
মঙ্গলবার স্থানীয় সময় বেলা একটার দিকে শক্তিশালী এক টাইফুন আঘাত হানে জাপানে। টাইফুনের নাম দেয়া হয়েছে জেবি। জেবি দেশটির পশ্চিমাঞ্চলে আঘাত হানে।
বিবিসির ভাষ্যে, ২৫ বছরের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ এই টাইফুন ক্রমশ দুর্বল হয়ে উত্তরাঞ্চলের দিকে এগোচ্ছে।
বিবিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত জেবির আঘাতে ৬ জন নিহত হয়েছে। আহতের মানুষের সংখ্যা অন্তত ১৬০। এর আগে ১৯৯৩ সালের বয়ে যাওয়া শক্তিশালী টাইফুনের আঘাতে নথিভুক্ত মৃত ও নিখোঁজ মানুষের সংখ্যা ছিল ৪৮ জন।
জাপানের আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্যমতে, জেবির গতিবেগ ঘণ্টায় ১৭২ কিলোমিটার পর্যন্ত রেকর্ড করা হয়েছে। এর প্রভাবে ভয়াবহ ভূমিধস ও ভারী বৃষ্টি শুরু হয়েছে।
আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলো বলছে, এই টাইফুনের প্রভাবে দেশটির পশ্চিমাঞ্চলে ব্যাপক ভূমিধস হয়েছে। দেশটির আবহাওয়া অধিদপ্তর আরও উঁচু ঢেউ, ভয়াবহ বন্যা, বজ্রসহ ভারী বর্ষণ ও বড় ধরনের ভূমিধসের আশঙ্কা করছে।
বিবিসির প্রতিবেদন বলা হয়, জেবির দাপটে ওসাকা উপসাগরের তীরবর্তী শহর ইজুমিসানোর একটি সেতুর মধ্যে বড় একটি ট্যাংকার আছড়ে পড়ে। এতে সেতুটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এ ছাড়া এই ঝড়ের ফলে কিয়োটো অংশে একটি রেলস্টেশনের ছাদ ধসে পড়ে।
টাইফুন স্থানীয় সময় বেলা একটার দিকে প্রথমে আঘাত হানে দেশটির কম বসতিপূর্ণ দ্বীপ শিকোকুতে। এতে সেখানে ব্যাপক ভূমিধসের ঘটনা ঘটে। এরপরই এটি দেশটির প্রধান ও সবচেয়ের বড় দ্বীপ হোনসুতে আঘাত হানে। ধারণা করা হচ্ছে, টাইফুন জেবি জাপানের উত্তরাঞ্চলের দিকে যেতে যেতে দুর্বল হয়ে পড়বে।
এই টাইফুনের ফলে ইতিমধ্যে জাপানে কয়েক শ ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে। পাশাপাশি বিভিন্ন জায়গায় বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে ট্রেন ও ফেরি চলাচল। টাইফুনের ফলে সৃষ্ট বন্যায় কৃত্রিম দ্বীপ ওসাকায় অবস্থিত কানসাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর প্লাবিত হয়ে গেছে। পাশাপাশি প্লাবনের ফলে এখানে অবস্থিত বিশ্বনন্দিত একটি বিনোদন পার্কও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
জাপান এমন একটি দেশ, যেখানে নিয়মিতই ঘূর্ণিঝড়ের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগ লেগেই থাকে। এইতো জুলাই মাসে দেশটিতে ঘটে যায় এই দশকের সবচেয়ে বড় ভূমিধস ও বন্যার ঘটনা। যাতে দুই শতাধিক মানুষের মৃত্যু হয়।
প্রাকৃতিক দুর্যোগ সমগ্র বিশ্বে প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের ভয়াবহতার জানান দিচ্ছে। বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি সহ, কার্বন ডাইওক্সাইডের বৃদ্ধি, গাছপালার পরিমাণ কমে যাওয়া, এসব কারনে প্রায়শই বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চল মুখোমুখি হচ্ছে এমন বিপর্যয়ের। এখনই সকলে মিলে পরিবেশ রক্ষায় এগিয়ে না এলে এর ফল ভুগতে হবে নিকট ভবিষ্যতেই।
অনলাইন বাংলা নিউজ বিডি :/ এম ইউ
Leave a Reply