
ইফতারের আগ মুহূর্তে মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলায় বিশাকা প্রকাশনীর স্বত্বাধিকারী, ব্লগার ও মুক্তমনা লেখক শাহজাহান বাচ্চুকে গুলি করে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। কাকালদী গ্রামে এই ঘটনা ঘটে। শাহজাহান বাচ্চুর বাড়ি ওই গ্রামে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, পূর্ব কাকালদী মুন্সীগঞ্জ-শ্রীনগর সড়কের তিন রাস্তার মোড়ে আনোয়ার হোসেনের ফার্মেসির সামনে বসে কথা বলছিলেন শাজাহান বাচ্চু। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে দুটি মোটরসাইকেলে চারজন লোক এসে তাঁকে ধরে রাস্তায় নিয়ে যায়। তারা লোকজনকে সরে যেতে বলে এবং একটি ককটেল ফাটিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করে। শাজাহান বাচ্চুকে রাস্তায় এনে তাঁর বুকের ডান পাশে একটি গুলি করে। এ সময় সিরাজদিখান থানার সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) মাসুম ওই রাস্তা দিয়ে মুন্সীগঞ্জ থেকে থানার দিকে যাচ্ছিলেন।
এলাকার কমল কৃষ্ণ পাল জানান, মোটরসাইকেলে করে এসে দুষ্কৃতকারীরা চায়ের দোকানে সামনে এসে শাহজাহান বাচ্চুকে গুলি করে পালিয়ে যায়। বাচ্চু মুক্তমনা লেখক ও ফেসবুকে লেখালেখি করতেন। বিশাকা নামের তাঁর একটি প্রকাশনা রয়েছে।
এএসআই মাসুম জানান, ঘটনাস্থলে পৌঁছানোর আগে একটি বিকট আওয়াজ পান। সামনে গিয়ে দেখেন, একটি লোক পড়ে আছে। প্রথমে ভেবেছিলেন বিদ্যুতের তারে সমস্যা হয়েছে কিনা। পাশের রাস্তা থেকে তাঁকে উদ্দেশ করে কেউ বলে, সালাকে গুলি কর। এমন সময় একজন ব্যাগ থেকে একটি ককটেল ছুড়ে মারে তাঁর দিকে। তিনি দৌড়ে পিছিয়ে যান। তিনি পিস্তল বের করতেই আরেকজন তাঁর দিকে গুলি ছোড়ে। তিনি বসে গুলি করার চেষ্টা করলে বিপরীত রাস্তায় সন্ত্রাসীরা দৌড়ে দুই মোটরসাইকেলে চারজন কেটে পড়ে।
মুন্সীগঞ্জ জেলা কমিউনিস্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদক হামিদা খানম জানান, শাহজাহান বাচ্চু জেলা কমিউনিস্ট পার্টির আগের কমিটির সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। তিনি একজন মুক্তমনা মানুষ ছিলেন।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সিরাজদিখান সার্কেল) আসাদুজ্জামান হত্যাকাণ্ডের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, দুইটি মোটরসাইকেলে করে চারজন দুর্বৃত্ত ব্লগার ও মুক্তমনা লেখক শাহজাহান বাচ্চুকে গুলি করে পালিয়ে যায়।
এতে ঘটনাস্থলেই তাঁর মৃত্যু হয়। পরে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে তাঁর লাশ উদ্ধার করে। ময়নাতদন্তের জন্য লাশ মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হচ্ছে।
ব্লগার হত্যার বিষয়টি আবারও যেন সামনে নিয়ে এলো এই ঘটনা। এটি আবারও চোখে আঙুল দিয়ে বুঝিয়ে দিলো, এখনও বাংলাদেশ সকলের জন্য নিরাপদ নয়।
ধর্মীয় উগ্রবাদ-অন্ধতা এখনো গ্রাস করে রেখেছে সমাজটাকে। যার ফলশ্রুতিতে হচ্ছে এইসব হত্যাকান্ড।
এর সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের কঠোর শাস্তির আওতায় নিয়ে আসতে হবে। তবে হয়তো কিছুটা হলেও এ অবস্থা থেকে পরিত্রান মিলতে পারে।
অনলাইন বাংলা নিউজ বিডি :/ ও এস
Leave a Reply