
কচ্ছপ গতিতে চলছে হজযাত্রী নিবন্ধন। চলতি বছরের হজযাত্রীদের চূড়ান্ত নিবন্ধনের সময়সীমা প্রায় শেষ পর্যায়ে। গত ১৪ ফেব্রুয়ারি সরকারি এবং ১৭ ফেব্রুয়ারি বেসরকারি ব্যবস্থাপনার হজযাত্রীদের এ নিবন্ধন কার্যক্রম শুরু হয়। তবে বিভিন্ন কারণে ব্যাপক ধীর গতিতে চলছে এ নিবন্ধন। এরই মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনার হজযাত্রীদের নিবন্ধনের সময়সীমা ৫ থেকে ১২ মার্চ পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়েছে।
আর বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় নিবন্ধন শেষ হওয়ার কথা রবিবার (১০ মার্চ)। তবে এখন পর্যন্ত সব মিলিয়ে মাত্র সাড়ে ১৫ শতাংশ হজযাত্রীর নিবন্ধন সম্পন্ন হয়েছে। নির্ধারিত সময়ে কোটার বাকি হজযাত্রীদের নিবন্ধন সম্ভব হবে না বলে সংশ্লিষ্টরা আভাস দিয়েছেন। এক্ষেত্রে দুই ব্যবস্থাপনায়ই আরও সময় বাড়ানো হতে পারে বলে আশা করছেন তারা।
সূত্র মতে, সৌদি আরবের সঙ্গে সম্পাদিত হজচুক্তি অনুযায়ী চলতি বছর বাংলাদেশ থেকে মোট এক লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন হজে যেতে পারবেন। এর মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় ৭ হাজার ১৯৮ জন এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ১ লাখ ২০ হাজার জন। ডিজিটাল হজ ব্যবস্থাপনার অংশ হিসেবে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের হজ অফিসের অধীনে প্রাক-নিবন্ধিত হজযাত্রীদের মধ্য থেকে কোটা অনুযায়ী চূড়ান্ত নিবন্ধন কার্যক্রম শুরু হয়।
ধর্ম মন্ত্রণালয়ের নিয়মানুযায়ী নিবন্ধনের সময় সরকারি ব্যবস্থাপনার হজযাত্রীদের নির্ধারিত প্যাকেজ মূল্য পরিশোধ এবং এমআরপি পাসপোর্টের কপি জমা দিতে হচ্ছে। আর বেসরকারি ব্যবস্থাপনার হজযাত্রীদের বিমান ভাড়া ও সৌদির বিভিন্ন চার্জ বাবদ ১ লাখ ৪২ হাজার ৬৪৬ টাকা এবং এমআরপি পাসপোর্টের কপি জমা দিতে হচ্ছে। তবে অনেক হজযাত্রীর এখনও পাসপোর্ট হাতে না পাওয়া এবং এজেন্সি মালিকদের হাতে হজযাত্রীদের টাকা না পৌঁছানোসহ বিভিন্ন কারণে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে খুব স্বল্প সংখ্যক নিবন্ধন হয়েছে।
হজ অফিসের নিবন্ধন সার্ভার সূত্র মতে, শুক্রবার (৮ মার্চ) পর্যন্ত সরকারি ব্যবস্থাপনায় ৪ হাজার ৬৮৭ জন এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় মাত্র ১৫ হাজার ৩২ জন হজযাত্রীর নিবন্ধন সম্পন্ন হয়েছে। অর্থাৎ সরকারি ব্যবস্থাপনায় ৬৫ দশমিক ১১ এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় মাত্র ১২ দশমিক ৫২ শতাংশ হজযাত্রীর নিবন্ধন হয়েছে।
হজযাত্রী নিবন্ধনে ব্যাপক ধীরগতি সম্পর্কে জানতে চাইলে হজ এজেন্সিস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ-হাবের সভাপতি আবদুস সোবহান ভুঁইয়া বলেন, নিবন্ধনের সংখ্যা কম হলেও এখন পর্যন্ত ৪৮ হাজারের ওপরে নিবন্ধনের জন্য এন্ট্রি করেছেন। আশা করি, বাকি দুই দিনে নিবন্ধন হয়ে যাবে। তবে এ সময়ের মধ্যে নিবন্ধনের অবস্থা দেখে আমরা ধর্ম মন্ত্রণালয়ের কাছে সময় বাড়ানোর আবেদনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেব।
নিবন্ধনে ধীরগতির কারণ সম্পর্কে হাব সভাপতি বলেন, হজযাত্রীদের অনেকের পাসপোর্ট সমস্যা আছে। অর্থাৎ যথাসময়ে পাসপোর্ট হাতে পাচ্ছেন না। তবে এ বিষয়ে আমরা ধর্ম মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে পাসপোর্ট অফিসকে অনুরোধ করেছি। তারা হজযাত্রীদর পাসপোর্ট দ্রুত সরবরাহের ব্যাপারে আশ্বাস দিয়েছেন।
পাসপোর্ট জটিলতা ছাড়াও হজযাত্রী নিবন্ধন কম হওয়ার কারণ প্রসঙ্গে আল মক্কা ট্রাভেলসের প্রোপ্রাইটর মুফতি খোরশেদ আলম বলেন, অনেক এজেন্সি এখনও তাদের হজযাত্রীদের কাছ থেকে নিবন্ধনের নির্ধারিত টাকা সংগ্রহ করতে পারেনি। যে কারণে শেষ মুহূর্তে এসে সবাই নিবন্ধনের আশায় আছেন। তবে বর্তমান গতিতে ১০ মার্চের মধ্যে তো নয়ই আরও পাঁচ দিনেও নিবন্ধন শেষ করা সম্ভব হবে না। অবশ্যই সময় বাড়ানো লাগবে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
অনলাইন বাংলা নিউজ বিডি :/ জয় রহমান
Leave a Reply