
এবার ঢাবির এক মূকাভিনেতাকে মারধরের অভিযোগ পাওয়া গেছে। ফেইসবুকে কোটা সংস্কারের আন্দোলনকারীদের ওপর হামলার ছবি ও স্ট্যাটাস দেওয়ায় ছাত্রলীগ এই হামলা চালিয়েছে বলে এই মূকাঅভিনেতার অভিযোগ।
মূকাভিনেতা মীর লোকমান জানান, রোববার বেলা পৌনে ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে জগন্নাথ হল ছাত্রলীগের সভাপতি সঞ্জিত চন্দ্র দাস তাকে মারধর করেন।
এর বিচার চেয়ে প্রক্টরের কাছে আবেদনও করেছেন বলে জানান তিনি।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে ছাত্রলীগ নেতা সঞ্জিত চন্দ্র দাস বলেছেন, মারধর করেননি তিনি, ছাত্রলীগ নিয়ে ফেইসবুকে ‘ট্রল’ করার বিষয়ে ওই মূকাভিনেতার কাছে শুধু জানতে চেয়েছেন তিনি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশ্বধর্ম ও সংস্কৃতি বিভাগ থেকে পাস করা মীর লোকমান ঢাকা ইউনিভার্সিটি মাইম অ্যাকশনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি। বর্তমানে তিনি সংগঠনটির পরিচালক।
দেশ-বিদেশে প্রায় চার শতাধিক মূকাভিনয় প্রদর্শনী করেছেন এই শিল্পী।
শনিবার দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করতে গিয়ে পিটুনির শিকার হন কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারীরা। ক্যাম্পাসের গ্রন্থাগারের সামনে এই হামলার জন্য ছাত্রলীগকে দায়ী করেছেন তারা; হামলার সময় সংগঠনটির কয়েকজন নেতাকে ঘটনাস্থলে দেখা গেছে।
তবে হামলায় জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করে সরকার সমর্থক সংগঠনটির নেতারা বলেছেন, আন্দোলনকারীদের ‘অভ্যন্তরীণ কোন্দলে’ হামলার ঘটনা ঘটেছে।
পরদিন আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা ও আহতদের ১০টি ছবির সঙ্গে নিজের ফেইসবুকে পাতায় পোস্ট দেন মীর লোকমান। সেখানে ক্যাপশনে তিনি লিখেন, ‘সাবাস সোনার ছেলেরা! আজ ব্যাপক খেলে দিয়েছো!!’
প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজন জানান, মীর লোকমান রোববার পৌনে ১২টার দিকে ছাত্রলীগের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার এক নেতার সঙ্গে কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে দাঁড়িয়েছিলেন। এসময় ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় দুই উপ-সম্পাদক সাদ বিন চৌধুরী ও মো. নাজিম, ছাত্রলীগ নেতা বকুল তাকে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেওয়ার বিষয়ে জিজ্ঞেস করেন। এসময় হঠাৎ করেই মীর লোকমানকে চড়-থাপ্পড় দিতে শুরু করেন জগন্নাথ হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি সঞ্জিত চন্দ্র দাস। পরে ছাত্রলীগের কয়েকজন কেন্দ্রীয় নেতা তাকে থামান।
মীর লোকমান বলেন, “অন্যায় দেখে বুকের মধ্যে ব্যথা পাই। তাই প্রতিবাদ জানিয়েছি। লাইব্রেরির সামনে কথা বলার সময় হঠাৎ করেই ও (সঞ্জিত) এসে আমাকে থাপ্পড় দেওয়া শুরু করে।”
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ছাত্রলীগ নেতা সঞ্জিত বলেন, “মারধর করিনি। আমি কেবল ছাত্রলীগকে নিয়ে কেন ট্রল করেছে তা জিজ্ঞেস করেছি। তবে দুই ছোটভাই তখন পাশ থেকে তার গায়ে হাত দেয়। আমি তাদের নিবৃত্ত করি। আর উনি ছড়িয়ে বেড়াচ্ছেন আমি নাকি উনাকে মেরেছি। আমি গায়ে হাত দেইনি, তবে ছাত্রলীগ নিয়ে ট্রল করলে কাউকে ছাড় দেব না নিশ্চিত।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর এ কে এম গোলাম রাব্বানী বিষয়টি সুরাহা করার আশ্বাস দিয়েছেন।
উল্লেখ্য, কোটা সংস্কারের দাবীতে গত কয়েকমাস ধরে উত্তপ্ত বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা। এর মাঝে শেখ হাসিনা একবার সংসদে কোটা উঠিয়ে নেয়ার ঘোষনা দিলেও এ বিষয়ে আইনত কিছু না হওয়ায় আবার আন্দোলনে নামে শিক্ষার্থীরা।
অনলাইন বাংলা নিউজ বিডি :/ এম ইউ
Leave a Reply