছে। মনোনয়ন পেতে বেশ কয়েক বছর ধরে জাহিদ হোসেন, লুৎফর রহমান, আবু জাফর মো. সাহাবুদ্দিন নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। চার উপজেলায় সামাজিক ও দলীয় বিভিন্ন কর্মসূচিতে ব্যানার–ফেস্টুনসহ অংশ নিতেন। দলীয় মনোনয়ন ফরম সংগ্রহের পর এই নেতারা তৃণমূলের নেতা–কর্মীদের অনুসারীদের সঙ্গে যোগাযোগ আরও বেড়েছে।
গত বৃহস্পতিবার আবু জাফর মো. সাহাবুদ্দিনের পক্ষে উপজেলা নির্বাচন কার্যালয় থেকে মনোনয়নপত্র কিনতে এসেছিলেন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ২২ বছর ধরে বিএনপির প্রার্থীকে মনোনয়ন দেওয়া হয়নি। দলীয় সাংসদ না থাকায় দিন দিন নেতা–কর্মীরা দলীয় কার্যক্রম থেকে দূরে সরে যাচ্ছেন। দলীয় নেতারা মনোনয়ন ফরম সংগ্রহের পর নেতা–কর্মীদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ দেখা দিয়েছে।
জেলা যুবদলের আইনবিষয়ক সম্পাদক মিঞা মো. শিরন আলম বলেন, শত হামলা মামলার পরও মনোনয়ন সংগ্রহে প্রমাণিত হয়, বিএনপির নেতা–কর্মীরা কতটা উন্মুখ হয়ে আছেন দলীয় প্রতীকে নির্বাচনের জন্য। নেতা–কর্মীদের মধ্যে যে উৎসাহ দেখা দিয়েছে, তাতে দলীয় প্রার্থী হলে খুব সহজেই এ আসনে বিএনপির প্রার্থী বিজয়ী হবেন।
জামায়াতের সঙ্গে আঁতাতে বিএনপি বেশ কিছু ক্ষেত্রে এমন ছাড় দিয়ে আসছে। তবে এই নির্বাচনে রব উঠেছে অন্তত এই আসনটিতে দলীয় প্রতীকে নির্বাচন করার। শেষ পর্যন্ত কে মনোনয়ন পান, সেটি দেখার জন্যে আরো কিছু দিন অপেক্ষা করতে হবে।
অনলাইন বাংলা নিউজ বিডি :/ সাহাজুল ইসলাম
Leave a Reply