
প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে চট্টগ্রামে পাহাড়ের ঢালে বসবাস করছে শত শত পরিবার। অর্থচ গত ১২ বছরে পাহাড় ধসে চাপা পড়ে মারা গেছেন চার শতাধিক মানুষ। বিশেষ করে বর্ষার সময় এ দুর্যোগ বড় দুর্ঘটনা ডেকে আনে। এরপরও বর্ষার আগে জেলা প্রশাসন তাদের সরিয়ে নেওয়ার উদ্যোগ নিলেও প্রভাবশালীদের কারণে বারবার ব্যর্থ হচ্ছে।
এদিকে জেলা প্রশাসনের তথ্যমতে, চট্টগ্রামে পাঁচ শতাধিক পাহাড় রয়েছে। এর মধ্যে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ ২৮টি পাহাড়ের পাদদেশে বসবাস করছে ৬৬৮টি পরিবার।
জানা যায়, ২০০৭ সালে ১২৭ জনের মৃত্যুর পর ২৯টি কারণ চিহ্নিত ও মহাবিপর্যয় এড়াতে ৩৬টি সুপারিশ করে পাহাড় ব্যবস্থাপনা কমিটি। কিন্তু এখনো বাস্তবায়িত হয়নি একটিও।
নগরীর লালখানবাজারে মতিঝর্ণা পাহাড়ের পাদদেশে সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, চারদিকে পাহাড়। আর এসব পাহাড়ের নিচে নিম্ন আয়ের মানুষের বাস। খাঁড়া এসব পাহাড়ের নিচে মনের আনন্দে খেলছে ছোট ছোট শিশুরা। কিন্তু তারা জানে না-কী রকম ঝুঁকিতে রয়েছে তাদের জীবন। একটু বৃষ্টি হলেই যে কোনো সময় আঁছড়ে পড়তে পারে উঁচু সব পাহাড়ের অংশ। ঘটতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা।
স্থানীয় বসবাসকারী এক ব্যক্তি জানান, জায়গাটা ভুলু কমান্ডারের কাছ থেকে বছর ৪০ আগে কিনেছেন। আরেকজন বলেন, ‘আমাদের দিকে তো পাহাড় পড়ে না, পড়লে তো ভয় পেতাম।’
নগরবিদরা বলছেন, প্রশাসনের গড়িমসি ও গত ১২ বছরে পাহাড় ব্যবস্থাপনা কমিটির দেওয়া সুপারিশগুলো বাস্তবায়িত না হওয়ায় বারবার ঘটছে দুর্ঘটনা।
নগর পরিকল্পনাবিদ স্থপতি আশিক ইমরান বলেন, যারা অবৈধভাবে বসবাস করছেন, তাদের কিন্তু এ জমিতে কোনো মালিকানা নেই। তারপরও বিদ্যুৎ, পানি ও গ্যাসের সংযোগ পাচ্ছেন। কীভাবে পাচ্ছেন? এক ধরনের প্রভাবশালী মহল চাইছে না সুপারিশগুলো বাস্তবায়িত ও এ সমস্যার নিরসন হোক।
জেলা প্রশাসন বলছে, প্রতি বছর বর্ষার আগে তাদের সরিয়ে নেওয়া হয়। কিন্তু প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় ফের বসবাস শুরু করে। আবার যা তাই অবস্থায় দাঁড়িয়ে যায়।
চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক ইলিয়াস হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, একরাতের মধ্যে টিনের ঘর তুলে থাকতে শুরু করেন তারা। ফলে সরিয়ে আনার কাজটিও করতে পারি না।
চট্টগ্রামের সহকারী কমিশনার সাবরিনা আফরিন মোস্তফা জানান, যারা ঝুঁকিতে বসবাস করছেন, তাদের সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে।
অনলাইন বাংলা নিউজ বিডি:/আমিরুল ইসলাম
Leave a Reply