
গত ২১ জুলাই রাতের ঘটনা। হানিফ এন্টারপ্রাইজের শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত বাসে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় যাচ্ছিলেন তিনি। পথেই নিখোঁজ হয়েছিলেন সাইদুর। ২৩ জুলাই মুন্সিগঞ্জের গজারিয়ার ভবের চর এলাকায় নদীতে তাঁর লাশ পাওয়া যায়। মুখ থেঁতলানো অবস্থায় ছিল লাশটা।
পরে পুলিশ বাসচালক জালাল, সুপারভাইজার জনি ও চালকের সহকারী ফয়সালকে আটক করে। তাদের জবান বন্দিতে জানা যায়, চট্টগ্রামের বাসা থেকে ঢাকায় যাওয়ার পথে নারায়ণগঞ্জের মদনপুর এলাকায় ‘বাথরুম’ পেয়েছে বলে যানজটে থেমে থাকা বাস থেকে নেমেছিলেন নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সাইদুর রহমান।
এর মধ্যেই যানজট কিছুটা ছাড়লে বাস এগোতে থাকে। সাইদুর দৌড়ে বাসে উঠতে গিয়ে নাকে-মুখে আঘাত পান। রক্ত বের হতে থাকে। আদালতে স্বীকারোক্তিতে সুপারভাইজার জনি বলেন, আহত যাত্রীকে চিকিৎসা দেওয়ার বদলে বাসটির চালক, সুপারভাইজার ও চালকের সহকারী মিলে একটি সেতু থেকে নদীতে ফেলে দেন।
কোনো অভিযোগ কিংবা শাস্তির ভয়ে তারা এমন এক বীভৎস ঘটনা ঘটান।
আজ শুক্রবার বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত চট্টগ্রামের সিটিগেট এলাকায় নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সাইদুর রহমান পায়েল হত্যার বিচারের দাবিতে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করে সন্দ্বীপ অ্যাসোসিয়েশন চট্টগ্রাম।
এর আগে সকাল সাড়ে ১০টা থেকে সিটিগেট এলাকায় মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে সংগঠনটি। মানববন্ধনে সংগঠনের সদস্য, পায়েলের সহপাঠী, বন্ধুসহ প্রায় সাড়ে ৩০০ মানুষ অংশ নেন। মানববন্ধন শেষে এই অবরোধ কর্মসূচি শুরু হয়। ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন ছিল।
সংগঠনটির সংগঠক সারোয়ার সুমন বলেন, ‘ঘটনার পর থেকে শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন করে আসছি। কিন্তু প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো আশ্বাস পায়নি পায়েলের পরিবার। এ জন্য বাধ্য হয়ে এই অবরোধ কর্মসূচি শুরু করেছি।’
মহাসড়ক অবরোধ করায় দু পাশের যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পণ্যবাহী কাভার্ড ভ্যান, ট্রাক, যাত্রীবাহী বাস সব রাস্তার দুপাশে আটকা পড়ে।
নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিবিএ পঞ্চম সেমিস্টারের ছাত্র ছিলেন সাইদুর রহমান পায়েল।
সড়ক দুর্ঘটনা নয়, হত্যার মাধ্যমে শেষ করে ফেলা হলো একটি পরিবারের সকল আশা আকাঙ্ক্ষাকে। ফুটে উঠবার আগেই অঙ্কুরেই বিনষ্ট করে ফেলা হলো একটি বীজ।
জনসাধারনের মনে একটাই প্রশ্ন, এর শেষ কোথায়?
অনলাইন বাংলা নিউজ বিডি :/ এম ইউ
Leave a Reply