
সারা দেশে মাদকবিরোধী অভিযান এবং অভিযানের সময় তথাকথিত বন্দুকযুদ্ধের ‘মাদক ব্যবসায়ীদের’ নিহতের ঘটনা নিয়ে আলোচনা-সমালোচনার মধ্যে আজ শুক্রবার নারায়ণগঞ্জে ওবায়দুল কাদের এ সম্পর্কে কথা বলেন।
তিনি অভিযোগ করেন, প্রতিবেশী দেশ মিয়ানমার শুধু তাদের দেশ থেকে লাখ লাখ রোহিঙ্গা মুসলিমদেরই বিতাড়িত করে এদেশে পাঠায়নি পাশাপাশি সুনামির মতো মাদকদ্রব্য ইয়াবাও পাঠিয়েছে।
সরকারের ঘোষণা মোতাবেক, সারা দেশে মাদকবিরোধী অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ। আজসহ গত ছয়দিনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীরর সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে অর্ধশতাধিক সন্দেহভাজন মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন।
এর মধ্যে গত রোববার চারজন, সোমবার নয়জন, মঙ্গলবার ১১ জন, বুধবার নয়জন, গতকাল বৃহস্পতিবার নয়জন এবং আজ আরও নয়জন নিহতের খবর এসেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছ থেকে।
এক প্রশ্নের জবাবে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী মাদকের ভয়াবহতার কথা উল্লেখ করে বলেন, ‘মিয়ানমার একদিকে এখানে স্রোতের মতো রোহিঙ্গা পাঠিয়েছে, অন্যদিকে এর সঙ্গে মাদকের স্রোত সুনামির মতো বাংলাদেশে এসেছে। মিয়ানমার শুধু রোহিঙ্গা পাঠায়নি, ইয়াবাও পাঠিয়েছে।
মাদকের বিরুদ্ধে দলমত নির্বিশেষে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধের পাশাপাশি সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলার ডাক দেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।
দুপুরে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে ভুলতা ফ্লাইওভার সাইড অফিসে আসন্ন ঈদ উপলক্ষে যানজট নিরসন বিষয়ে করণীয় নিয়ে মতবিনিময় করেন মন্ত্রী। এ সময় তিনি বিভিন্ন ইস্যুতে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দেন।
মাদকের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কাউকে বর্তমান সরকার ছাড় দিচ্ছে না উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, ‘অভিযোগ যদি প্রাথমিক তদন্তে প্রমাণ আসে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি যেই হোন, যে জায়গায় থাকেন। জনপ্রতিনিধি হোন, নেতা হোন, বড় রাজনীতিবিদ হোন- কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। রাঘববোয়াল, চুনুপুটি কেউ ছাড়া পাবে না। কেউ ছাড়া পাবে না। নেটে সবাইকে আনা হবে। শুরু হয়েছে, দেখতে পাবেন।’
‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে অপরাধীর ছাড় নেই’ উল্লেখ করে মন্ত্রী জানান, আওয়ামী লীগের এক সংসদ সদস্য খুনের মামলায় কারাগারে আছেন, সরকারের তিন মন্ত্রী দুর্নীতির অভিযোগে প্রতিনিয়ত হাজিরা দিচ্ছেন, এক মন্ত্রীপুত্র কারাগারে আছেন।
সকাল সাড়ে ১০টা থেকে দুপুর সোয়া ১২টা পর্যন্ত পৌনে দুই ঘণ্টার মতবিনিময় সভায় নারায়ণগঞ্জ, নরসিংদী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও হবিগঞ্জ জেলার জেলা প্রশাসক (ডিসি), পুলিশ সুপার (এসপি) ও সড়ক যোগাযোগবিষয়ক বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তাদের কাছ থেকে সড়ক ও মহাসড়কের সমস্যাগুলো শোনেন। মন্ত্রী সবাইকে নিজ নিজ দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দেন। মহাসড়কগুলোকে আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত সচল রাখার নির্দেশ দেন তিনি। ঈদে গাড়ি থামিয়ে অর্থ আদায় না করার জন্যও ট্রাফিকদের প্রতি কঠোর হুঁশিয়ারি দেন তিনি।
রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী জনবহুল বাংলাদেশের জন্য বিশাল এক সমস্যা। অশিক্ষা-কুশিক্ষা, কুসংস্কার এদের আচ্ছন্ন করে রাখায় সহজেই জড়িয়ে পড়ছে নানা রকম অনৈতিক কর্মকাণ্ডে। এর মধ্যে প্রধান হল মাদক ব্যবসা। এদের নির্মূল করতে প্রথমে মাদকের চোরাচালান রোধ করতে হবে।
অনলাইন বাংলা নিউজ বিডি :/ এস এস
Leave a Reply