
গতকাল প্রকাশ্যে ঢাবির দুই শিক্ষার্থীকে পিটিয়ে আহত করার অভিযোগে বহিষ্কৃত হয়েছেন ছাত্রলীগের তিন সদস্য। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক এ কে এম গোলাম রাব্বানী রোববার সন্ধ্যায় তিন শিক্ষার্থীকে বহিষ্কারের কথা জানান।
বহিষ্কৃতরা হলেন- সূর্যসেন হল শাখা ছাত্রলীগের সদস্য এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র মোল্লা মোহাম্ম আল ইমরান পলাশ, ইংলিশ ফর স্পিকারস অব আদার ল্যাঙ্গুয়েজেস (ইসোল) বিভাগের মাহমুদ অর্পন এবং উইমেন অ্যান্ড জেন্ডার স্টাডিজ বিভাগের সিফাত উল্লাহ।
শনিবার বিকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের (রেজিস্টার বিল্ডিং) সামনে মল চত্বরে বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী রোকেয়া গাজী লীনা ও আসাদুজ্জামান প্রান্তকে পিটিয়ে আহত করে সূর্যসেন হল ছাত্রলীগের একদল নেতাকর্মী।
এ ঘটনার বিচার চেয়ে দুপুরে প্রক্টর বরাবর আবেদন করেন অর্থনীতি বিভাগের ওই দুই শিক্ষার্থী। তাদের সাথে বিভাগের বেশ কিছু শিক্ষার্থীও ছিলেন।
প্রক্টর সাংবাদিকদের বলেন, “অর্থনীতি বিভাগের ওই শিক্ষার্থীদের লিখিত অভিযোগের পর সিসিটিভি ফুটেজে অভিযুক্তদের শনাক্তকরণের প্রেক্ষিতে এবং দৈনিক পত্রিকার রিপোর্ট বিবেচনা করে সংঘটিত অপ্রীতিকর ঘটনায় প্রাথমিক তদন্তের ভিত্তিতে তিনজনকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন জমার পর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”
এ ঘটনায় শাস্তি না হওয়া পর্যন্ত ক্লাস বর্জনের ঘোষণা দিয়েছিলেন ওই শিক্ষার্থীরা।
প্রক্টর গোলাম রব্বানী তাদের বলেন, “হামলায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনা হবে। ইতোমধ্যে কাজ শুরু হয়ে গেছে। জড়িত কেউ ছাড় পাবে না। আমরা সিসিটিভি ফুটেজ ধরে জড়িতদের বিচার করব। হলের তিন সদস্যের তদন্ত কমিটিকেও দ্রুততম সময়ের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।”
তার কয়েক ঘন্টা পরই প্রক্টর সাংবাদিকদের তিন শিক্ষার্থীকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত জানান।
গতকাল রাত পৌনে ১০টার দিকে সূর্যসেন হলের প্রাধ্যক্ষ দুর্যোগ বিজ্ঞান ও ব্যবস্থাপনা বিভাগের অধ্যাপক এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি এ এস এম মাকসুদ কামাল তাদের বক্তব্য শুনে ঘটনার বিবরণ দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর বরাবর একটি দরখাস্ত লিখতে বলেন। আহত ওই দুই শিক্ষার্থীকে তিনি হলে পৌঁছানোর ব্যবস্থা করেন এবং তাদের চিকিৎসারও বন্দোবস্ত করেন।
মাকসুদ কামাল সাংবাদিকদের বলেছিলেন, “এই ঘটনায় তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। হলের সিসি টিভির ফুটেজ দেখে দোষীদের শনাক্ত করা হবে। কমিটি সাত দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দেবে। প্রতিবেদন অনুসারে আমরা ন্যায্য বিচার করব।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মেধাবী ছাত্র গড়ার জায়গা। সেখানে এমন ঘটনা মোটেও কাঙ্ক্ষিত নয়। এমন অরাজকতা সৃষ্টির জন্যে দায়ীদেরকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় নিয়ে আসা উচিৎ। যেন এমন ঘটনা আর কখনো কেউ ঘটাবার সাহস না পায়।
অনলাইন বাংলা নিউজ বিডি :/ এম ইউ
Leave a Reply