
বৃহস্পতিবার সংসদের বাজেট অধিবেশনের সমাপনী বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রীকে কোটা আন্দোলনকারীদের প্রতি সহানুভূতি দেখাবার আহ্বান জানালেন বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদ।
রওশন বলেন, “কোটা নিয়ে ছেলে-মেয়েদের মধ্যে অনেক বিভ্রাট দেখা যাচ্ছে। কোটা নিয়ে আন্দোলন করছে। তারা তো আমাদের সন্তান। তারা তো আব্দার করবেই। তারা তো চাকরি চাইবে। তাদের চাকরিতে যেমন করে হোক প্রোভাইড করতে হবে। চাকরি দিতে হবে।
“প্রধানমন্ত্রী এ ব্যাপারে সচেতন আছেন চেষ্টা করছেন। মাননীয় স্পিকারের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ করবো তিনি যেন সহানুভুতির দৃষ্টি নিয়ে এই বিষয়টি বিবেচনা করেন।”
চলতি অধিবেশনের বাজেট বক্তৃতাতেও প্রধামন্ত্রীর প্রতি একই আহ্বান জানিয়েছিলেন জাতীয় পার্টির জ্যেষ্ঠ কো-চেয়ারম্যান রওশন।
কোটার মোট পরিমাণ ৫৬ শতাংশ থেকে ১০ শতাংশে নামিয়ে আনার দাবিতে কয়েক মাস ধরে আন্দোলন চালিয়ে আসছে ‘বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ’। তাদের আন্দোলনের এক পর্যায়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ১১ এপ্রিল সংসদে বলেন, সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতিই আর রাখা হবে না।
এরপর প্রধানমন্ত্রীর ‘ঘোষণা’ অনুযায়ী কোটা বাতিলের প্রজ্ঞাপনের দাবিতে শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে নামার পর তাদের উপর হামলায় হয়, কয়েকজন নেতাকে গ্রেপ্তারও করে পুলিশ।
এদিকে গত ২ জুলাই সরকার একটি উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠন করে কোটা ব্যবস্থা পর্যালোচনা করে প্রতিবেদন দিতে বলে। ওই কমিটি গত ৮ মে তাদের প্রথম বৈঠকে কর্মপন্থা নির্ধারণের পাশাপাশি কোটার বিষয়ে দেশি-বিদেশি তথ্য সংগ্রহের সিদ্ধান্ত নেয়।
সংসদে পাস হওয়া বাজেট প্রসঙ্গে রওশন বলেন, “বাজেটে প্রণোদনা নেই। ব্যাংক লুটপাটকারীদের কর কমানো হয়েছে। ব্যাংক খাতে লুটপাট চলছে। মানুষের করের টাকায় দিতে হচ্ছে। সুশাসন প্রতিষ্ঠার কোনো বিকল্প নেই। ব্যাংক খাতের নৈরাজ্য বন্ধ করতে হলে সংস্কারের কোনো বিকল্প নেই। ১৬ লাখ মানুষ ব্যাংক হিসাব বন্ধ করে দিয়েছে।”
সংসদে বক্তব্য দিতে উঠলে রওশন সবসময় খাদ্যে ভেজালের প্রসঙ্গ তোলেন। সেই প্রসঙ্গ বৃহস্পতিবারও তোলেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রীর প্রতি অনুযোগ করে তিনি বলেন, “যতবারই বলি প্রধানমন্ত্রী হেসে উড়িয়ে দেন। হেসে উড়িয়ে দেওয়ার কথা না। ডিজিটাল বাংলাদেশ কীভাবে গড়বেন? আবহাওয়া পর্যন্ত দূষিত। নদী ভালো রাখেনি। আবহাওয়ায় সীসা। এগুলো দেখতে হবে।”
রাজধানীতে যানজট নিয়ে কথা বলেন তিনি। সরকারের মন্ত্রীরা এই বিষয়ে ‘সাহস’ করে কথা বলতে পারেন না বলেও মন্তব্য করেন বিরোধী নেতা।
“প্রধানমন্ত্রী এবং রাষ্ট্রপতি চলাচল করলে রাস্তা বন্ধ রাখা হয়। রাস্তায় যানজট ছাড়তে ছাড়তে রাত হয়ে যায়। অন্য রাস্তায় যাওয়ই যায় না। বৃষ্টিতে সব রাস্তা ভাঙা। কেউ বলে না সাহস করে। এখানে যারা আছেন সবাই জানেন। রোডস হাইওয়ে মন্ত্রী আছেন। কিন্তু কারও সাহস নেই বলার। সবাই যানজটে নাকাল থাকে।”
প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে তিনি বলেন, “নদী থেকে বালু তুলছে। আপনি জনগণের নেতা আপনি বের হয়ে দেখতে না পারলে কিভাবে হবে। বের হয়ে দেখেন। আপনাকে রোধ করতে হবে এগুলো। আপনাকে দায়িত্ব দিয়েছি আমরা। কত ঝুঁকি নিয়ে নির্বাচন করেছি। আপনি জাতির পিতার কন্যা। আমার কাছে ক্ষমতা থাকলে আমি দেখতাম।”
আমাদের দেশটাতে এখনও প্রচুর সমস্যা রয়েছে। যানজট, খাদ্যে ভেজাল, কোটা নিয়ে মানুষের মনে অসন্তোষ। এইসকল সমস্যা রোধে সরকারকে পারদর্শিতার পরিচয় দিতে হবে। তবেই কেবল জনগন সরকারের প্রতি তাদের আস্থার জায়গাটা ফিরে পাবে।
অনলাইন বাংলা নিউজ বিডি :/ এম ইউ
Leave a Reply