
সুশীল সমাজের পরিচিত মুখ ডা. জাফরুল্লাহ্ গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি। জাতীয় বিভিন্ন বিষয়ে তার বক্তব্য গুরুত্ব সহকারে গ্রহণ করে সংবাদ মাধ্যম। কিন্তু সেই সুশীল সমাজের ডা. জাফরুল্লাহ্ চৌধুরীর বিরুদ্ধে ভয়ংকর এক অভিযোগ উঠেছে। স্বাধীনতার পরবর্তী সরকারের নিকট হতে সুবিধা নিয়ে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র নামক একটি প্রতিষ্ঠান চালু করেন তিনি। তার প্রতিষ্ঠানের ই এক ইর্ন্টার্ন নারী চিকিৎসক তার বিরুদ্ধে নারী নির্যাতন ও যৌন হয়রানির অভিযোগ তুলেছেন।
এছাড়া তিনি চাকরি দেওয়ার নাম করে বহু মেয়ের সম্ভ্রম কেড়েছেন বলেও গুরুতর অভিযোগ উঠেছে দেশের পরিচিত এই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে।
গত সপ্তাহের সোমবার ( ১৯ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের তাবাসসুম (২৫) নামের ইর্ন্টার্নরত চিকিৎসক তার বিরুদ্ধে এই অভিযোগ তোলেন। পরের দিন মঙ্গলবার এই ঘটনার প্রতিবাদে প্রতিষ্ঠানটির কর্মচারীরা কর্ম বিরতি পালন করে।
আন্দোলনরত ইর্ন্টার্ন চিকিৎসকেরা আরো বলেন, একজন নারী প্রশিক্ষণার্থী চিকিৎসক কে শারীরিক ও মানসিক ভাবে নির্যাতিত ও লাঞ্চিত করেছেন ডা. জাফরুল্লাহ্ চৌধুরী। আমরা এর বিচার চাই,বিচার না পাওয়া পর্যন্ত আমরা কাজে ফিরব না। প্রয়োজনে আরো কর্মসূচি গ্রহণ করব আমরা।
আন্দোলনকারীরা আরো জানান,গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিষ্টার দেলোয়ার হোসেন ও ট্রাস্টি জাফরুল্লাহ্ চৌধুরী দীর্ঘদিন যাবত নারীদের যৌন হয়রানি করে যাচ্ছেন। কিন্তু সকল সরকারের সাথে তারা সুসম্পর্ক বজায় রাখেন যে কারনে এদের কিছু হয় না।
অভিযোগকারী ও নির্যাতিত চিকিৎসক ডা. তাবাসসুম ঘটনা প্রসঙ্গে বলেন,” ধানমন্ডির -৬ এ গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে ডিউটি শেষ করে নারী চিকিৎসকদের জন্য বরাদ্দকৃত ৩০২ নং কক্ষে গিয়ে বাসায় যাওয়াে প্রস্ততি নিচ্ছিলাম। এ সময় ডা. জাফরুল্লাহ্ চৌধুরী বিনা অনুমতিতে দরজায় নক না করেই কক্ষে প্রবেশ করেন যা ঠিক না।তিনি আমার গায়েও হাত দেওয়ার চেষ্টা করেছেন।”
ছবিঃ ডা. জাফরুল্লার বিরুদ্ধে ইর্ন্টার্নী চিকিৎসকদের প্রতিবাদলিপি
ডা. তাবাসসুম আরো বলেন, ” তিনি তুচ্ছ কারন দেখিয়ে আমাকে গালিগালাজ করেন এবং গায়ে হাত তোলেন। কিছু বুঝে উঠার আগে ই তিনি রুম থেকে বের হয়ে যান।”
এ বিষয়ে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের চিকিৎসক ও কর্মচারীরা ডা. জাফরুল্লাহ্ চৌধুরীর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ লিপি দিয়েছেন। বেশ কয়েকজন নারী চিকিৎসক, যারা ভুক্তভোগী হয়েছেন তারা অভিযোগ করেন যে, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রে চাকরি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে তিনি অনেক মেয়ের সম্ভ্রমহানি করেছেন। কিন্তু মান-সম্মানের ভয়ে তারা কেউ কিছু বলতে পারেন নাই। তাদের মধ্যে অনেকে এখন তার বিরুদ্ধে মুখ খুলছেন।
তারা আরো বলেন যে,তারা এই ভন্ড,লম্পট, দুশ্চরিত্র চিকিৎসকের বিচার চান।
১৯ ফেব্রুয়ারির ঘটনার পর থেকে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের চিকিৎসকদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ বিরাজ করছে।
ভুক্তভোগী চিকিৎসক ডা. তাবাসসুমের সহকর্মীরা প্রতিবাদের সাথে বলেন,কোন ভাবে ই তিনি বিনা অনুমতিতে নারী কক্ষে প্রবেশ করতে পারেন না। তার চেয়েও বড় কথা তিনি একজন নারী চিকিৎসকের গায়ে হাত তুলেছেন, যেটা খুব বড় অন্যায়।
গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের চেয়ারম্যান ও বিএনপি ঘরানার বামপন্থি এই বুদ্ধিজীবি তার বিরুদ্ধে এসব অভিযোহ অস্বীকার করে বলেন,” এটি একটি অহেতুক ও বানোয়াট অভিযোগ। যখন তারা কিছু বলতে পারে না তখন এসব অভিযোগ তোলেন।”
তিনি আরও বলেন, ” পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে কেউ বকা দিতে পারে তার মানে তো এই না যে গায়ে হাত দিয়েছে। ঐ মেয়ে প্রসাধনী (লিপস্টিক) ব্যবহার করায় বকা দেওয়া হয়েছে।”
এ সকল অভিযোগ অস্বীকার করার পর তিনি উল্টো প্রশ্ন করেন,” বিনা কারনে একজন মানুষ অপরের গায়ে কেন হাত তুলবে?”
অনলাইন বাংলা নিউজ বিডি :/ এস এস
Leave a Reply