গত সপ্তাহে তীব্র সমালোচনার মুখে অভিবাসী শিশুদের তাদের পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন করার আইনি সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
এর কিছু দিন পরেই গতকাল রোববার অভিবাসীদের নিয়ে আবারও আক্রমণাত্মক বক্তব্য দিলেন তিনি। বলেছেন, যারা যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধভাবে ঢুকেছে, তাদের বিচারকের কাছে হাজির করার আগে বা আইনি প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যাওয়ার আগে তাৎক্ষণিক ফেরত পাঠাতে হবে।
ভার্জিনিয়ায় গলফ কোর্সে যাওয়ার পথে তিনি টুইট করেন, ‘আমরা এদের সবাইকে আমাদের দেশে ভিড় করতে দিতে পারি না। যখন কেউ আসবে, তখন কোনো বিচারক বা আদালত নয়, তারা যেখান থেকে এসেছে, তাৎক্ষণিক তাদের সেখানে ফেরত পাঠাতে হবে।
গত মে মাসে যুক্তরাষ্ট্রের অ্যাটর্নি জেনারেল জেফ সেশন্স শরণার্থী হিসেবে আশ্রয়প্রার্থীসহ যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধভাবে প্রবেশকারী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ‘শূন্য সহিষ্ণুতা’ নীতি গ্রহণের ঘোষণা দেন। ওই সব অভিবাসনপ্রত্যাশীর বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা করার কথাও জানান তিনি।
ট্রাম্পের এই নীতির কারণে মা-বাবার সঙ্গে আসা অভিবাসী প্রায় ২ হাজার ৩০০ শিশু তাদের পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। এ খবর গণমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে বিশ্বজুড়ে ব্যাপক সমালোচনার তৈরি হয়। এই নীতির বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করেন ডেমোক্র্যাটরা, এমনকি রিপাবলিকান অনেকেও। ট্রাম্পের এই নীতিকে অগ্রহণযোগ্য ও হৃদয়বিদারক হিসেবে উল্লেখ করেন মার্কিন ফার্স্ট লেডি মেলানিয়া ট্রাম্প ও সাবেক ফার্স্ট লেডি লরা বুশ।
পরে ব্যাপক চাপের মুখে নতুন সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয় ট্রাম্প প্রশাসন। অবৈধ অভিবাসনের অভিযোগে আটক পরিবারের সদস্যদের একসঙ্গে রাখার প্রতিশ্রুতি দিয়ে গত সপ্তাহে একটি নির্বাহী আদেশে সই করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
ট্রাম্প গতকাল আরেক টুইটে বলেন, ‘ভালো অভিবাসন নীতি এবং আইন ও বিচারের প্রতি আমাদের প্রণীত নীতি এক উপহাস। আমাদের অভিবাসন নীতি বিশ্বের হাসির পাত্রে পরিণত হয়েছে। একই সঙ্গে যারা বৈধভাবে এ দেশে এসেছে বা আসার জন্য দীর্ঘ অপেক্ষায় আছে, তাদের সঙ্গে এটি একধরনের উপহাস। অভিবাসনের অবশ্যই ভিত্তি থাকতে হবে।
তবে আইনি প্রক্রিয়া এড়িয়ে যেতে ট্রাম্পের আহ্বানের বিষয়টি সাংবিধানিক প্রশ্নের মুখে পড়বে। একই সঙ্গে এ নিয়ে কংগ্রেসে রিপাবলিকানদের মধ্যে মতবিরোধ তৈরি হতে পারে। কারণ, রিপাবলিকানদের অনেকে অভিবাসী পরিবারগুলোর শুনানির জন্য বিচারকের সংখ্যা বাড়ানোর তাগিদ দিচ্ছেন। ফেডারেল অভিবাসন আদালতে গত মে মাসে সাত লাখের বেশি মামলা জমা পড়েছে। আর এগুলোর শুনানি হতে মাস থেকে বছর লেগে যেতে পারে।
একটি দেশের জন্যে বিশাল অভিবাসন জনগোষ্ঠী একটি বোঝা স্বরূপ। তবে এদেরকে আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমেই নিজ নিজ দেশে ফেরত পাঠাবার ব্যবস্থা করা উচিৎ। অন্যথায় আবার বিতর্কের মুখে পড়তে পারেন মার্কিন এই প্রেসিডেন্ট।
অনলাইন বাংলা নিউজ বিডি :/ এস এস
Leave a Reply